মিন্নির পক্ষে লড়বেন শতাধিক আইনজীবী
আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে আইনি সহায়তা দিবেন শতাধিক আইনজীবী। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), নিজেরা করি'র আইনজীবীরা এই সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
ব্লাস্টের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জেডআই খান পান্না এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার ২০ জুলাই সকালে ঢাকা থেকে ১৪ সদস্যর আইনজীবী প্রতিনিধি দল বরগুনার পথে রওনা দিয়েছে। বিকেলে ২০ সদস্যর আরো একটি আইনজীবী প্রতিনিধি দল বরগুনা যাবে। শতাধিক আইনজীবী লড়বেন মিন্নির পক্ষে।
জেডআই খান পান্না বলেন, তিন সংগঠনের আইনজীবীদের প্রতিনিধি দল বরগুনা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে অভিজ্ঞ ১৪ জন আইনজীবী রওনা দিয়েছেন। বিকেলে আরো ২০ জন আইনজীবী ঢাকা থেকে যাবেন।
ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন স্থানের আইনজীবীরাও তার পক্ষে লড়তে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
এসজে
মন্তব্য করুন
সরকারি চাকরিতে হিন্দু প্রার্থীদের নিষিদ্ধের দাবি সঠিক নয়: প্রেস উইং
সম্প্রতি টাইমস অ্যালজেব্রা নামে একটি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে ‘সরকারি চাকরিতে হিন্দু প্রার্থীদের নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার’ এমনটি দাবি করা হয়েছে। তবে এ দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট বলে জানিয়েছে চিফ অ্যাডভাইজার (সিএ) প্রেস উইং ফ্যাক্টস।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ধর্মের ভিত্তিতে কোনো নাগরিকের প্রতি বৈষম্য করে না। পোস্টে উল্লিখিত স্বরাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার উদ্ধৃতিটিও মিথ্যা।
টাইমস আলজেব্রার ওই পোস্টে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে হিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। পাস করা নতুন এক সরকারি আদেশে কনস্টেবল থেকে শুরু করে পুলিশের উচ্চ পদে যোগদানে হিন্দু প্রার্থীদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব পদে দেড় হাজারের বেশি হিন্দু প্রার্থীর আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
আরটিভি/এসএপি/এস
বাংলাদেশে তেল রিফাইনারি কারখানা করতে চায় সৌদি আরব
ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেছেন, পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে তেল রপ্তানির হাব গড়তে বাংলাদেশে তেল রিফাইনারি কারখানা করতে চায় সৌদি আরব।
রোববার (৫ জানুয়ারি) সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেন, বাংলাদেশ-সৌদি আরব সম্পর্ক শুধু জনশক্তি রপ্তানিতে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। বাংলাদেশে তেল রিফাইনারি কারখানা করে পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে তেল রপ্তানির হাব গড়া যেতে পারে।
অতীতের কথা উল্লেখ করে সৌদি রাষ্ট্রদূত অভিযোগ করে বলেন, অনেক বড় প্রকল্প সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে সুনির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ে গেলে আটকে যেত। ব্যক্তি স্বার্থে এসব প্রকল্প আটকে ফেলা হতো বলে তার ধারণা তার।
তিনি আরও বলেন, একুয়াপাওয়ার যখন বাংলাদেশে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে আগ্রহী ছিল প্রতিষ্ঠানটিকে সুযোগ দেওয়া হয়নি।
এ সময় সেমিনারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, এতদিন বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশের কথা যতটা বলা হতো, ততটা ছিল না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঠিক পরিবেশ দিতে বদ্ধপরিকর। সব দেশের জন্যই জনশক্তি প্রশিক্ষণ দিতে হবে আমাদের।
আরটিভি/এমএ/এস
মেট্রোরেলের ভাড়া নিয়ে সুখবর
