পুলিশের ৬৪ কর্মকর্তাকে বদলি-প্রত্যাহার
বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি ও পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৬৪ কর্মকর্তাকে বদলি ও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ বদলি ও প্রত্যাহার করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন উপসচিব আবু সাঈদ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, একজন ডিআইজি, ৮ জন অতিরিক্ত ডিআইজি এবং ৩৯ জন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে বিভিন্ন ইউনিটে বদলি করা হয়।
অপর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, একজন ডিআইজি, পাঁচজন অতিরিক্ত ডিআইজি ও ১০ জন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে চলতি পদ থেকে প্রত্যাহার করে বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করা হয়।
তালিকা দেখতে ক্লিক করুন। প্রথম তালিকা, দ্বিতীয় তালিকা
আরটিভি/এফএ-টি
মন্তব্য করুন
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা ৪৩ মিনিটে এ কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৪.১।
ভলকানো ডিসকভারি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৪১ কিলোমিটার দক্ষিণে। এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে এ কম্পন অনুভূত হয়েছে। এ অঞ্চলগুলোতেও ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪.১।
সবশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর রংপুর ও আশপাশের এলাকায় মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হয়। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা ২৮ মিনিটে এ ভূকম্পন অনুভূত হয়েছিল। কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল এ ভূমিকম্প।
গত ২৮ এপ্রিল (রোববার) বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চল এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। রাত ৮টা ৫ মিনিটে এ ভূমিকম্প হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তমপুরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪। হালকা ভূমিকম্প হওয়ায় সেসময় কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে ২ জুন মিয়ানমারে ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত করে, যা অনুভূত হয়েছে বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলাতেও। ঢাকা থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ৪৪২ কিলোমিটার দূরে। ৫৯ সেকেন্ড এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
তার আগে ২০ এপ্রিল চট্টগ্রামে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ৩.৭ মাত্রার একটি মাঝারি ভূমিকম্প বন্দরনগরী থেকে ৪৩ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানে। মৃদু ভূমিকম্পটির অবস্থান ছিল ভারত সীমান্ত থেকে ৩৪ কিলোমিটার ও মিয়ানমার থেকে ৬৬ কিলোমিটার দূরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রে এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
এছাড়া গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা ৭ মিনিটে আরেকটি মৃদু ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে চুয়াডাঙ্গা। চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান ওই সময় জানান, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩.৬। এর উৎপত্তিস্থল পাবনা জেলার আটঘরিয়া। ওই ভূমিকম্পে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি।
আরটিভি/এসএইচএম
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রিমান্ডে পল্লী বিদ্যুতের ৬ কর্মকর্তা
বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় হওয়া পৃথক দুই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) ছয়জন কর্মকর্তাকে তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন মুন্সিগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার রাজন কুমার দাস, ব্রাক্ষণবাড়িয়া নবীনগরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, কুমিল্লার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শ্রী দীপক কুমার সিংহ, মাগুরার শ্রীপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রাহাত, নেত্রকোনার সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মনির হোসেন ও সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বেলাল হোসেন।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এ ছয় কর্মকর্তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক আশিকুর রহমান দেওয়ান তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে ১৭ অক্টোবর খিলক্ষেত থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড খিলক্ষেত থানার পরিচালক প্রশাসন (আইন শাখার) আরশাদ হোসেন। মামলায় ওই ছয়জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কয়েকজন বিপথগামী কর্মকর্তা ও কর্মচারী একত্রিত হয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি পরিচয়ে পরস্পর যোগসাজশে জরুরিসেবা বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে জড়িত হয়ে এবং বিগত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালীদের মদদে নানান অযৌক্তিক দাবি দাওয়ায় ষড়যন্ত্র করে পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছেন। বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম কাজে তারা লিপ্ত আছেন। তাদের এ ধরনের কার্যকলাপ ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চরমভাবে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টার শামিল। তাদের এ সকল কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা, বোর্ডের কর্মকর্তাদদের সম্মানহানি এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অচল করে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতা তথা জনমনে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করার মাধ্যমে সরকারকে চরমভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা, যা দেশদ্রোহীতার শামিল।
