• ঢাকা সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১
logo

শহীদ আসাদ দিবস আজ

আরটিভি নিউজ

  ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২৯
শহীদ আসাদ দিবস আজ
ছবি: সংগৃহীত

শহীদ আসাদ দিবস আজ। পাকিস্তানি স্বৈরাচার আইয়ুব খানের পতনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করার সময় ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত হন মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি হলেন- ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের পথিকৃৎ তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের তিন শহীদদের একজন। অন্য দু’জন হলেন শহীদ রস্তম ও শহীদ মতিউর।

শহীদ আসাদের এই আত্মত্যাগ চলমান আন্দোলনে যোগ করে নতুন মাত্রা। বাঙালির স্বাধিকারের দাবিতে সোচ্চার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ জেল-জুলুম উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে। পর্যায়ক্রমে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করে, যা পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এই গণঅভ্যুত্থানটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে ৬৯’এর গণঅভ্যুত্থান নামে পরিচিত।

আসাদুজ্জামান ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে মৃত্যুকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে এম এ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আসাদ তৎকালীন ঢাকা হল (বতর্মান শহীদল্লাহ হল) শাখার পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে এবং পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রদের ১১ দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ছাত্র সংগঠনের নেতারা, এতে প্রধান ভূমিকা রাখেন আসাদ। ১৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্ররা দেশব্যাপী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ডাক দেয়। ফলে গভর্নর হিসেবে মোনেম খান ১৪৪ ধারা আইন জারি করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে ২০ জানুয়ারি দুপুরে ছাত্রদের নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের পার্শ্বে চানখাঁর পুল এলাকায় মিছিল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন আসাদ।

পুলিশ তাদের চানখাঁর ব্রিজে বাধা দেয় ও চলে যেতে বলে। কিন্তু বিক্ষোভকারী ছাত্ররা সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান নেন এবং আসাদ ও তার সহযোগীরা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। ওই অবস্থায় খুব কাছ থেকে আসাদকে লক্ষ্য করে এক পুলিশ অফিসার গুলিবর্ষণ করে। তৎক্ষণাৎ গুরুতর আহত অবস্থায় আসাদকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আসাদের মৃত্যু পরিবেশকে আরও ঘোলাটে করে তোলে ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় রূপান্তরিত হয়। যা বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করে।

পরে হাজারো ছাত্র-জনতা আসাদের মৃত্যুতে একত্রিত হয়ে পুনরায় মিছিল বের করে এবং শহীদ মিনারের পাদদেশে জমায়েত হয়। কেন্দ্রীয় প্রতিরোধ কমিটি তাকে শ্রদ্ধা জানাতে ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি সারাদেশে ধর্মঘট আহ্বান করে। ধর্মঘটের শেষ দিনে পুলিশ পুনরায় গুলিবর্ষণ করে। এতে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান সরকার দু’মাসের জন্য ১৪৪-ধারা আইন প্রয়োগ স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশের অনেক জায়গায় জনগণ আইয়ুব খানের নামফলক পরিবর্তন করে শহীদ আসাদের নামে রাখেন। বিশেষ করে জাতীয় সংসদ ভবনের ডান পার্শ্বে অবস্থিত আইয়ুব গেটের পরিবর্তে আসাদ গেট রাখা হয়।

প্রতি বছরই জানুয়ারির ২০ তারিখে শহীদ আসাদের দেশমাতৃকার সেবায় মুক্তি এবং স্বাধীনতার লক্ষ্যে তার মহান আত্মত্যাগ ও অবদানকে বাঙালি জাতি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে গভীর শ্রদ্ধায় শহীদ আসাদ দিবস পালন করে থাকে। দিবসটি উপলক্ষে আজ বিভিন্ন ছাত্র ও যুব সংগঠন নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আরটিভি/কেএইচ

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শহীদ আসাদ মুক্তিকামী মানুষের মধ্যে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন: প্রধান উপদেষ্টা
ক্রীড়াঙ্গনে স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা এখনও স্বপদে বহাল: আমিনুল হক
ওবায়দুল কাদেরের ‘পালিত ছেলে’ আসাদুজ্জামান গ্রেপ্তার
হবিগঞ্জে স্বামীর বিরুদ্ধে সেই পাকিস্তানি তরুণীর মামলা