পদোন্নতি পেলেন হারুন-অর-রশিদ
তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ পুলিশ সুপার (এসপি) থেকে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
রোববার (০২ মে) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ডিসি হারুনসহ সাত জন পুলিশ কর্মকর্তা পদোন্নতি পান।
তারা হলেন, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম, ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সৈয়দ নূরুল ইসলাম, ডিএমপির উপ-কমিশনার (এডমিন) মো. আনিসুর রহমান, ডিএমপির উপ-কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার।
এছাড়াও পুলিশের বিশেষ শাখা এসবির পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ রফিকুল ইসলাম।
এফএ
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা, প্রজ্ঞাপন জারি
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে সদ্য নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ আবু তালেব স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিন দুপুর ১২টার দিকে তিনি ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করবেন।
প্রজ্ঞাপন বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ১৯৭৩ সালের ৬ এর এ ক্ষমতাবলে হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে সদ্য নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো।
এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সদস্য হিসেবে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমান সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
এর আগে গতকাল সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে হাইকোর্টের দুজন বিচারপতি এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজকে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জুলাই গণহত্যার বিচারকাজ শুরু করার ব্যাপারে যা করার ছিল, তার একটা বড় ধাপ সম্পন্ন হয়েছে।
খুব শিগগিরই জুলাই গণহত্যার বিচারকাজ শুরু হয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন এ উপদেষ্টা।
আরটিভি/এসএইচএম
অভিযোগ ওঠায় সরিয়ে দেওয়া হলো বিচারপতিকে
‘দুর্নীতির’ অভিযোগ তোলায় খেপে গেলেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান। এ সময় তিনি আইনজীবীকে তুই-তোকারি করে কথা বলতে থাকেন। এতে হইচই শুরু হয় এজলাসজুড়ে। বন্ধ হয়ে যায় ওই বেঞ্চের বিচারকাজ।
এর পরই হাইকোর্ট ওই বেঞ্চটি ভেঙে নতুন করে বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। বিচারপতি কে এম হাফিজুর আলম ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করা হয়।
আইনজীবীদের দাবি, ওই বিচারপতি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তার কর্মকাণ্ড ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল ও প্রধান বিচারপতির দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমকে ব্যাহত করছেন।
জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ৭ নম্বর বেঞ্চ (মূল ভবন) ভ্যাকেশন এখতিয়ারাধীন মামলার শুনানি করে আসছে। তবে শুরু থেকেই মামলার কার্যতালিকা তৈরি ও শুনানিতে ব্যাপক অনিয়ম নিয়ে আইনজীবীর মধ্যে অসন্তোষ প্রকাশ পেয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে মামলার মেনশনের সময় আইনজীবীরা ও আইনজীবীদের পক্ষে ব্যারিস্টার আশরাফ রহমান বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিগোচরে আনেন। তিনি আদালতকে সম্মানের সঙ্গে শুরুতেই ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, মাননীয় আদালত আপনার আদালতের বেঞ্চ অফিসাররা অনিয়ম করে সকল জমা করা মামলা ঠিকমতো দৈনিক কার্যতালিকায় দেয়নি। এতে অসংখ্য আইনজীবী বঞ্চিত হয়েছেন।
এ সময় বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান আইনজীবীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। হাত উঁচিয়ে তিনি বলেন, আমি বারের নেতা ছিলাম। তোমাকে কে সাহস দিয়েছে, আমার আদালতের বিরুদ্ধে কথা বলতে। আমার এজলাস থেকে বের হও, বেয়াদব, তোকে থাপ্পড় দিয়ে পুলিশে দেবো।
তখন আদালতে অবস্থানরত আইনজীবীরা তীব্র প্রতিবাদ জানান। এক পর্যায়ে বেঞ্চের দুই বিচারপতি (বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান ও বিচারপতি কে এম হাফিজুর আলম) এজলাস ত্যাগ করেন।
ব্যারিস্টার আশরাফ রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, এই বেঞ্চের প্রিসাইডিং বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান ও বেঞ্চ অফিসারদের নামে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। যা ওই বেঞ্চের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কর্তৃক পরিলক্ষিত হয়েছে। আজ ওই বেঞ্চের কার্যতালিকায় ১-২২ নম্বর আইটেম ইতোপূর্বে একই বেঞ্চ থেকে কার্যতালিকায় থাকা অবস্থায় শুনানির সময় ফেরত দিলেও আজ আবার অজ্ঞাত কারণে কার্যতালিকায় আসে।
সবশেষ তথ্য মতে, এরইমধ্যে হাইকোর্ট বেঞ্চটি ভেঙে নতুন করে বেঞ্চ গঠন করেছেন প্রধান বিচারপতি। বিচারপতি কে এম হাফিজুর আলম ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে নতুন বেঞ্চ গঠিত হয়েছে।
আরটিভি/এএইচ
১২ বিচারপতিকে কোনো বেঞ্চ দেওয়া হবে না: সুপ্রিম কোর্ট
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে আওয়ামীপন্থী ১২ বিচারপতিকে আপাতত কোনো বেঞ্চ না দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে বিক্ষোভস্থলে গিয়ে আন্দোলনরতদের এ তথ্য জানান সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, আপাতত ১২ বিচারপতিকে কোনো বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ আগামী ২০ অক্টোবর আদালত খুললে তারা বিচারকাজে অংশ নিতে পারবেন না।
আজিজ আহমদ আরও বলেন, ২০ অক্টোবর বিচারকদের অপসারণসংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তোলা হবে। ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দেবেন।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায় আশা করি রোববার আসবে। বিচারপতিদের সেদিনই পদত্যাগ করতে হবে।
তিনি বলেন, রায়ের জন্য রোববার বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। এরমধ্যে ফ্যাসিস্ট ১২ বিচারপতিকে অপসারণ না করলে আরও কঠোর আন্দোলনের যাবো।
এর আগে, দলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টের দোসর বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে বুধবার দুপুর থেকে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে আওয়ামীপন্থী ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এই ১২ বিচারপতির বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
আরটিভি/আরএ/এসএ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে বিএনপির রিভিউ আবেদন
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আরটিভিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১টায় সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি জয়নাল আবেদীন বিস্তারিত জানাবেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। পরে প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়।
