সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ
বাংলাদেশ-ভারতে সীমান্তে বিএসএফের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ নিয়ে দেশটির হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রোববার (১২ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে প্রণয় ভার্মার কাছে এই উদ্বেগের কথা জানান পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন।
যথাযথ অনুমোদন ছাড়া সীমান্তে বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের ঘটনায় পররাষ্ট্র সচিব জোর দিয়ে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া তৈরি করার মতো কার্যকলাপ অননুমোদিত প্রচেষ্টা এবং বিএসএফের সংশ্লিষ্ট অপারেশনাল পদক্ষেপ সীমান্তে উত্তেজনা ও ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। যথাযথ অনুমোদন ছাড়াই কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সহযোগিতা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের চেতনাকে ক্ষুণ্ন করছে।
এ সময় সীমান্তে হত্যার পুনরাবৃত্তি নিয়ে গভীর উদ্বেগ এবং হতাশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ উভয়পক্ষ এ বিষয়ে জড়িত। এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র সচিব।
সুনামগঞ্জে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এটিও গুরুতর উদ্বেগের বিষয় যে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বারবার অ-প্রাণঘাতী কৌশল অনুসরণ এবং হত্যা বন্ধ করার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও এই ধরনের হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ ও সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত পরিচালনা এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন ভারতের সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে এমন কোনো উসকানিমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়, যা ভাগাভাগি করা সীমান্তে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে এই ধরনের সমস্যাগুলি গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে, বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুসারে এবং সীমান্তে শান্তি ও স্থায়িত্ব বজায় রাখার উপায়ে সমাধান করা উচিত।
এদিকে, পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকের পর ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, অপরাধশূন্য সীমান্ত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যাতে চোরাচালান, মানবপাচার ও অপরাধীদের চলাচল চ্যালেঞ্জ রোধ করা সম্ভব হয়। অপরাধ দমনে সীমান্ত নিরাপত্তায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া রয়েছে। তাদের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব থাকাও প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন প্রণয় ভার্মা।
আরটিভি/কেএইচ-টি
মন্তব্য করুন