জামিনে মুক্তি পেলেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৯ কর্মকর্তা
প্রায় আড়াই মাস কারাভোগের পর জামিনের মুক্ত হলেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৯ কর্মকর্তা। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান তারা।
মুক্তি পাওয়া কর্মকর্তারা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, মাগুরার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রাহাত, নেত্রকোনার সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মনির হোসেন, মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার রাজন কুমার দাস, সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বেলাল হোসেন, কুমিল্লার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার দীপক কুমার সিংহ, লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম আলী হাসান মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম (৪৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (আইটি) এস কে শাকিল আহমেদ (৩১) ও ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সালাউদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তারা।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার শাহাদাত বলেন, আসামিরা কেউ রাষ্ট্র বিরোধী নয় বরং রাষ্ট্রের পক্ষেই আন্দোলন করেছে। যে ধারায় এই মামলাটি করা হয়েছে সেই ধারায় এই মামলাটি চলে না। মূলত
একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মামলাটি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও সমিতির মধ্যে পেশাগত বৈষম্য, বোর্ডের সরবরাহ করা নিম্নমানের মালামাল ও দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়ে কথা বলাতেই রোষানলে পড়তে হয়েছে সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের।
আনোয়ার শাহাদাত বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করতে হলে যেই ধরনের ফৌজধারী কার্যবিধি ও প্রসিডিউর অনুসরণ করতে হয় এই মামলার ক্ষেত্রে তা প্রতিপালন করা হয়নি। মহামান্য আদালত বিষয়টি অনুধাবন করে আসামিদের জামিন দিয়েছেন।
এর আগে ১৭ অক্টোবর খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড খিলক্ষেত থানার পরিচালক প্রশাসন (আইন শাখার) আরশাদ হোসেন। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সাইবার নিরাপত্তা আইনের অভিযোগ আনা হয়।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের দাবি, পল্লী বিদ্যুৎ সিস্টেম সংস্কার করে বোর্ড ও সমিতিকে একীভূত করণ এবং অনিয়মিত কর্মীদের নিয়মিতকরণের যৌক্তিক দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীরা। দাবির যৌক্তিকতা বিবেচনায় সরকার একাধিক কমিটিও করে দিয়েছিল। সেই কমিটি আলোচনার জন্য একাধিক মিটিংও করেছে।
এরপর সমিতির ২৪ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত, অন্যান্য শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীদের সংযুক্ত ও স্ট্যান রিলিজ, হয়রানিমূলক বদলীসহ একেরপর এক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে থাকে। শুধু তাই নয় বোর্ডের এমন পদক্ষেপে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে পল্লী বিদ্যুৎ খাত।
একপর্যায়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, সাইবার নিরাপত্তা আইনে পৃথক তিনটি মামলা করে বোর্ড। এমন পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ হয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। আড়াই মাস পর কর্মকর্তারা জামিন লাভ করায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আরটিভি/এএইচ
মন্তব্য করুন