সৌদিতে বাংলাদেশি কিশোরী খুনের ঘটনায় রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক গ্রেপ্তার
আয় রোজগার করে নিজে ভালো থাকা এবং পরিবারকে ভালো রাখার জন্য গৃহকর্মীর ভিসায় সৌদি আরবে গিয়েছিলো কিশোরী উম্মে কুলসুম (১৪)। সম্প্রতি গৃহকর্তা আর তার ছেলের যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যায় কুলসুম। এ ঘটনায় কিশোরীকে সৌদি পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক মকবুল হোসাইন ও তার সহযোগী তারেককে ঢাকার ফকিরাপুল থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় ফকিরাপুলের মেসার্স এম এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে ওই রিক্রুটিং এজেন্সির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, সৌদি আরবে গৃহকর্তার নির্যাতনে কিশোরী উম্মে কুলসুম নিহত হওয়ার ঘটনায় তাকে সৌদিতে পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সির কার্যালয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে ওই অফিস থেকে ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এর আগে ৯ আগস্ট চাকরির আশায় সৌদি আরবে গিয়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে মারা যান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার নূরপুর গ্রামের কিশোরী উম্মে কুলসুম (১৪)। ১১ সেপ্টেম্বর রাতে কুলসুমের মরদেহ দেশে আনা হয়।
নিহতের পিতা শহিদুল ইসলাম জানান, গেলো মাসের ১৭ আগস্ট জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে তিনি তার মেয়ের লাশ ও আট মাসের বকেয়া বেতন ফেরত পেতে একটি লিখিত আবেদন করেন।
লিখিত অভিযোগ তিনি বলেন, স্থানীয় দালাল রাজ্জাক মিয়ার মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ১৭ মাস আগে মেসার্স এম এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের (আর এল নং-১১৬৬) মাধ্যমে কুলসুমকে গৃহকর্মীর কাজে সৌদি আরব পাঠানো হয়। সেখানে গৃহকর্মী হিসেবে যোগদানের পর থেকেই আমার মেয়ে কুলসুমের উপর শারীরিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করে মালিকপক্ষ।
অভিযোগে তিনি লিখেছেন, নির্যাতনের কারণে মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্যে রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরও তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। চার মাস পূর্বে সৌদি আরবে গৃহকর্তা ও তার ছেলে মিলে কুলসুমের দুই হাঁটু, কোমর ও পা ভেঙে দেয়। এর কিছুদিন পর একটি চোখ নষ্ট করে রাস্তায় ফেলে দেয়। পরে সৌদি আরবের পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সেখানকার কিং ফয়সাল হাসপাতালে ভর্তি করে। গত ৯ আগস্ট সেখানকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় কুলসুম।
নিহতের মা নাসিমা বেগম আরটিভি নিউজকে বলেন, মেয়ে মারা যাওয়ার পর একাধিকবার প্রতিকার চেয়ে নাসিরনগর থানা পুলিশের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কোনো সাড়া দেয়নি।
কেএফ/এসজে
মন্তব্য করুন