আরটিভি/এসএইচএম
পলাতক পুলিশ সদস্যরা এখন থেকে ‘সন্ত্রাসী’ বিবেচিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যে পুলিশ সদস্যরা কাজে যোগ দেননি, তাদের কর্মক্ষেত্রে যোগদানের জন্য বেশ কয়েকবার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরপরও এখন পর্যন্ত ১৮৭ জন সদস্য কাজে যোগ না দিয়ে পলাতক অবস্থায় রয়েছেন।
গা-ঢাকা দেওয়া এই পুলিশ সদস্যদের এখন থেকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুইদিনের সফরে রাজশাহীতে গিয়ে এ ঘোষণা দেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, পুলিশ বাহিনীর ১৮৭ জন সদস্য কাজে যোগ না দিয়ে পলাতক রয়েছে। তারা এখন সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচিত হবে এবং দেখামাত্রই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ পুরোদমে কাজে যোগদান করতে পারছে না, এ কথা সত্যি। জনগণের যে গুঞ্জন এটা মিথ্যা না। ৫ আগস্ট এরপর যে অবস্থা ছিল সে অবস্থা থেকে এখন অনেকটা উত্তরণ হয়েছে। ইম্প্রুভ তো করেছে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে মেধার বাইরে দলীয় বিবেচনায় বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
কৃষিখাতে যান্ত্রিকীকরণ ও সারের দুর্নীতির বিষয়ে তিনি বলেন, কৃষিক্ষেত্রে শুধু যান্ত্রিকীকরণই নয়, সারের ক্ষেত্রে একটা বড় দুর্নীতি হয়েছে। এটার ক্ষেত্রে আমরা একটা ইনকয়ারি করছি। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হচ্ছে।
আরটিভি/এসএইচএম-টি
দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে ফের রেকর্ড
দেশের বাজারে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বাজুস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ভরিতে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬১৩ টাকা বাড়িয়ে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৪০ হাজার ৬১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭০৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণ ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৯৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি স্বর্ণের দাম ৯৪ হাজার ১১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বাড়াসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (২০ অক্টোবর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
এর আগে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ২৫৯ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৪৩ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ২৬ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ১৭ বার।
আরটিভি/আরএ/এসএ
গৃহকর্মীকে পাশবিক নির্যাতনকারী দিনাত জাহান রিমান্ডে
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসার কিশোরী গৃহকর্মীকে গা শিউরে ওঠা পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত দিনাত জাহান আদরকে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার (২০ অক্টোবর) গ্রেপ্তার জিনাত জাহান আদরের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ওবাদুর রহমান। শুনানি শেষে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, শনিবার দুপুরে ১৩ বছর বয়সী গৃহকর্মী কল্পনাকে উদ্ধার করে ভাটারা থানা পুলিশ। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় নৃশংস নির্যাতনকারী তরুণী জিনাত জাহান আদরকেও।
জানা গেছে, চার বছর ধরে কল্পনাকে অমানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। বিনা কারণে মারধরের পাশাপাশি তাকে খাবারও দেওয়া হতো না ঠিকমতো। গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে করতে হতো কাজ। কাঠ দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে সামনের চারটি দাঁত। চুল সোজা করার ইলেকট্রিক মেশিন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দুই হাত।
প্রতিবেশীরা জানান, নির্যাতনে অভিযুক্ত দিনাত জাহান আদর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন। বর্তমানে কিছুই করেন না। বাসায় এক ভাই ও বন্ধুরা আসে মাঝে মাঝে। নির্যাতনের বিষয়ে তারা কিছুই টের পাননি।
ভাটারা থানার অফিসার ইনচার্জ মাজাহারুল ইসলাম জানান, শিশুটির পরিবারের খোঁজ চলছে।
আজ দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে কল্পনাকে দেখতে গিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং এই নির্মম আচরণ মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আজকাল গৃহকর্মীদের ওপর প্রায়ই নির্যাতন ও অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের অপরাধকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া বা এ ব্যাপারে শিথিলতা দেখানোর সুযোগ নেই।
গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষা ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিশন এরই মধ্যে গৃহকর্মী নির্যাতনবিরোধী আইনের একটি খসড়া সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বলে জানান তিনি।
এ সময় তিনি আহত গৃহকর্মীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিতের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন।
আরটিভি/টিআই
রাষ্ট্রদূত হলেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার (২১ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এম মুশফিকুল ফজল আনসারীকে অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অথবা সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপূর্বক বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে রাষ্ট্রদূত পদে পদায়নের নিমিত্তে তার চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হলো।