যাতায়াত ব্যয় সাশ্রয় করার লক্ষ্যে মেট্রোরেল সেবাকে ভ্যাটমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এবনিআর)।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী স্বাক্ষরিত এক বিশেষ আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, যেহেতু, মেট্রোরেল বাংলাদেশের সর্বাধুনিক ও জনপ্রিয় গণপরিবহন; যানজট নিরসনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি কর্মঘণ্টা সাশ্রয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে; তাই মেট্রোরেলকে অধিক জনপ্রিয় করবার লক্ষ্যে এর যাতায়াত ব্যয় সাশ্রয়ী করা প্রয়োজন।
ফলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪৭ নং আইন) এর ধারা ১২৬ এর উপ-ধারা (৩) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, দ্রুতগামী, নিরাপদ, সময় সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব ও দূরনিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পরিবহন ব্যবস্থা মেট্রোরেল সেবার ওপর আরোপিত মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি প্রদান করল।
চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে বলেও জানানো হয়।
আরটিভি/এফএ/এআর
বাংলাদেশে ভূমিকম্প নিয়ে দুঃসংবাদ
সাত দিনের মধ্যে দুইবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে দেশ। আর গত ৯০ দিনে বাংলাদেশের আশপাশে মৃদু ও তীব্র মাত্রার ৫০টির বেশি ভূমিকম্প হয়েছে। গত ১৫ বছরে ১৫০টির বেশি ছোট-বড় ভূমিকম্প হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস।
বিশ্বে ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের তালিকায় আছে ঢাকা। বাংলাদেশে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবুও কোনো সরকারই এ দুর্যোগে ক্ষতি কমাতে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট-বড় মাত্রার এসব ভূমিকম্প সামনের বড় মাত্রার ভূমিকম্পের আভাস দিচ্ছে। আর ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরের চেয়ে সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
এদিকে গত ৭ জানুয়ারি রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে তিব্বতে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এই ভূমিকম্পে তিব্বতের পাশাপাশি বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতও কেঁপে ওঠে। প্রধান ভূতাত্ত্বিক ফল্ট লাইনে অবস্থানের কারণে প্রায়ই এই অঞ্চল কম্পিত হচ্ছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ ভূকম্পনের সক্রিয় এলাকায় অবস্থিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছোটোখাটো কম্পন দেশটিতে আরও শক্তিশালী ভূমিকম্পের আশঙ্কা নির্দেশ করে। এ ছাড়াও দুর্যোগ সূচকে বিশ্বের ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের মধ্যে রয়েছে ঢাকা। সবশেষ বাংলাদেশে বড় ধরণের ভূমিকম্প হয়েছে ১৯১৮ সাল। এর কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের মধ্যে এবং যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে আতঙ্কেই মারা যান ছয়জন। গত ৭৫ বছরে বাংলাদেশে বড় ধরনের কোনো ভূমিকম্প হয়নি, ফলে শিগগিরই একটি বড় ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত ও মিয়ানমার টেকটোনিক প্লেট গেছে। গত শত শত বছর এসব প্লেটে বড় কোনো ভূমিকম্প হয়নি। ফলে এই প্লেটে সঞ্চিত হয়েছে দীর্ঘদিনের শক্তি। হঠাৎই এটি ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি করতে পারে। আর এ মাত্রার ভূমিকম্প হলে লাখ লাখ প্রাণহানির সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে ঢাকা। বুয়েট ও সরকারের একটি যৌথ সমীক্ষায় দেখা যায়, সাড়ে সাত মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকার ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়বে। যেখানে তৈরি হবে সাত কোটি টন কংক্রিটের স্তূপ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ও ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেন্ট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘৭ মাত্রার ভূমিকম্প যদি সীমান্ত এলাকায় হয় তাহলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বাংলাদেশকে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় ক্ষয়ক্ষতি হবে। ঢাকায় ক্ষয়ক্ষতি হবে কারণ ঢাকার ভবনগুলো বেশিরভাগ ঝুঁকিপূর্ণ।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ‘আমাদের দেশের আশপাশ দিয়ে তিনটি টেকটোনিক প্লেট গেছে। যেগুলোর সংযোগস্থল সীমান্তের আশপাশে। আমাদের অবস্থান ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেটে, আমাদের উত্তরে হিমালয় পড়েছে ইউরেশিয়ান প্লেটে আর আমাদের পূর্বে হচ্ছে মিয়ানমার মাইক্রো প্লেট। সবগুরো প্লেটই আমাদের কানেক্টেড এবং সক্রিয়। এগুলোর মুভমেন্ট আছে। প্লেটগুলো প্রতি বছর ৫ সেন্টিমিটার মুভমেন্ট করে। অর্থাৎ, আমার প্রতি বছর ৫ সেন্টিমিটার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মুভমেন্ট করছি। একইভাবে পুরো পৃথিবীও মুভ করছে।’
তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাছে শুধু ইক্যুইপমেন্টস আছে। শুধু ইক্যুইপমেন্টস দিয়ে হবে না। কারণ, ভবন মেরামত না করলে ভবন চাপা পড়ে মানুষ মারা যাবেই। এছাড়া গ্যাস-বিদ্যুতের অপরিকল্পিত লাইন ঢাকা শহরে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ।’
আরটিভি/এসএপি-টি
১০০ টাকা মোবাইল রিচার্জে করই দিতে হবে ৫৬ টাকা ৩০ পয়সা
মোবাইলে কলরেট ও ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম যেখানে কমিয়ে আনার দাবি দীর্ঘদিনের, সেখানে আবারও বাড়তে যাচ্ছে গ্রাহকের খরচ। মুঠোফোন গ্রাহকদের সেবার ওপর আরও শতাংশ অতিরিক্ত সম্পূরক কর আরোপ করতে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। শিগগিরই এ নিয়ে জারি করা হতে পারে নতুন প্রজ্ঞাপন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র বলছে, মোবাইল ফোন সেবায় বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের সঙ্গে আরও ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সংযোজনের বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যে। অনুমোদন মিলেছে দুটি মন্ত্রণালয় থেকেও। এখন শুধু অপেক্ষা প্রজ্ঞাপন জারির।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী, বর্তমানে মোবাইলে ১০০ টাকার রিচার্জ করলে গ্রাহকদেরকে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ দিতে হয় ২৮ টাকা ১০ পয়সা। রেভিনিউ শেয়ার ও মিনিমাম ট্যাক্স দিতে হয় ৬ টাকা ১০ পয়সা, আর পরোক্ষ কর দিতে হয় আরও ২০ টাকা ৪০ পয়সা। অর্থাৎ, গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সবমিলিয়ে কর বাবদ তার থেকে কাটা পড়ে ৫৪ টাকা ৬০ পয়সা।
এ অবস্থায় সম্পূরক শুল্ক আরও ৩ শতাংশ বাড়ানো হলে গ্রাহকদের রিচার্জ বাবদ কর দিতে হবে ৫৬ দশমিক ৩ শতাংশ। এর মধ্যে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ বাবদ কাটা যাবে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ। রেভিনিউ শেয়ার ও মিনিমাম ট্যাক্স বাবদ কাটা যাবে ৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং পরোক্ষ কর বাবদ কাটা যাবে ২০ দশমিক ৪ শতাংশ। অর্থাৎ, গ্রাহক তার মোবাইলে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সবমিলিয়ে তাকে কর দিতে হবে ৫৬ টাকা ৩০ পয়সা। ফলে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জে ব্যবহার করতে পারবেন মূলত মাত্র ৪৩ টাকা ৭০ পয়সা।
মোবাইল ফোন সেবায় দফায় দফায় খরচ বাড়ায় কমে যাচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক। ডাটা ব্যবহারের খরচে কাটছাঁট করছেন অনেকেই। ফলে, যোগাযোগপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার বদলে উল্টোপথে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে দেশের মানুষ।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সবশেষ তথ্যানুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে মুঠোফোনের গ্রাহক ছিল ১৮ কোটি ৮৭ লাখ, যা গত জুনের চেয়ে ৭৩ লাখ কম। অন্যদিকে জুনের চেয়ে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যাও ৯৭ লাখ কমে ১৩ কোটি ২৮ লাখে নেমেছে।
মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ইন্টারনেট পরিষেবায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা তলানিতে আছি। কিন্তু ভ্যাটের ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে। যেখানে দেশের ৪৮ শতাংশ মানুষ এখনো ইন্টারনেট সেবার বাইরে, সেখানে নতুন করে উচ্চহারে করারোপ নাগরিকদের ইন্টারনেট সেবা বিমুখ করবে; নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবে।
আরটিভি/এসএইচএম-টি
সঞ্চয়পত্রে বাড়ছে মুনাফার হার
সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মুনাফার এ হার বাড়ছে অন্তত এক শতাংশ। তবে, সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা এর কম বিনিয়োগকারীরা মুনাফা কিছুটা বেশি পাবেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোর মুনাফার হার পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর বলে বিবেচনা করা হবে সঞ্চয়পত্রের এই নতুন মুনাফার হার। ৫ বছর ও ২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের গড় সুদের হার (সর্বশেষ ছয় মাসের নিলামের ভিত্তিতে) অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে এ মুনাফা। তবে, সাড়ে সাত লাখ টাকা বা এর কম বিনিয়োগকারীদের হিসাবে সর্বোচ্চ ৫০ বেসিস পর্যন্ত প্রিমিয়াম যোগ হবে। এতে সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে কিছুটা বেশি মুনাফা পাওয়া যাবে।
নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করে জানুয়ারি থেকে আগামী জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য সঞ্চয়পত্রের সম্ভাব্য মুনাফার হার নির্ধারণ করেছে সরকার। সেই হিসাবে পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকা বা এর কম বিনিয়োগকারীদের মুনাফার হার দাঁড়াবে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। এর বেশি অঙ্কের বিনিয়োগকারীদের মুনাফার হার দাঁড়াবে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে মুনাফা হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
এ ছাড়া তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে সম্ভাব্য মুনাফার হার ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। এক্ষেত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। বর্তমানে এ স্কিমে মুনাফার হার হচ্ছে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
নতুন প্রজ্ঞাপন জারি হলে পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মুনাফা পাওয়া যাবে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ হারে। আর সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফা পাওয়া যাবে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে। বর্তমানে এ স্কিমে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
আরটিভি/এসএইচএম-টি
বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকর্মীর মারধরে রক্তাক্ত প্রবাসী, গুনলেন জরিমানাও
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকর্মীদের মারধরে রক্তাক্ত সেই প্রবাসীকেই জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) গভীর রাতে বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করে তাকে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফারুক সুফিয়ানের মোবাইল কোর্ট প্রবাসী সাঈদ উদ্দিনকে জরিমানা করেন। জানা গেছে, তাকে ১৯৮০ সালের দণ্ডবিধি আইনের ১৮৯ ধারায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই ধারায় সরকারি কর্মচারীকে হুমকি কিংবা তার কর্তব্য পালনে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত সর্বোচ্চ দুই বছরের জেল বা জরিমানা কিংবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
এর আগে, বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে নরওয়ে প্রবাসী সাঈদ উদ্দিন বিমানবন্দরের ২ নম্বর ক্যানোপি গেট দিয়ে বেরিয়ে আসেন। গেট সংলগ্ন ডান পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় এক এভসেক সদস্যের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে এই যাত্রী উত্তেজিত হয়ে ওই নিরাপত্তাকর্মীকে ধাক্কা দেন। এর পরপরই অন্যান্য এভসেক ও আনসার সদস্যরা সাঈদকে কনকর্স হলের দিকে নিয়ে যায়। এ সময় সাত-আট জন মিলে তাকে বেদম মারপিট করে। এতে সাঈদের মাথা-মুখ ফেটে রক্তাক্ত হয়। পরে সেখান থেকে সাঈদ বেরিয়ে এলে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এভসেক সদস্যরা তাকেসহ তার আত্মীয়স্বজন সবাইকে আবারও ভেতরে নিয়ে যায়। পরে গভীর রাতে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে বিষয়টি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ চেপে যাওয়ার চেষ্টা করলেও মারপিটের শিকার যাত্রীর রক্তমাখা শরীর ও কিছু কথা-কাটাকাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিও দেখার পর এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।
ভিডিওতে মারপিটের শিকার ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আপনারা পাঁচ-ছয় জন ধরে আমাকে মারছেন।’ আর পাশে থাকা এভসেক সদস্য বলছেন, ‘আমাকে ধাক্কা দিলেন। আমি কি সাধারণ মানুষ? আমার ইউনিফর্ম আছে।’ তবে ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আহত ব্যক্তি বলছেন, ‘আমার কথা শোনেন ভাইয়া, আমি (ধাক্কা) দিইনি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম লিখিত আকারে তার বক্তব্য পাঠান। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে আহত যাত্রীর নাম উল্লেখ না করেই বলেন, রাত সোয়া ৯টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক আগমনী ক্যানোপি-২-এর সামনে দুজন যাত্রীর কর্তৃক বিমানবন্দরের একজন নিরাপত্তা সদস্যকে শারীরিকভাবে আঘাতের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, পাঁচজন আগমনী যাত্রীর একটি দল বিমানবন্দরের কার্যক্রম শেষ করে ক্যনোপি-২ এলাকা দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় তাদের মধ্যে একজন ট্রলিসহ গেটের ঠিক সম্মুখভাগে অবস্থান করলে সব আগমনী যাত্রীর জন্য প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। ওই সময় ওই এলাকায় সম্মানিত আগমনী যাত্রীদের চাপ বেশি থাকায় কর্তব্যরত এক নিরাপত্তাকর্মী বিনীতভাবে উক্ত যাত্রীকে কিছুটা সরে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি তাতে কর্ণপাত না করে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরবর্তী সময়ে কিছুক্ষণ পরে উক্ত নিরাপত্তা কর্মী পুনরায় ওই যাত্রীকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে গেলে তিনি রাগন্বিত হয়ে পড়েন এবং অকথ্য ও অশ্রাব্য ভাষায় উক্ত নিরাপত্তা কর্মীকে গালাগাল করতে থাকেন। এ সময় সেখানে নিয়োজিত আরও একজন নিরাপত্তাকর্মী ওই যাত্রীকে শান্ত করার চেষ্টা করলে একপর্যায়ে ওই যাত্রীর ছেলে (একই ফ্লাইটের যাত্রী, যিনি পেছনে অবস্থান করছিলেন) ঘটনাস্থলে এসে বিমানবাহিনীর ওই নিরাপত্তা কর্মীকে শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্ছিত করেন। যাত্রীরা ওই নিরাপত্তাকর্মীকে কিলঘুষি মারা শুরু করলে তাদের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি হয় এবং ওই নিরাপত্তা কর্মী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেখানে নিয়োজিত আনসার এবং অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যরা এগিয়ে এলে ওই নিরাপত্তাকর্মীদের উল্লেখিত দুজন যাত্রীর হাত থেকে মুক্ত করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, যাত্রীরা দীর্ঘ যাত্রার পর বিমানবন্দরে নেমেই আত্মীয়স্বজনদের কাছে যেতে ব্যস্ত হয়ে থাকেন। তাড়াহুড়ায় অনেক সময় শৃঙ্খলাও ভঙ্গ করেন তারা। কিন্তু একজন কর্মকর্তা সেগুলো আমলে না নিয়ে তাকে সুন্দরভাবে বের করে দেওয়াটাই মুনশিয়ানা।
প্রবাসীর মারধরের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন প্রবাসীর জন্য দেশে ফিরে বিমানবন্দরে মারপিটের শিকার হওয়ার চেয়ে বড় লজ্জা ও অপমান আর কী হতে পারে! শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন।
আরটিভি/একে-টি