ছিনতাইকারীদের ‘গুলিতে ছিনতাইকারী’ নিহত
গাজীপুর মহানগরের এরশাদনগর এলাকায় ছিনতাইকারীদের গুলিতে কাওসার (২৫) নামে এক ছিনতাইকারী নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে এরশাদনগর এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে কাওসারকে আটক করা হয়। কিন্তু বিষয়টি টের পেয়ে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিতে কাওসার আহত হন।
পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
আরো পড়ুন:
জেএইচ
মন্তব্য করুন
এক চটপটির দোকান আর দুই রেস্তোরাঁ চালাতেই ১৫১ কোটি টাকা ঋণ!
একটি চটপটির দোকান ও দুটি রেস্তোরাঁ দেখিয়েই ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের তিনটি শাখা থেকে ১৫১ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে নওরোজ এন্টারপ্রাইজ নামে চট্টগ্রামের এক প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, বছরের পর বছর ঋণ শোধ না করায় ব্যাংকের পাওনা গিয়ে ঠেকেছে ২৩৪ কোটি টাকায়। এরপরও প্রতিষ্ঠানের মালিক নাজমি নওরোজের নাম ওঠেনি ব্যাংকের ঋণ খেলাপির তালিকায়।
জানা গেছে, সামান্য ব্যবসার বিপরীতে এত বিশাল অঙ্কের ঋণ নেওয়া সম্ভব হয়েছে স্বয়ং ব্যাংক মালিকেরই বিশেষ আগ্রহে। ঋণ পরিশোধ না করার সুবিধাটি অব্যাহত রাখতে তা খেলাপি না দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অশ্রেণিবদ্ধ (আনক্লাসিফায়েড) করে রাখে ব্যাংকের মালিকপক্ষ। সেই সুবাদেই ঋণ শোধ না করে দিব্যি বিলাসী জীবনযাপন চালিয়ে যাচ্ছেন নাজমি নওরোজ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইট অ্যান্ড ট্রিট নামের চটপটির দোকানটি চট্টগ্রামের আসকার দিঘির পাড়ে। এর পাশেই ফিউশন ইটস নামের রেস্তোরাঁটি। আর লা এরিস্টোক্রেসি নামের অপর রেস্তোরাঁটি তিনবার জায়গা বদল করে এখন নগরীর আগ্রাবাদে।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, লা এরিস্টোক্রেসি রেস্তোরাঁটির নামে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের আসকার দিঘির পাড়ের মহিলা শাখা থেকে ৭০ কোটি টাকা নিয়েছেন নাজমি নওরোজ। এই ঋণ বাবদ সুদ-আসলে বর্তমানে ১১৭ কোটি টাকা পাওনা হয়েছে ব্যাংকের। একই প্রতিষ্ঠানের নামে নগরীর প্রবর্তক মোড়ে অবস্থিত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে তিনি ঋণ নেন ৫৪ কোটি টাকা, যা সুদে-আসলে এরই মধ্যে ৯০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা হয়েছে। এর বাইরে ব্যাংকটির চকবাজার শাখা থেকে তিনি ঋণ নিয়েছেন ২৭ কোটি টাকা। তবে চকবাজার শাখা থেকে তোলা পুরো টাকাটা এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যাংকটির মালিক সাইফুল আলম মাসুদ নিয়ে নিয়েছেন বলে দাবি করছেন নাজমি নওরোজ।
আসকার দিঘির পাড়ের মহিলা শাখার মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে ২০১১ সাল থেকে লেনদেন শুরু হয় নাজমি নওরোজের। বর্তমানে এই ঋণ সুদে-আসলে ১১৭ কোটি টাকা হয়েছে। ব্যাংকের চাপাচাপিতে ২০২২ সাল থেকে এ পর্যন্ত কেবল ১ কোটি ১০ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন তিনি। তবে, এই ঋণের টাকা অশ্রেণিবদ্ধ (আনক্লাসিফায়েড) তালিকায় দেখানো হচ্ছে।
ব্যাংক সূত্র জানায়, মালিকপক্ষ চায়নি বলে নাজমি নওরোজকে ঋণ খেলাপি হিসেবে দেখানো হয়নি। তাই ঋণটিকে অশ্রেণিবদ্ধ করে রাখা হয়। অবশেষে গত আগস্ট মাসে তাকে ঋণ খেলাপি হিসেবে দেখানো হয় এবং পাওনা আদায়ে মামলা করা হয়।
ব্যাংক সূত্র জানায়, নাজমি নওরোজ ব্যাংক থেকে যে টাকা উত্তোলন করেন, বছর শেষে তা পরিশোধ না করলেও তার ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বরং ব্যাংকের টাকা ফেরত না পাওয়ায় শাস্তি হিসেবে আটকে দেওয়া হয় একাধিক কর্মকর্তার পদোন্নতি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকটির এক কর্মকর্তা বলেন, নাজমি নওরোজ ব্যাংকের কিস্তি জমা দিতেন না। কিন্তু মাঝেমধ্যে উপহার নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে আসতেন। কর্মকর্তারা এসব উপহার গ্রহণ করতে না চাইলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দিয়ে প্রচণ্ডভাবে ধমকাতেন।
এ ব্যাপারে নাজমি নওরোজের বক্তব্য, আমি যে পরিমাণ সম্পদ ব্যাংকে জামানত দিয়েছি তাতে ৪০ কোটি টাকাও পাওয়ার কথা না। যা কিছু হয়েছে, সবই মাসুদ সাহেবের ইচ্ছায় হয়েছে। আমি যে আকিজ উদ্দিনকে টাকা দিয়েছি, সেই প্রমাণ আমার কাছে আছে। ব্যাংকের নতুন পর্ষদ গত রোববার (৬ অক্টোবর) আমার সঙ্গে বসেছে। আমি তাদেরকে এসব জানিয়েছি।
তাহলে ব্যাংকের এত টাকার দেনা কে পরিশোধ করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমি নওরোজ বলেন, কেন? মাসুদ সাহেব শোধ করবেন!
ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ও তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আকিজ উদ্দিনের বিশেষ আগ্রহে সামান্য এক চটপটির দোকান ও দুই রেস্তোরাঁর নামে নাজমি নওরোজ এত বিশাল পরিমাণ অর্থ ব্যাংক থেকে তোলার সুযোগটি পান।
ওই চটপটির দোকান এবং রেস্তোরাঁ দুটি থেকে বছরে কত আয় হয়, জানতে চাইলে এড়িয়ে যান নাজমি নওরোজ। এছাড়া ব্যক্তিগত চলাফেরার গাড়ির দাম ও বিদেশে সন্তানদের লেখাপড়া সংক্রান্ত আরও কয়েকটি প্রশ্নের জবাবও একইভাবে এড়িয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের আঞ্চলিক প্রধান (উত্তর) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, নাজমি নওরোজের বিরুদ্ধে আমরা আদালতে মামলা করেছি। ঋণের টাকা আদায়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরটিভি/এসএইচএম
দেশ টিভির অনৈতিক কর্মকাণ্ডে তীব্র প্রতিবাদ আরটিভির
দেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত সংবাদ প্রচার করার প্রতিবাদ জানিয়েছে আরটিভি কর্তৃপক্ষ। সরাসরি পাঠানো প্রতিবাদ লিপিতে দেশ টিভিকে অসৎ সাংবাদিকতা পরিহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরেই দেশের বড় শিল্প গ্রুপ ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ উঠেছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুমোদন পাওয়া টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি আদালতে আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছে দেশের একটি পরিচিত শিল্প গ্রুপ।
নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশের শীর্ষস্থানীয় একাধিক শিল্পোদ্যোক্তা আরটিভিকে জানিয়েছেন, দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান নেতিবাচক সংবাদ প্রচারের হুমকি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে সরাসরি নির্দিষ্ট অংকের টাকা দাবি করেছেন।
বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করার অভিযোগে দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের মামলা চলমান রয়েছে। কানাডার টরন্টোতে নগদ ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারে (প্রায় ৩২ কোটি ১৫ লাখ টাকা) বাড়ি কেনার অভিযোগ রয়েছে আরিফের বিরুদ্ধে। দেশ টিভির এই ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে ৩৩৫ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতিসহ ১২৮ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উত্থান হওয়া আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক বিদুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সঙ্গে অর্থপাচারের সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্র হত্যার দায়ে আটক সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বান্ধবী আদালত পাড়ার মাফিয়া হিসেবে আলোচিত তৌফিকা করিমকে জুলাই বিপ্লবের আগে দেশ টিভির চেয়ারম্যান বানান আরিফ। অভিযোগ রয়েছে, দুদকের মামলা স্থগিত এবং আদালতের নির্দেশে ফ্রিজ থাকা ১৫ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সচল করার শর্তে তৌফিকা করিমকে চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হয়। এতে মধ্যস্থতা করেছেন গণহত্যার অভিযোগ ওঠা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিশেষ স্নেহভাজন দেশ টিভির বিশেষ প্রতিনিধি শামীমা আক্তার। আরটিভির চিফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোয় শামীমা আক্তারকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল।
২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৬ বার পাসপোর্ট পরিবর্তন করা আরিফ হাসানের জাল-জালিয়াতির আরও অনেক তথ্য দুদকের কাছে আছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র।
তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আরিফ হাসানের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অসমর্থিত সূত্র বলছে, আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে আঁচ করে দেশ ছেড়ে কানাডায় পালিয়েছেন তিনি।
আরটিভি/এআর
১৬ বছরে সম্পদের পাহাড় গড়া শাহরিয়ার এবার ভারত ছেড়ে রাশিয়ায়
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর তার দোসররাও ভারত পালিয়ে যায়। তারা সে দেশে এখনও আছেন। ভারতে পালিয়ে যাওয়া মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও রয়েছেন। জানা গেছে, তিনি এখন আর সে দেশে নেই।
শাহরিয়ারের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে বাঘা-চারঘাটের বাসিন্দারা বলছেন, ৫ আগস্ট খুব ভোরে তিনি নিজ বাড়ি ছেড়ে সড়কপথে গেদে সীমান্তে পৌঁছান। এরপর তিনি ভারতে প্রবেশ করেন। ভারত থেকে থাইল্যান্ড হয়ে বর্তমানে তিনি রাশিয়ায় অবস্থান করছেন।
