আইন ও বিচার বিভাগে অন্তর্বর্তী সরকারের ১৩ অর্জন
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দেশের দায়িত্ব নেয়। গত ৮ নভেম্বর এ সরকারের তিন মাস পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো কী কী কাজ করেছে, তার তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে আইন ও বিচার বিভাগের উল্লেখযোগ্য অর্জনের কথাও।
সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। সেখানে আইন ও বিচার বিভাগের ১৩টি উল্লেখযোগ্য অর্জনের কথা বলা হয়েছে।
অর্জনগুলো হলো-
১. বিচার বিভাগ সংস্কারের জন্য বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন গঠনে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হয়েছে এবং গঠিত সংস্কার কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
২. আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ সংশোধন বা প্রযোজ্যে ক্ষেত্রে বাতিলের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং এতদসংক্রান্তে অংশীজনের অংশগ্রহণে পৃথক দুইটি মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অংশীজনের মতামতের আলোকে খসড়া প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
৩. বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে ৫ জন বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগে ২৩ জন বিচারপতি এবং অধস্তন আদালতে ১০৯ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
৪. চেয়ারম্যানসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তিনজন বিচারক নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটরসহ ১১ জন প্রসিকিউটরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
৫. আইন ও বিচার বিভাগের বিভিন্ন অনুবিভাগ, অধিশাখা ও শাখার কার্যক্রমের পুনবিন্যাসের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
৬. অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে ২৩৯ জন আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল) নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
৭. বিজিবির বিস্ফোরক মামলার জন্য ২০ জন ও ৩১ জেলার অধস্তন আদালতসমূহে ২৬৮৫ জন আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং অবশিষ্ট জেলাসমূহে আইন কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
৮. গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমনে দায়েরকৃত প্রায় সব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
৯. সন্ত্রাস দমন আইন ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলো চিহ্নিত করে প্রত্যাহারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
১০. বিচারকগণ ও তাদের পরিবারের সদস্যগণের এবং রেজিস্ট্রেশন বিভাগের কর্মকর্তাগণ তথা সাব-রেজিস্ট্রার, জেলা রেজিস্ট্রার ও নিবন্ধন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ ও তাদের পরিবারের সদস্যগণের সম্পদের হিসাব বিবরণী ইতোমধ্যে দাখিল করা হয়েছে। আইন ও বিচার বিভাগ ও এর অধীন দপ্তর ও সংস্থার কর্মচারীদের অর্জিত সম্পদের বিবরণী দাখিল করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
১১. গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদ (International Convention for the Protection of All Persons from Enforced Disappearance) অনুসমর্থনে আইন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেছে।
১২. বিগত সময়ে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান ও গুমে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের নিমিত্ত তদন্ত কমিশন গঠনে আইন ও বিচার বিভাগ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেছে। গঠিত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। কমিশন পুলিশের মাধ্যমে তদন্ত করতে পারবে মর্মে প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগ মতামত প্রদান করেছে।
১৩. আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক সময়াবদ্ধ সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
আরটিভি/আইএম
মন্তব্য করুন