ভারতের ঘটনাকে বাংলাদেশে ইসকনের গরুর খামারে হামলা বলে প্রচার
ইসকনের গরুর খামারে কয়েক যুবকের হামলার দৃশ্যটি বাংলাদেশের নয়। প্রচারিত ভিডিওটি ভারতের পাঞ্জাবের একটি গরুর খামারে হামলার পুরোনো দৃশ্য বলে জানা গেছে।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ভারতের পাঞ্জাবে গরুর ওপর যুবকদের হামলার দৃশ্যকে বাংলাদেশে ইসকনের গরুর খামারে হামলার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। দৃশ্যটি বাংলাদেশের নয়; বরং প্রচারিত ভিডিওটি ভারতের পাঞ্জাবের একটি গরুর খামারে হামলার পুরোনো দৃশ্য।
অনুসন্ধানে ‘ভিনয় কাপুর’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১৪ নভেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।
ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের পোস্টটির ক্যাপশন ভাষান্তর করে জানা গেছে, জলন্ধর জমশেদ ডেইরিতে কিছু লোক গরুটিকে বাজেভাবে হত্যা করে। ভিডিওটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো হয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়, যাতে এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
পোস্টদাতা নিজেকে শ্রী গোবিন্দ গরু প্রতিরক্ষা দলের সভাপতি দাবি করেন। এ ছাড়া তিনি নিজেকে সর্বভারতীয় শিবসেনা রাষ্ট্রবাদীর পাঞ্জাবের সভাপতি দাবি করেন।
পোস্টে উল্লেখিত স্থানের সূত্র ধরে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে খবরস্তান নামের একটি ওয়েবসাইটে গত ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটির শিরোনাম (ইংরেজিতে অনূদিত): ‘Jalandhar: Brutally thrashed on a mute person in a dairy, watching the VIDEO will blow your mind’। প্রতিবেদনে যুক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।
খবরস্তান নামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গরুর ওপর যুবকদের হামলার দৃশ্যটি ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের জলন্ধর শহরের জমশেদ ডেইরির। এ ছাড়া, ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ট্রিবিউনের ওয়েবসাইট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
প্রসঙ্গত, জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এরই প্রেক্ষিতে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। সে সময় সাইফুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশে ইসকনের গরুর খামারে আক্রমণের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।
আরটিভি/এফএ
মন্তব্য করুন