হাসপাতালের সামনে চিকিৎসার অভাবে ইসমাইলের মৃত্যু, ৫ জন কারাগারে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরার ডেল্টা হেলথকেয়ার হাসপাতালের সামনে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে পড়েছিলেন রিকশাচালক মো. ইসমাইল। এ সময় হামাগুড়ি দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠে জীবন বাঁচানোর জন্য সাহায্যের আকুতি জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা দরজা খোলেননি, চিকিৎসাও দেননি। পরে সেখানেই প্রাণ হারান ইসমাইল।
জানা গেছে, সম্প্রতি মো. ইসমাইলের সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি নজরে এলে স্বপ্রণোদিত হয়ে শুক্রবার বিকেলে ওই হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে একজন চিকিৎসকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে হাতিরঝিল থানা-পুলিশ। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় শনিবার (১৮ জানুয়ারি) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাদেরকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
ওই আবেদনে বলা হয়, ভিকটিম ইসমাইল (৪৬) ঘটনার দিন ১৯ জুলাই বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় রামপুরার ডেল্টা হেলথ কেয়ারের প্রবেশ পথের সিঁড়িতে পড়েছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে গেলেও তাকে কোনো ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে তিনি বিনা চিকিৎসায় সেখানে মৃত্যুবরণ করে। অভিযান চালিয়ে পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করি। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ঘটনার দিনের ওই সময় অভিযুক্তরা ডেল্টা হেলথ কেয়ারে উপস্থিত ছিলেন। তাদের অবহেলার কারণে ইসমাইলের মৃত্যু হয়েছে।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা রহমান তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন—ডেল্টা হেলথকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সাদি বিন শামস, মার্কেটিং অফিসার হাসান মিয়া, মেইনটেনেন্স বোরহান উদ্দিন, সিকিউরিটি গার্ড ইসমাঈল ও নাজিম উদ্দিন।
নিহত ইসমাইল আলীর স্ত্রী লাকি বেগম জানান, গত ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ইসমাইল আলী গুলিবিদ্ধ হন। হত্যাকারীদের মহড়ার কারণে তিনি তার স্বামীর কাছেও যেতে পারেননি। হুমকির কারণে মরদেহটির পোস্ট মর্টেম করতে পারেননি তিনি। আওয়ামী সরকারের পতনের পর হাতিরঝিল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন লাকি বেগম।
আরটিভি/এসএপি-টি
মন্তব্য করুন