নিউইয়র্কের আকাশে বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকলেন ফাহিম
দেশের মানুষ যে দিনটির জন্য চিরকাল গর্ববোধ করবে, সেটি আজকের এই দিন— ১৬ ডিসেম্বর। বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য ও বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের নাম সংযোজিত করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। আজ মহান বিজয় দিবস।
এদিকে, মহান বিজয় দিবস উদযাপনে নিউইয়র্কের রিপাবলিক বিমানবন্দর থেকে প্লেন উড়িয়ে আকাশে বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকলেন বাংলাদেশের স্টুডেন্ট পাইলট ফাহিম চৌধুরী। আকাশে গোটা ম্যাপটি তৈরি করতে ফাহিমের ২ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট উড্ডয়ন করতে হয়েছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই বিমানবন্দর থেকে মাঝ আকাশে বাংলাদেশের মানচিত্রের রুটম্যাপ তৈরি করতে স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১৬ মিনিটে উড্ডয়ন করেন তিনি। আর রাত ১টা ৫৪ মিনিটে ফ্লাইটটি অবতরণ করে।
মুহূর্তে ম্যাপটি ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশিদের প্রশংসা পান ফাহিম। সেসনা-১৭২ ব্রান্ডের এয়ারক্রাফট দিয়ে ফ্লাইটটি পরিচালনা করেন ফাহিম। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেছেন তার বন্ধু আসাদ আবদুল্লাহ। যিনি পুরো সময় তার পাশে ছিলেন।
ফাহিম বাংলাদেশের গ্যালাক্সি ফ্লাইং একাডেমি থেকে প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স অর্জন করে বর্তমানে কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্সের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণরত আছেন।
ফাহিম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৩ বছর পূর্তিতে একটি বিশেষ কাজ করার চিন্তা থেকেই এ ম্যাপটি তৈরি করেছি। ফ্লাইট রাডার ব্যবহার করে মানুষ অনেক ধরনের অদ্ভুত ও সৃজনশীল জিনিস আঁকে, যা দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। যেহেতু আমাদের দেশের ইতিহাস অনেক সংগ্রামী, তাই এ ম্যাপটি তৈরি করতে গিয়ে আমি চেষ্টা করেছি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে। ফ্লাইট রাডারের মাধ্যমে বিমানগুলোর রুট দিয়ে এমন একটি ম্যাপ তৈরি করা এক ধরনের নতুন অভিজ্ঞতা, যা দেশের প্রতি আমার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতীক হয়ে থাকবে।
আকাশে বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকা ফাহিম বলেন, এ ম্যাপ তৈরি করতে গিয়ে আমি অনেক আবেগ অনুভব করেছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের কথা মনে পড়লে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে ত্যাগ ও সংগ্রাম, তা কখনোই ভুলে যাওয়া উচিত নয়। এ ম্যাপের মাধ্যমে আমি আমাদের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চেয়েছি। তারা যে আত্মত্যাগ করেছেন, তা দেশের প্রতি আমার ভালোবাসাকে আরও গভীর করে তোলে। স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে যে পরিমাণ কষ্ট, ত্যাগ আর সংগ্রাম ছিল, তা ভেবে আমি সত্যিই গর্বিত।
আরটিভি/এএ-টি
মন্তব্য করুন