এর আগে, গত ১২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনমত গঠনের অন্যতম কারিগর সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। প্রায় এক দশক সাহসিকতার সঙ্গে মার্কিন হোয়াইট হাউস, স্টেট ডিপার্টমেন্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভঙ্গুর মানবাধিকার পরিস্থিতি ও আওয়ামী দুঃশাসনের নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন পেশাদার এই সাংবাদিক।
সাহসী সাংবাদিকতার কারণে সরকারের রোষানলে পড়ে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
আরটিভি/এসএপি
আমার কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই: রাষ্ট্রপতি
ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন—এমন তথ্য সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন। তবে তার পদত্যাগের কোনো সরকারি বা দালিলিক প্রমাণ এখনো মেলেনি।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ‘শুনেছি তিনি (শেখ হাসিনা) পদত্যাগ করেছেন। তবে বহু চেষ্টা করেও পদত্যাগপত্র খুঁজে পাইনি । তিনি হয়তো জানানোর সময় পাননি।’
শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে অনুসন্ধান করেছেন দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী। পত্রিকাটির রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখে’ গত শনিবার (১৯ অক্টোবর) প্রকাশিত ‘উনি তো কিছুই বলে গেলেন না’ শীর্ষক প্রতিবেদনে তিনি তুলে ধরেছেন এর বিস্তারিত।
৫ আগস্ট ছাত্র-আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সংবিধানের ৫৭ (ক) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, তার কাছে শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র বা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রমাণ পৌঁছায়নি।
রাষ্ট্রপতির ভাষ্য, ‘আমি বহুবার পদত্যাগপত্র সংগ্রহের চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। হয়ত তার সময় হয়নি’।
মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে কথোপকথনে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বঙ্গভবনে ফোন আসে, যেখানে বলা হয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসবেন। এরপরই বঙ্গভবনে প্রস্তুতি শুরু হয়। কিন্তু এক ঘণ্টার মধ্যে আরেকটি ফোন আসে যে তিনি (শেখ হাসিনা) আসছেন না।’
তিনি বলেন, ‘চারদিকে অস্থিরতার খবর। কী হতে যাচ্ছে জানি না। আমি তো গুজবের ওপর নির্ভর করে বসে থাকতে পারি না। তাই সামরিক সচিব জেনারেল আদিলকে বললাম খোঁজ নিতে। তার কাছেও কোনো খবর নেই। আমরা অপেক্ষা করছি। টেলিভিশনের স্ক্রলও দেখছি। কোথাও কোনো খবর নেই। এক পর্যায়ে শুনলাম, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমাকে কিছুই বলে গেলেন না।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার যখন বঙ্গভবনে এলেন তখন জানার চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কি না? একই জবাব। শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। মনে হয় সে সময় পাননি জানানোর।’
তিনি বলেন, ‘সব কিছু যখন নিয়ন্ত্রণে এলো তখন একদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এলেন পদত্যাগপত্রের কপি সংগ্রহ করতে। তাকে বললাম, আমিও খুঁজছি’।
আলাপচারিতার এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, এ বিষয়ে আর বিতর্কের সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন এবং এটাই সত্য। তবুও এই প্রশ্নটি যাতে আর কখনও না ওঠে তা নিশ্চিত করতে আমি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চেয়েছি।
রাষ্ট্রপতির পাঠানো রেফারেন্সের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ ৮ আগস্ট এ সম্পর্কে তাদের মতামত দেন। এতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা দূর করতে এবং নির্বাহী কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টামণ্ডলীকে শপথবাক্য পাঠ করাতে পারবেন বলে আপিল বিভাগ মতামত দেন।
জনতার চোখ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে- পালিয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে রেডিও-টেলিভিশনে ভাষণ দেয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন শেখ হাসিনা। বলেছিলেন- দীর্ঘ নয়, অল্প সময় কথা বলবেন তিনি। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি এবং সেনাপ্রধানের অনাগ্রহে সে সুযোগ পাননি শেখ হাসিনা। তখন তাকে বলা হয়, চারদিকে লোকজন জড়ো হয়ে গেছে। সবাই মারমুখো। অল্প সময়ের মধ্যেই তারা গণভবনে পৌঁছে যেতে পারে। তার নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাকে সে সুযোগ দেয়া যাবে না। হাসিনা বিরক্ত, ক্ষুব্ধ। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। বক্তৃতার একটি খসড়া তৈরি করেছিলেন তিনি। নানা সূত্রে জানা যায়, এতে তিনি বলতে চেয়েছিলেন- তার ইচ্ছায় নয়, বলপূর্বক তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। কারা এবং কোন বিদেশি শক্তি তার সরকারকে উৎখাত করতে চেয়েছে এটাও তিনি দেশবাসীকে জানাতে চেয়েছিলেন। তাঁর শাসনকালে দেশের কি কি উন্নয়ন হয়েছে তারও বয়ান ছিল। সকাল থেকে দুপুর, এ সময় নানাভাবে দরকষাকষিও চলছিল। বারবার ফোন আসছিল নয়াদিল্লি থেকে। বলা হচ্ছিল, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ঢাকার তরফে দিল্লিকে বলা হয়েছিল- তারা যেন বিমান পাঠিয়ে হাসিনাকে নিয়ে যান। সে অনুরোধে সাড়া দেয়নি দিল্লি। এরপর বাংলাদেশের স্ব-উদ্যোগে বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০ বিমানে তাকে দিল্লি পাঠানো হয়। হাসিনাকে বহনকারী বিমানে আরও দু’জন ছিলেন। তার ছোটবোন শেখ রেহানা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তিন বাহিনীর প্রধানদের সামনে রেখে বলেছিলেন- ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।’ রাষ্ট্রপ্রধানের এই দ্বিমুখী বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজালের। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আরটিভি/এআর/ ডিসিএনই