আরও ২৬ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন
কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২৬ এইচএসসি পরীক্ষার্থী জামিন পেয়েছেন।
শনিবার (৩ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
এর আগে, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দেশের বিভিন্ন আদালত থেকে ৭৮ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী জামিন পেয়েছে।
এদিকে, সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ও প্রাসঙ্গিক কাগজপত্রসহ জামিন আবেদন করলে তাদের জামিনে মুক্তিতে সরকার আইনি সহায়তা দেবে বলে জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য করুন
সমন পেয়ে আদালতে সেই ম্যাজিস্ট্রেটের আত্মসমর্পণ
মানহানির অভিযোগে করা মামলায় সমন পেয়ে সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদের আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সাড়ে ১০টার দিকে আদালতে হাজির হন তিনি। এ সময় তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দাখিল করেন।
এর আগে, গত ৮ অক্টোবর শহীদ আবু সাঈদসহ অন্য শহীদদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মানহানির মামলার আবেদন করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড এবং পর্যালোচনা শেষে ২৮ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৫ অক্টোবর আসামি ঊর্মি শুধু শহীদ আবু সাঈদ নয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা সত্ত্বেও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকারপ্রধান নোবেল বিজয়ী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুক লেখেন। যার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধানসম্মতভাবে গঠিত একটি সরকারপ্রধান সম্পর্কে বিষোদগার করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
গত ৬ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়।
পরে ৭ অক্টোবর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাকরিবিধি অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা যায়, তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের নসিবপুর গ্রামের মো. ইসমাইল হোসেনের মেয়ে। তার বাবা ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা শহীদ স্মৃতি কলেজের সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহ্যবাহী আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজসহ বিভিন্ন সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। তবে বর্তমানে তিনি অবসর জীবনযাপন করছেন। তার মা নাসরিন জাহান বতর্মানে হাজী কাশেম আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ মুক্তাগাছায় গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বতর্মানে তারা ময়মনসিংহ নগরীর কাশর জেল রোড এলাকায় নিজ বাসায় বসবাস করেন।
আরটিভি/এআর-টি
সুপ্রিম কোর্টে নজিরবিহীন ঘটনায় প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ
ডিম ছুড়ে মেরে বিচারপতিকে এজলাস থেকে নামানো ও জেলা আদালতে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এ-সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
এতে বলা হয়, বুধবার (২৭ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে যে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত। একইসঙ্গে দেশের জেলা আদালতগুলোতেও যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থতির সৃষ্টি হয়েছে, সে বিষয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।
সব প্রতিকূলতা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সত্ত্বেও দেশের আদালতসমূহে বিচারসেবা প্রদান অব্যাহত রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি। ভবিষ্যতে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
এজলাস কক্ষে হাইকোর্টের বিচারপতি আশরাফুল কামালের দিকে ডিম ছুড়ে মেরেছেন আইনজীবীরা। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান, ওই বেঞ্চে বিচারকাজ চলাকালে একদল আইনজীবী এজলাস কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি একজন বিচারপতি হয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এখনও ওই চিন্তাভাবনা পোষণ করলে আপনার বিচারকাজ পরিচালনার অধিকার নাই।’
একপর্যায়ে আইনজীবীদের মধ্য থেকে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারা হয়। তবে ছুড়ে মারা ডিম বিচারপতির আসনের সামনে থাকা ডেস্কে লাগে। এরপর বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম এজলাস ছেড়ে নেমে খাস কামরায় চলে যান।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায়ে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল তার পর্যবেক্ষণে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন। যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
আরটিভি/এআর-টি
ইসকন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে সরকার: হাইকোর্টকে রাষ্ট্রপক্ষ
ইসকনের এক নেতার গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষ আরও জানিয়েছে, বিষয়টি সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এ ঘটনায় এরইমধ্যে তিনটি মামলা হয়েছে। ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য জানানো হয়। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।