শাহরিয়ার ২০০৮ সালে প্রথম নির্বাচন করেন। তখন তিনি ছিলেন ব্যবসায়ী। হলফনামায় ঋণগ্রস্ত ছিলেন বলে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী ১৬ বছরে অভাবনীয় উত্থান ঘটে। রীতিমতো কয়েক হাজার কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিক বনে যান শাহরিয়ার ও তার পরিবারের সদস্যরা। তার এই অস্বাভাবিক উত্থান দেখে বিস্মিত এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টরা।
নাটোরের লালপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের এক নেতার কন্যা সিলভিয়া পারভীন লেনিকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন শাহরিয়ার। প্রভাব খাটিয়ে লেনির মা রোকসানা মর্ত্তুজাকে ২০২১ সালে মেয়র বানান শাহরিয়ার। ঢাকার গুলশানে লেনিকে ৩ হাজার ৬০০ স্কয়ার ফুটের রাজকীয় একটি ফ্ল্যাট উপহার দেন। লালপুরে কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি করে দেন। এ ছাড়া গুলশানে নিজের নামে দুটি এবং ছেলের নামে একটি ফ্ল্যাট কেনেন শাহরিয়ার।
জানা গেছে, রাশিয়া, ব্রাজিল ও চীনে গড়ে তুলেছেন ৮টি পোশাক কারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। নিজের রেনেসাঁ গ্রুপের নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘দুরন্ত’ টেলিভিশন ।
আরটিভি/এআর
ওবায়দুল কাদেরের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ তিনজনের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধান চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুদক চেয়ারম্যান বরাবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুলতান মাহমুদ এ আবেদন করেছেন। দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আইনজীবী নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেন ।
আবেদনে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও তার দুই ভাই আব্দুল কাদের মির্জা ও শাহাদাত কাদের মির্জার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অনুসন্ধান করার কথা মামলার আরজি জানানো হয়েছে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারদলীয় সাবেক এমপি-মন্ত্রী ও নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান।
গত বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ‘সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে সড়ক-মহাসড়কের ব্যাপক উন্নয়ন দাবি করা হলেও সড়ক খাতে ২৯ হাজার ২৩০ থেকে ৫০ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে ১২ বছরই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী হিসেবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) দায়িত্বে ছিলেন ওবায়দুল কাদের।
আরটিভি/এআর
ফেসবুকে বেকারদের ফাঁদে ফেলত তারা
ফেসবুকে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ফাঁদে ফেলে বেকার যুবকদের জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ৯ অক্টোবর থেকে সোমবার (১৪ অক্টোবর) পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসির, আনোয়ার ওরফে তন্ময় ওরফে আকতারুজ্জামান, রোকসানা রহমান ওরফে রোকসানা, সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার, জেসমিন ওরফে জেসমিন বেগম, মোছা. লিজা ও শাহানাজ আক্তার।
খিলগাঁও থানার মামলা সূত্রে জানা যায়, বেকার যুবক ঢাকার নবাবগঞ্জের নাসির উদ্দীন। তিনি ফেসবুকে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে ৬ অক্টোবর দুপুরে সীমা ওরফে রোকসানা আক্তারের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেন। ওই দিন সন্ধ্যায় সীমার কথা মতো তিনি খিলগাঁও টেম্পোস্ট্যান্ড এলাকার ১৩৬ নম্বর দক্ষিণ গোড়ানের বাসায় যান। কিছুক্ষণ পর সীমা, আনোয়ারসহ কয়েকজন ওই বাসায় আসে। তারা মুহূর্তে নাসিরকে বিবস্ত্র করে মারধর এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সীমা নিজেকে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীর মায়ের কাছে মোবাইল ফোনে ১ লাখ টাকা চায়। বাদীর মা তখনই তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ৫ হাজার টাকা পাঠান। এর পর তারা ভুক্তভোগীর সঙ্গে থাকা দুটি স্বর্ণের আংটি, একটি মোবাইল ফোনসেট ও নগদ সাড়ে ৩২ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে চোখ বেঁধে মোটরসাইকেলে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপর ফেলে যায় আনোয়ার। এ ঘটনায় ৯ অক্টোবর মামলা দায়েরের পরপরই খিলগাঁও থেকে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার শাহানাজ আক্তার নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসিরের নামে হত্যা-চাঁদাবাজিসহ আটটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে মানুষকে প্রলুদ্ধ করতো। কেউ তাদের ফাঁদে পা দিলে তাকে জিম্মি করে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী হাতিয়ে নিতো তারা।
