ব্যাটারিচালিত রিকশার বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশের প্রতিবাদে রাজধানীতে গত কয়েকদিন ধরে টানা সড়ক অবরোধ করছেন রিকশাচালকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন মানুষ। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সম্পর্কে উচ্চ আদালত থেকে একটি ভালো নির্দেশনা আসবে বলে আশা করছি। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করব।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এই সমস্যার সন্তোষজনক সমাধান হবে। এর আগে আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচির আহ্বান জানাচ্ছি।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও উন্নতি হচ্ছে, যা কেউ অবনতির চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।
এর আগে, বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ, মিরপুর, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরা। পরে দ্বিতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবারও (২১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাজধানীর মহাখালী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গাবতলী ও ডেমরা এলাকায় তারা জড়ো হন। এতে এসব এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ।
এসব এলাকায় সড়ক অবরোধের পাশাপাশি একপর্যায়ে মহাখালী রেলক্রসিংসহ রেললাইনে অবস্থান নেন তারা। এই অবস্থানের কারণে মহাখালী ও আশপাশের এলাকায় সেদিন সম্পূর্ণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন করায় যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকা থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর জুরাইন এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন অটোরিকশা চালকরা। এতে পদ্মা সেতুর সঙ্গে ঢাকার রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৪ ঘণ্টা পর ওই দিন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় আজও সকালে রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে তোপখানা ও পল্টন সড়ক, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, খিলগাঁও এবং যাত্রাবাড়ী এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা। এতে এসব এলাকাসহ আশেপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুলও জারি করেন আদালত। হাইকোর্টের আদেশের পরদিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, হাইকোর্ট থেকে অটোরিকশা বন্ধের যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা তারা মানেন না। এই নির্দেশ প্রত্যাহারও চান তারা। যতক্ষণ পর্যন্ত অটোরিকশা চালানোর অনুমতি না দেওয়া হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তবে সিটি করপোরেশন থেকে প্যাডেলচালিত রিকশার লাইসেন্স নেওয়ার বিধান থাকলেও ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স দেওয়ার কোনো বিধান নেই। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স পেতে রিট করা করা হলে হাইকোর্ট ওই দুই রিটই খারিজ করে দেন।
আরটিভি/আইএম/এআর
মন্তব্য করুন