এ সময় সরকারের নেওয়া এমন পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেন, তারা এমন তড়িৎ পদক্ষেপে সন্তুষ্ট। তবে এ তৎপরতা জারি রাখতে হবে। কোনোভাবেই যাতে জানমালের ক্ষতি না হয় সে জন্যে সবোর্চ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে।
এর আগে ইসকন নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে মৌখিক আবেদন করেন আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষের মতামত জানতে জরুরি ভিত্তিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে আদালতে ডেকে পাঠানো হয়। পরে ইসকন সম্পর্কে পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট দাখিল করতে বলেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় এক আইনজীবী নিহতের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ইসকনের অনুসারীরা চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা শুরু করলে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ তাদের বাধা দেন। এরপর তাকে তুলে নিয়ে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম টাওয়ারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাইফুলকে কুপিয়ে আহত করে ইসকন সদস্যরা। গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুলকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা ও কবর জেয়ারত করে ফেরার পথে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চুনতি ইউনিয়নের হাজী রাস্তার মোড়ে হাসনাত ও সারজিসের গাড়িবহরের একটি প্রাইভেটকারকে চাপা দেয় একটি ট্রাক। এতে প্রাইভেটকারটির সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চাপা দেওয়া ট্রাকটি জব্দ করে থানায় রাখা হয়েছে। আটক করা হয়েছে চালককেও। আটক ট্রাকচালকের নাম মুজিবর রহমান (৪০)। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বইলর গ্রামে।
আরটিভি/এআর
ইসকন নিষিদ্ধ নিয়ে যা জানালেন হাইকোর্ট
চলমান ইসকন ইস্যুতে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। এ সময় উচ্চ আদালত বলেন, ইসকন নিষিদ্ধ হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। এ নিয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ করা উচিত হবে না।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য জানানো হয়। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।
আসাদ উদ্দিন হাইকোর্টকে বলেন, চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ সময় হাইকোর্ট জানান, তারা এমন তড়িৎ পদক্ষেপে সন্তুষ্ট। তবে এ তৎপরতা জারি রাখতে হবে। কোনোভাবেই যাতে জনগণের জানমালের ক্ষতি না হয়, সে জন্যে সবোর্চ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে।
আদালত বলেন, বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও দেশের সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে যা কখনও ভাঙবে না। রাষ্ট্রের সব নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তাই সরকারকে এ বিষয়ে তাদের তৎপরতা জারি রাখতে হবে।
ইসকন নিষিদ্ধ চাওয়া আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন বলছেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে ইসকন।
এর আগে, বুধবার ইসকন নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে মৌখিক আবেদন করেন আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন। যার প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষের মতামত জানতে জরুরি ভিত্তিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে আদালতে ডেকে পাঠানো হয়। পরে ইসকন সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দাখিল করতে বলেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে রাষ্ট্রপক্ষের এক আইনজীবী নিহতের ঘটনা ঘটে।
আরটিভি/এফএ
স্বামীর খালাসের রায় শুনে যা বললেন বাবরের স্ত্রী
বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় আজ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর এ রায়ে শুধু বিএনপি নয়, লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামানও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে ন্যায়বিচার পেয়েছি। এজন্য মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া জানাই, আলহামদুলিল্লাহ।
রোববার (১ ডিসেম্বর) মৃত্যুদণ্ড থেকে লুৎফুজ্জামান বাবরের খালাস পাওয়ার পর তিনি এ কথা বলেন।
তাহমিনা জামান আরও বলেন, এতদিন অপেক্ষা করা যে কি কষ্ট, তা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই বলতে পারবেন। আদালত ন্যায়বিচার করেছেন।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশ গ্রেনেড হামলা মামলায় আপিল করে আজ খালাস পেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ মামলার সব আসামি। বেলা ১১টার দিকে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আরটিভি/আইএম/এআর
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে যা বললেন আইনজীবী
বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামি খালাস পেয়েছেন। রোববার (১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় দেন।
এ রায়ের ফলে তারেক রহমান দেশে আসতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, তারেক রহমানকে ২১ আগস্টের মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও তার মামলা আছে। সেসব মামলার শুনানি শেষ পর্যায়ে। আমরা আশা করবো, ওই মামলায়ও একই ধরনের ফলাফল পাবো।
