• ঢাকা বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১
logo

এস কে সুরকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো হল মার্ক দুর্নীতি মামলায়

আরটিভি নিউজ

  ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৩৩
এস কে সুরকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো হল মার্ক দুর্নীতি মামলায়
ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এস কে) সুরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র তদন্ত সংস্থা সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখান। মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে হল মার্কের বিরুদ্ধে সাত বছর আগে মামলাটি করা হয়।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে তাকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক ছায়েদুর রহমান মামলার সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেন। সুরের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত তার বক্তব্য শুনতে চাইলে, তিনি আদালতের কাছে তাকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সে সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় মামলার ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে আদালতে জানান তিনি। এরপর আদালত তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনে বলা হয়, মামলা তদন্তকালে দেখা যায়, ২০১০ সালের ২৬ জুন থেকে ২০১২ সালের ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এজাহারনামীয় আসামি তুষার আহমেদ, মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন ও সুমন ভূঁইয়া পরস্পর যোগসাজশে অপরাধলব্ধ ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ উৎস গোপন করার লক্ষ্যে সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে হস্তান্তর ও স্থানান্তরপূর্বক লেয়ারিং করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ ধারা তৎসঙ্গে পঠিতব্য মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০০৯ এর ৪ ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

মামলায় সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, তুষার আহমেদ ও আসলাম উদ্দিনের যৌথ নামীয় ১৬টি এফডিআর শুরুতে যার মোট মূল্য ছিল ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও তুষার আহমেদের স্ত্রী নাজনীন সুলতানার নামে মার্কেন্টাইল ব্যাংক লি., মিরপুর শাখা, ঢাকায় সঞ্চয়ী হিসাব নং- ০১১৪১২১০০০৭৯১২১ এ গত ০৭/১২/২০১১ ইং তারিখে ঢাকা ব্যাংকের একটি চেকের মাধ্যমে জমা করা ২ কোটি টাকা তুষার আহমেদ ও আসলাম উদ্দিনের অপরাধলব্ধ আয় থেকে অবৈধভাবে অর্জিত। কেননা ওই সময়ে তারা উভয়ে হল-মার্ক গ্রুপের কর্মচারী ছিলেন এবং রেকর্ডপত্র অনুযায়ী উভয়ের বেতন ছিল সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা।

সুতরাং তাদের নামে ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন তাদের বৈধ আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আর হল-মার্ক গ্রুপ কর্তৃক জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক লি., হোটেল শেরাটন কর্পোরেট শাখা, ঢাকা থেকে (ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে) আইবিপি, এফবিপি, পিএডি, পিসি ঋণের নামে আত্মসাৎ করা ও পরে স্থানান্তর, রূপান্তর, হস্তান্তর ও লেয়ারিং এর মাধ্যমে লন্ডারকৃত অর্থ প্রকৃতপক্ষে সোনালী ব্যাংক তথা সরকারি অর্থ। বর্ণিত (১১.৫০ কোটি + ২.০০ কোটি) = ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা হল-মার্ক গ্রুপ কর্তৃক জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত ও পরে লন্ডারকৃত আর্থেরই অংশ মর্মে প্রতীয়মান হয়, যার অবৈধ উৎস গোপন করার লক্ষ্যে ঘন ঘন ও নগদ লেনদেন দেখানো হয়েছে এবং নামে বেনামে বিভিন্ন হিসাব খুলে নিজেদের মধ্যে লেনদেন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, হলমার্কের এই ঋণ কেলেংকারির সময় সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই মামলার ঘটনা সংক্রান্তে সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা বিশেষ প্রয়োজন মর্মে প্রতীয়মান হয়। তাই মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামলার ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজতি আসামি সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী/২০১৫) এর ৪ ধারা মামলায় পুনঃগ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তুষার আহমেদ ও আসলাম উদ্দিন উভয়েই হল-মার্ক গ্রুপের কর্মচারী ছিলেন। তুষার আহমেদের বক্তব্য অনুসারে তিনি হল-মার্ক গ্রুপের জিএম (কমার্শিয়াল) হিসেবে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা বেতন পেতেন এবং বেতন রেজিস্ট্রারের রেকর্ডও তা সমর্থন করে। আসলাম উদ্দিন তুষার আহমেদের আগে থেকেই হল মার্ক গ্রুপে চাকরি করেন। অনুসন্ধানকালে গৃহীত তার বক্তব্য অনুসারে তিনিও ২০১১ সালে জিএম হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর হল-মার্ক গ্রুপ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা মাসিক বেতন পেয়েছেন অল্প কিছুদিন।

তার আগে তাদের বেতন ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। হল-মার্ক গ্রুপে চাকরীকালীন ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সময়ে তুষার আহমেদ ও আসলাম উদ্দিনের যৌথ নামে ঢাকা ব্যাংক, আসলাম উদ্দিনের একক নামে ঢাকা ব্যাংক ও তুষার আহমেদের একক নামে ঢাকা ব্যাংক প্লাটিনাম হিসাব পরিচালিত হয়েছে। এ অবস্থায় আসামি তুষার আহমেদ, মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন, সুমন ভূঁইয়া অপরাধলব্ধ ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে হস্তান্তর ও স্থানান্তরপূর্বক লেয়ারিং করে অবৈধ উৎস গোপন করার অপরাধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ ধারা তৎসঙ্গে পঠিতব্য মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৯ এর ৪ ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন।

আরটিভি/কেএইচ

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কলেজছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩
১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করলেন বিদিশা
দেশে ফিরেই গ্রেপ্তার হলেন সাদ্দাম
সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা