রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ সহযোগিতা কমে যাওয়ায় সংকট বাড়ছে
রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ কমে যাওয়ায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে মানবিক ত্রাণ কর্মসূচি সংকুচিত হয়ে আসতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে কয়েকটি আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা। খবর বিবিসি বাংলার।
চলতি বছরের জন্য জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য ৯২০ মিলিয়ন ডলার সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। এই সাহায্যের বড় অংশ খরচ হবে রোহিঙ্গাদের খাবারের জন্য। কিন্তু এই অর্থ পাওয়া যাবে কিনা সেটি নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।
কারণ গত বছর প্রতিশ্রুত সাহায্যের সব অর্থ পাওয়া যায়নি। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, এ পর্যন্ত যে পরিমাণ মানবিক সহায়তা পাওয়া গেছে, সেটির ভিত্তিতেই তারা কাজ করছেন। তবে এর থেকে বেশি অর্থ প্রয়োজন।
কক্সবাজার শহরজুড়ে গত দুই বছরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার অফিস গড়ে উঠেছে। এদের সবাই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশে কর্মরত প্রায় সব আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার অফিস আছে শহরটিতে। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার অফিস আছে।
বাংলাদেশ সরকারের হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ১৫০টি সংস্থা রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য নিয়ে কাজ করছে। দুই বছর আগে, অর্থাৎ রোহিঙ্গা সংকট শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক সাহায্য যেভাবে এসেছে, এখন সেটি কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
বেসরকারি সংস্থাগুলো মনে করছে, রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি কমে গেলে সেটি ত্রাণ কাজকে বাধাগ্রস্ত করবে। এ ধরনের পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি করতে পারে। যার প্রভাব পড়বে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর।
কক্সবাজারে কর্মরত ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির (আইএফআরসি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মারিয়া ল্যারিও বিবিসি বাংলাকে বলেন, দাতাদের কাছ থেকে আগ্রহ কমে যাবার বিষয়টি লক্ষ্য করছি। এজন্য আমরা মানবিক কূটনীতি চালিয়ে যেতে চাই।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন ভুলে না যায় সেটিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রোহিঙ্গা সংকট অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হবে না। এটি মোকাবেলার জন্য আরও অর্থ সহযোগিতা প্রয়োজন।
---------------------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : বাংলাদেশের লুতফি চৌধুরী এসকিমি দক্ষিণ এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক
---------------------------------------------------------------------
অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্ব সেভাবে থাকছে না। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য পায়। এসব দেশের কাছে রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্ব কমলে অর্থ সহায়তাও কমে যেতে পারে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য একদিকে বৈদেশিক সাহায্য কমছে, অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে নিজেদের তহবিল থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা শরণার্থীদের জন্য খরচ করেছে।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথমদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেভাবে সাহায্য নিয়ে অগ্রসর হয়েছিলে, সেটির মাত্রা কমে যাচ্ছে। আগামীতে আরও কমবে। এখন তারা খুব সুখে আছে কিন্তু তাদের সুখ খুব বেশিদিন থাকবে না
কে
মন্তব্য করুন