উঠতি বয়সীদের গ্যাং কালচারে ফায়দা লুটছে মাদক ব্যবসায়ীরা (ভিডিও)
উঠতি বয়সীরা গ্রুপ খুলে জড়িয়ে পড়ছে মাদক, সন্ত্রাস আর গ্যাং কালচারে। মাদক ব্যবসায়ী আর অসাধু নেতারা এই তরুণদের নিজ কাজে ব্যবহার করছে। বিশেষজ্ঞরা এজন্যে অভিভাবকদের উদাসীনতা, অসুস্থ পরিবেশ আর ইন্টারনেটের অপব্যবহারকে দায়ী করেন। বিপথে যাওয়া তরুণদের ফিরিয়ে আনতে সামাজিক উদ্যোগ ও সংশোধন ব্যবস্থায় উন্নয়ন দরকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের উঠতি বয়সী তরুণরা মজার ছলে নিজেদের মধ্যে যুক্ত থাকার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৈরি করছে নানা গ্রুপ। যার অনেকগুলোই ব্যবহার হচ্ছে মাদক, মারামারি, খুন খারাবিসহ অপরাধমূলক কাজে। অপর গ্রুপের সাথে রেষারেষি থেকে জড়িয়ে যাচ্ছে গ্যাং কালচারে।
রাজধানীর একটি খ্যাতিমান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ুয়া এক ছাত্র জানালেন, বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে মাদক আর অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ার কাহিনী।
তার ভাষ্য, তিন-চারদিন তারা আমাকে ২০ থেকে ৩০ পিস করে ইয়াবা খাইয়েছে। এরপর তাদের প্রতি একটা আবেগ সৃষ্টি হয়। তাই প্রায়ই তাদের সাথে দেখা করতে যেতাম। তারা আমাকে অন্য লোকের গাড়ি দেখিয়ে বলত ওই গাড়িটা নিয়ে আসতে বা চুরি করতে। তারা বলতো, গাড়িটা বিক্রি করলে এক হাজার পিস ইয়াবা পাওয়া যাবে।
মাদক ব্যবসায়ী আর পেশীশক্তির রাজনীতিতে বিশ্বাসী কোনো কোনো নেতা প্রভাব বিস্তার করে বখে যাওয়া কিশোরদের ব্যবহার করছে বলে জানান ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মশিউর রহমান।
তিনি বলেন, যারা স্থানীয় পর্যায়ে বাসস্ট্যান্ড, হোটেল ও ফুটপাত থেকে টাকা সংগ্রহ করে। তাদের কাছ থেকে এই বখে যাওয়া কিশোররা মাঝে মাঝে টাকা পায় এবং মাঝে মাঝে ওই স্থানীয় লোকেরা এদের নিয়ে দল তৈরি করে নানা ধরনের অপ্রত্যাশিত কাজ করায়। এই কিশোররাই ওই স্থানীয় লোকদের আশ্রয়ে থেকে এই ধরনের কাজ করে। আর ওই লোকেরা তাদের ক্ষমতা প্রকাশ করতে কিশোরদের ব্যবহার করে।
কিশোররা কেন অপরাধে জড়াচ্ছে- এমন প্রশ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তৌহিদুল হক মনে করেন, পরিবার ও সমাজে তরুণদের সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়ার পরিবেশে ঘাটতি আছে। ঘরের মধ্যে ঘর তৈরি হয়েছে। সবাই যে যার রুমে প্রাইভেসির নাম করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যস্ত থাকছে। একই ছাদের নিচে থেকে ওই যে দূরত্ব এবং তার মনের মধ্যে উত্তেজনামূলক আচরণ ও বিভিন্ন উচ্ছৃঙ্খল ভাবনা হচ্ছে। এই ভাবনাগুলো আমরা একজন আরেকজনেরটা উপলব্ধিই করতে পারছি না।
বিপথে যাওয়া কিশোরদের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর নীরব ভূমিকায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান আরটিভি নিউজকে বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বেড়ে ওঠার জন্য সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিতে রাষ্ট্র, সরকার, সমাজ ও পরিবারের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি।
এসএ/এসজে
মন্তব্য করুন