আরটিভি/এসএপি
অর্থপাচার ও অবৈধ আয় করেও ধরাছোঁয়ার বাইরে দেশ টিভির আরিফ হাসান
সিঙ্গাপুর-কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে শত শত কোটি টাকা পাচার ও ঋণ জালিয়াতি করেও ধরাছোঁয়ার বাইরে দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান। দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে অপরাধের তথ্য এলেও অজ্ঞাত কারণে এখনো নীরব সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। তাই আইনিভাবে শাস্তির আওতায় আনা যায়নি তাকে।
মিডিয়া মাফিয়া দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসানের টাকা পাচার, ঋণ জালিয়াতি আর অবৈধ আয়ের বিষয়টি তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক শফি উল্লাহ সম্প্রতি আরিফ হাসানের অবৈধ আয়, ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অনুসন্ধান করেছেন। অনুসন্ধানে বলা হয়, অভিযুক্ত আরিফ হাসান সংবাদ মাধ্যমের পরিচালকের আড়ালে অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করে সিঙ্গাপুর ও কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে পাচারের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেছেন।
এর মধ্যে শুধু কানাডায়ই ৫০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পাচার করা টাকায় কানাডায় গড়ে তুলেছেন বাড়ি। বাড়ি নম্বর ৮২, হলিউড অ্যাভিনিউ। এটি কানাডার এমটুএনথ্রিকেওয়ান নর্থইউয়র্ক, অনটারিওতে অবস্থিত।
অর্থপাচার তদন্তকালে দুর্নীতি দমন কমিশন ম্যানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ১৪ এর ২ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭ সংশোধিত ২০১৯ এর ১৮ বিধি অনুযায়ী অভিযুক্ত আরিফ হাসানের ১৫ ব্যাংক হিসেব অবরুদ্ধ করার আবেদন করেন। যেসব ব্যাংক হিসেবে কোটি কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধ না করে খুলে দিতে সর্ব্বোচ্চ আদালতের আবেদন করলে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি অভিযুক্ত আরিফের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চায় সুপ্রিমকোর্ট।
দুদকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত আরিফ হাসান ২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সন্দেহজনকভাবে ছয়বার তার পাসপোর্ট পরিবর্তন করেছেন।
ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এ পর্যন্ত তিনি ১২৮ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৯৮৮ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন যা তার আয়ের সঙ্গে মিল নেই।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা জানান, যে দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে ঢাকার মহাখালী ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে হাসান টেলিকমের নামে ৩৩৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করা হয়।
অবৈধ আয়ের মাধ্যমে কানাডা সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার এবং ঋণজালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ থাকলেও বিশেষ ইশারায় এখনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বাইরেই রয়েছেন আরিফ হাসান। দ্রুত সব অপরাধের অনুসন্ধান শেষ করে অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু দেশটিভিসহ সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের পাশাপাশি দেশ টিভির বিশেষ ক্ষমতাধর আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি সচেতন মহলের।
আরটিভি/এআর
এস আলমের কালো টাকা সাদা করে ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত
এস আলম গ্রুপের কালো টাকা অবৈধভাবে সাদা করার দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন এক অতিরিক্ত কমিশনারসহ তিন আয়কর কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে জারি করা আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
বরখাস্ত কর্মকর্তারা হলেন, চট্টগ্রাম কর আপিল অঞ্চলের অতিরিক্ত কর কমিশনার সাইফুল আলম, ঢাকা কর অঞ্চল-১৪ এর যুগ্ম কর কমিশনার এ কে এম শামসুজ্জামান এবং চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-২ এর সহকারী কর কমিশনার আমিনুল ইসলাম।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চট্রগ্রামের কর অঞ্চল-১ এর করদাতা এস আলম গ্রুপ। আইন উপেক্ষা করে এই গ্রুপকে সুবিধা দিয়ে আসছিলেন আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে এনবিআর। সেই ধারাবাহিকতায় তদন্ত কমিটি করা হলে তাদের প্রতিবেদনে উঠে আসে কর-কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি। ওই প্রতিবেদনের আলোকে তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
আরটিভি/এআর