শনাক্ত দোলার মরদেহ
চুড়িহাট্টা ট্রাজেডি: ছোটবেলা থেকে মরণ পর্যন্ত একসঙ্গে দোলা-বৃষ্টি
ছোটবেলা থেকেই বন্ধুত্ব তাদের। চতুর্থ শ্রেণি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত পড়েছে একই প্রতিষ্ঠানে। এরপর দু’জন দুই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করলেও তাদের বন্ধুত্ব রয়ে গিয়েছিল আগেরমতই। তাদের বন্ধুত্বকে ঘিরে যেনও দুটো পরিবারের সদস্যদের মাঝেও গড়ে উঠে বন্ধুত্ব। কিন্তু সবকিছুই যেনও উলটপালট হয়ে গেল ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়।
ছোটবেলায় গড়ে ওঠা বন্ধুত্ব যে একসঙ্গেই আগুনে পুড়ে মারা গেল।
পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন দুই বান্ধবী ফাতেমাতুজ জোহরা বৃষ্টি ও রেহনুমা তাবাসসুম দোলা। ঘটনার দিন অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে শিল্পকলা একাডেমি থেকে একসঙ্গে একটি অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফিরছিলেন তারা।
নিখোঁজ পর তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, অগ্নিকাণ্ডের আগমুহূর্তে তারা ওই স্থানেই ছিলেন।
নিখোঁজের পর অনেক খোঁজাখুঁজির করেও তাদের না পেয়ে আতঙ্কিত পরিবার গিয়েছিলেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে। এরপর জানা যায় ঘটনার সময় দুজনই চুড়িহাট্টার পাশ দিয়ে রিকশায় যাওয়ার সময় প্রাণ হারান।
গেল সপ্তাহের বুধবার (৬ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে সিআইডি ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে বৃষ্টির পরিচয় শনাক্ত করা হয়। সেদিন সিআইডির মালিবাগ কার্যালয়ে ডিএনএ টেস্টে ১৯টি মরদেহের মধ্যে ১১ জনকে শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে ছিল ফাতেমা-তুজ-জোহরার বৃষ্টির মরদেহও।
এরপর মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দ্বিতীয় ধাপে পাঁচটি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে সিআইডি। এর মধ্যে পাওয়া গেল দোলার মরদেহও।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, দোলার বাবা দলিলুর রহমান দুলালের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে এটি মিলে যাওয়ায় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এটিই তার মরদেহ। মরদেহ হস্তান্তরের জন্য ইতোমধ্যে শনাক্তদের পরিচয় চকবাজার থানা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুন লাগে। সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে মারা যায় ৬৬ জন। আগুনে দগ্ধ ও আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও চারজন।
আর/এসএস
মন্তব্য করুন