তিনি আরও বলেন, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনাটি ঘটেছে ২০০৪ সালে। তখন তৎকালীন সরকারের অধীনে একটি তদন্ত হয়েছিল, কিন্তু রিপোর্ট হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ৯ জুন প্রথম একটি তদন্ত রিপোর্ট সাবমিট করা হয়। সেখানে ২৮ জনকে আসামি করা হয়। ৬১ জন সাক্ষী হয়ে যাওয়ার পরে আরেকটি তদন্ত করা হয়। এই তদন্তে এসে আরও ৩০ জনকে নতুন আসামি করা হয়।
দ্বিতীয় তদন্ত করা হয় মুফতি হান্নানের দ্বিতীয় কনফেশনের ওপর ভিত্তি করে। আদালতের কাছে প্রথম প্রশ্ন মুফতি হান্নান যে দ্বিতীয় কনফেশন দিয়েছেন উপমহাদেশের ৪০০ বছরের ফৌজদারী ইতিহাসে এই ধরনের কোনো দ্বিতীয় কনফেশন হয় কিনা, হলে এরকম সাজা হয়েছে কিনা? আমরা আদালতে দেখিয়েছিলাম এই ভারতীয় উপমহাদেশে বিগত ৪০০ বছরের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে দ্বিতীয় কনফেশনের ওপর ভিত্তি করে এই ধরনের সাজা কাউকেই দেওয়া হয়নি। খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয় যে, ২২৫ জন সাক্ষী নেওয়া হয়েছে। এই ২২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে যাদের কনফেশন আছে সবাই টিএফআই সেলে (টাস্কফোর্স ইন্টিলিজেন্স সেল) ২০০, ২২০, ২৬১ দিন পর্যন্ত আসামিদের রাখা হয়েছে। ফলে তাদের কনফেশনের আইনগত কোনো মূল্য নেই।
আইনজীবী শিশির মনির আরও বলেন, যাদের টিএফআই সেলে রেখে টর্চার করা হয়েছে, তাদের একজন বলেছে আরেকজনকে দেখেছে, শুনেছে। কিন্তু কী কথা হয়েছে, কী কন্সপিরিটি (ষড়যন্ত্র) হয়েছে তার কোনো উত্তর দিতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, আজকে আদালতের সামনে দুটি মূল প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে, মুফতি হান্নানের দ্বিতীয় কনফেশনের ওপর ভিত্তি করে কোনো সাজা দেয়া যাবে কিনা। আদালত বলেছে নো। দ্বিতীয় কনফেশনের ওপর ভিত্তি করে কাউকে কোনো সাজা দেয়া যাবে না। আরেকটি হলো পরবর্তীতে যে তদন্ত হয়েছে এর মামলার আমলে গ্রহণের আদালত কোনটা হবে। এই আমলে গ্রহণ করার আদালত হয়েছে ট্রায়াল কোর্ট। আইনে আছে আমলে গ্রহণ করবে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এখন দেখা গেছে আমলি আদালত আমলে গ্রহণ না করে যা বিচারিক আদালত গ্রহণ করেছে। হাইকোর্ট বলেছেন এইটা বাংলাদেশের সকল সিদ্ধান্তের আলোকে অবৈধ হয়েছে এবং এই জন্য এই ট্রায়ালটাকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। আমি যেটা বলতে চাই সকল বিবেচনায় ২১ আগস্টে যা হয়েছে তার সঠিক বিচার হোক। কিন্তু যাকে ইচ্ছা তাকে আসামি করা যাবে না।
আরটিভি/এআর
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় / বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ বলেছেন হাইকোর্ট: শিশির মনির
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৪৯ জনকে সাজা দিয়ে যে বিচার করেছিলেন বিচারিক আদালত, সেটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ কথা জানান তিন আসামির আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেছেন, বিচারিক আদালতের বিচারটা অবৈধ বলা হয়েছে রায়ে। বিচারিক আদালতে আইনের ভিত্তিতে বিচারটা হয়নি।
মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স নাকচ করে এবং আসামিদের আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেওয়া হয়। ফলে এই মামলায় দণ্ডিত সব আসামি খালাস পেলেন।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, বিচারিক আদালতের রায়ে ৪৯ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছিল। ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সবার আপিল মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। রুল যথাযথ ঘোষণা করেছেন। সবাইকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিচারিক আদালতের বিচারটা আইনের ভিত্তিতে হয়নি। কোনো সাক্ষীর সঙ্গে কোনো সাক্ষীর বক্তব্যে মিল নেই। শোনা সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে রায় দেওয়া হয়েছিল।
শিশির মনির বলেন, তারেক রহমান, বাবরসহ সবাইকে এই মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। যাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছিল, তা নির্যাতনের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছিল। মুফতি হান্নান দুটি জবানবন্দি দিয়েছেন। দ্বিতীয় স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সাজা দেওয়ার নজির নেই। এই স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করেন তিনি। এজন্য এর আইনগত মূল্য নেই। দ্বিতীয় অভিযোগপত্র দায়রা আদালতে দাখিল করা হয়। দায়রা আদালত এটি আমলে নিয়েছেন। আইন অনুযায়ী তিনি (দায়রা আদালত) এটা করতে পারেন না। এ জন্য এই অভিযোগ আমলে নেওয়ার ভিত্তিতে যে সাজা দেওয়া হয়েছে, তাকে অবৈধ বলেছেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় ২৪ জন নিহত হন। আওয়ামী লীগের দাবি, এ হামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ঘটনায় করা মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এ ছাড়া ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
আইনজীবীরা বলেন, কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে। এটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল, নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। ডেথ রেফারেন্স এবং এসব আপিল ও আবেদনের ওপর সাধারণত একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের ওপর হাইকোর্টে গত ৩১ অক্টোবর শুনানি শুরু হয়।
আরটিভি/এসএইচএম/এআর