তবে গত ২৫ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ ব্যক্তি। বাকিরা হলেন— তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট শরীফ ভূঁইয়া ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন রিভিউ আবেদন করেন।
আরটিভি/একে/এসএ
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে চলা হত্যাকাণ্ডে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সকালে বিচারকাজ শুরু হয়েছে।
এই অপরাধগুলো সারা বাংলাদেশ জুড়ে সংঘটিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম এই অপরাধের আসামি যারা, তারা অসম্ভব রকমের প্রভাবশালী, তাদের গ্রেপ্তার করা না হলে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করাটা অসম্ভব কঠিন। তাদের ভয়ে সাধারণ মানুষ, এমনকি শহীদ পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে সাহসী হচ্ছেন না। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আমরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছিলাম।
এর আগে, বেলা ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে প্রবেশ করেন চেয়ারম্যানসহ তিন বিচারপতি। চেয়ারম্যান হিসেবে ট্রাইব্যুনালে রয়েছেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার। পাশাপাশি সদস্য হিসেবে আছেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রথম দিন কাজে যুক্ত হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে যোগদানপত্রে সই করেন তারা।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সংঘটিত গুম-হত্যা এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে চালানো গণহত্যার বিচার করবে এই ট্রাইব্যুন্যাল।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
আরটিভি/একে-টি
শেখ পরিবারের যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তিনি ছাড়াও পরোয়ানা জারির তালিকায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের নাম রয়েছে। এদের মধ্যে শেখ পরিবারের বেশ কয়েকজনের নামও উল্লেখ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান দমনে চলা হত্যাকাণ্ডে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এদিন সকালে বিচারকাজ শুরু হয়েছে।
শেখ হাসিনাসহ যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে তাদের ১৮ নভেম্বরের মধ্যে গ্রেপ্তার করে এই ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তাদের মধ্যে শেখ পরিবারের কয়েকজনের নাম প্রকাশ্যে এসেছে। যারা হলেন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিম, ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ও শেখ ফজলে শামস পরশ।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার তালিকায় থাকা অনেকের নাম প্রকাশ করা হয়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, এই অপরাধীদের অনেকে এখনো রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। সে কারণে তাদের সবার নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।
শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। কোন প্রক্রিয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও আন্তর্জাতিক আইনে যেসব ব্যবস্থা আছে সেই সব প্রক্রিয়া এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করেই এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে সবার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। প্রথম আবেদনে শেখ হাসিনা এবং দ্বিতীয় আবেদনে ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সবার নাম এখানে উল্লেখ করা হয়নি। আমরা ধীরে ধীরে আরও তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে বাকিদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছি তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছি। তথ্য প্রমাণ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। এই ট্রাইব্যুনালে ইতিমধ্যে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অনেকের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আরও কয়েকজনের বিচার ট্রাইব্যুনালে চলছিল।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গণহত্যার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতা, পুলিশের তৎকালীন আইজিসহ বেশ কয়েকজন সদস্য, র্যাবের তৎকালীন ডিজি, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।
আরটিভি/একে/এআর
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রিমান্ডে পল্লী বিদ্যুতের ৬ কর্মকর্তা
বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় হওয়া পৃথক দুই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) ছয়জন কর্মকর্তাকে তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন মুন্সিগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার রাজন কুমার দাস, ব্রাক্ষণবাড়িয়া নবীনগরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, কুমিল্লার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শ্রী দীপক কুমার সিংহ, মাগুরার শ্রীপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রাহাত, নেত্রকোনার সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মনির হোসেন ও সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বেলাল হোসেন।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এ ছয় কর্মকর্তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক আশিকুর রহমান দেওয়ান তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে ১৭ অক্টোবর খিলক্ষেত থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড খিলক্ষেত থানার পরিচালক প্রশাসন (আইন শাখার) আরশাদ হোসেন। মামলায় ওই ছয়জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কয়েকজন বিপথগামী কর্মকর্তা ও কর্মচারী একত্রিত হয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি পরিচয়ে পরস্পর যোগসাজশে জরুরিসেবা বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে জড়িত হয়ে এবং বিগত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালীদের মদদে নানান অযৌক্তিক দাবি দাওয়ায় ষড়যন্ত্র করে পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছেন। বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম কাজে তারা লিপ্ত আছেন। তাদের এ ধরনের কার্যকলাপ ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চরমভাবে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টার শামিল। তাদের এ সকল কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা, বোর্ডের কর্মকর্তাদদের সম্মানহানি এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অচল করে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতা তথা জনমনে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করার মাধ্যমে সরকারকে চরমভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা, যা দেশদ্রোহীতার শামিল।
আরটিভি/এসএইচএম