জামিন পেলেন ড. ইউনূস
আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করায় চাকরিচ্যুতের অভিযোগে দায়ের করা তিন মামলায় জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
আজ রোববার (৩ নভেম্বর) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাকিয়া পারভিনের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকার মুচলেকায় তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে ২৮ অক্টোবর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও খোন্দকার দিলুরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। এছাড়া বিমানবন্দরে নামার পর থেকে তাকে সাত নভেম্বর পর্যন্ত গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এসএস
মন্তব্য করুন
উপদেষ্টার সঙ্গে রাষ্ট্রপতির মিথ্যা ফোনালাপ তৈরি, যুবক গ্রেপ্তার
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে পাট ও বস্ত্র এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনের একটি মিথ্যা ও বানোয়াট ফোনালাপ তৈরি ও প্রচারের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। তার নাম নাফিস ফুয়াদ ঈশান (২২)। এই ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রোববার (২৭ অক্টোবর) ভোরে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নাফিস ফুয়াদ কোয়ালিটি টিভি নামক অনলাইনভিত্তিক একটি ইউটিউব চ্যানেলের অ্যাডমিন। একই সঙ্গে কেস টিভি নামক ফেসবুক পেজেরও অ্যাডমিন তিনি।
গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, গ্রেপ্তার নাফিস ১৬ আগস্ট নাগরিক টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত অন্তর্বর্তী সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনের সাক্ষাৎকারের অংশ বিশেষ কপি করে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট ফোনালাপ তৈরি করেন। জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করার উদ্দেশ্যে নাফিস ভিডিওটি ২৪ অক্টোবর তার পরিচালিত কোয়ালিটি টিভি নামক ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করেন।
গ্রেপ্তার নাফিস ফুয়াদ ঈশানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি তার পরিচালিত কোয়ালিটি টিভির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা এবং বানোয়াট কনটেন্ট তৈরি করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে আসছিলেন।
উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার নাফিসের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরটিভি/এআর/এসএ
আ.লীগ-জাপাসহ ১১ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ চেয়ে করা রিট প্রত্যাহার
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ ১১টি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট এবং দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়ার রিট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রিটকারীদের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচাপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্টে বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে, সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মো. হাসিবুল ইসলামের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল হক রিট দুটি করেন।
আদালতে রিটকারীদের আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, রিটকারীরা আর রিট আবেদনটি চালাতে চান না। এ কারণে হাইকোর্ট রিট আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।
দলগুলো হলো— আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ, জাতীয় পার্টি (জেপি), তরিকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এম-এল) (দিলীপ বড়ুয়া), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
এ বিষয়ে আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানানো হয় রিটে। এছাড়া ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ ও ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে অন্য একটি রিটও করেন তারা।
রিটে নির্বিচারে মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছিল। ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের পাশাপাশি ভবিষ্যতে সব ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে দলগুলোকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছিল রিটে।
এর আগে, আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। ২৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ থেকে এ বিষয়ে গেজেট জারি করা হয়। এতে সই করেন জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ এর সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
আরটিভি/এমএ
পরোয়ানাভুক্ত প্রথম আসামি হিসেবে মিরপুরের সাবেক ডিসি গ্রেপ্তার
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি মিরপুরের সাবেক ডিসি (উপকমিশনার) জসিম উদ্দিনকে রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রথম কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চত করেছেন জসিম উদ্দিনের আইনজীবী কাজী ইলিয়াসুর রহমান।
জানা যায়, জসিম উদ্দিনকে রংপুর থেকে ট্রাইব্যুনালে আনা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ১৫০ জন মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান জানান, জুলাই গণহত্যার আসামি মিরপুরের সাবেক ডিসি জসিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে।
গত ১৩ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মো. মাহবুর রহমান শেখ স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে মো. জসীম উদ্দীনকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
এর আগে, গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। আর বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ২০ জনকে হাজির করতে ২৭ অক্টোবর নির্দেশ দেন তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল। সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, আবদুর রাজ্জাক, দীপু মনি, ফারুক খানসহ ১৪ জনকে ১৮ নভেম্বর হাজিরের নির্দেশ দেন। আর ২০ নভেম্বর হাজির করতে বলা হয় সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কমকর্তা জিয়াউল আহসানসহ আরও ৬ জনকে।
এ ছাড়া সেদিন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
আরটিভি/একে
আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৪৬ জনকে গুলি করে হত্যার পর ৬ জনের লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা শহীদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে তাকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে ঢাকায় এনে শাহবাগ থানায় রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) শহীদুলকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আতংকে এতদিন গা ঢাকা দিয়েছিলেন শহীদুল। অবৈধ পথে দেশত্যাগেরও পরিকল্পনা ছিলো তার।
এদিকে ১৫ নভেম্বর পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার শুরু হবে আশা করছেন, চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই দিন বিকেলেই মরদেহের স্তূপে আরও মরদেহ তোলা এবং পরে পোড়ানোর একাধিক ভিডিও প্রকাশ্যে এলে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
আরটিভি/একে-টি
ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি
সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
আগামী সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠান সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের জারি করা এক নোটিসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, আগামী ৪ নভেম্বর বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে প্রশাসন ভবন-৪ এর দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত কনফারেন্স রুমে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, ফুলকোর্ট সভা বিচারপতিদের কথা বলার নিজস্ব ফোরাম। এতে নীতি-নির্ধারণী বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরটিভি/একে-টি
তাপসের বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে যা বলা হয়েছে
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল গান বাংলার চেয়ারম্যান কৌশিক হোসেন তাপসকে সোমবার (৪ নভেম্বর) উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ৬ নভেম্বর রিমান্ডের বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার (৪ নভেম্বর) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজজামানের আদালত এ আদেশ দেন। এ দিন আসামিকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার উপপরিদর্শক মো. মহিববুল্লাহ।
এদিকে তাপসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারের কপি থেকে জানা যায়, তিনি জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে গান-বাজনার মাধ্যমে ভূমিকা রাখেন এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী ক্যাডারদের উৎসাহ দেন। তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/২৩৬/৩০৭/১০৯/১১৪/৩৪ ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, জনাব, যথাবিহীত সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, সূত্রে উল্লেখিত মামলায় গ্রেফতারকৃত এজাহারনামীয় আসামি কৌশিক হোসেন তাপস (৪১), পিতা-দেলোয়ার হোসেন রাজা, মাতা-মেহের নিগার চঞ্চল, ঠিকানা বাসা/হোল্ডিং-১০, রোড- ৬৭, গুলশান-২, ওয়ার্ড নং-১৯, থানা-গুলশান-২, ডিএমপি ঢাকা, কর্মক্ষেত্রের ঠিকানা-৪৮ প্রণতী স্মরনী, ব্লক-জে, বারিধারা, (গান বাংলা টিভি), থানা-ভাটারা, জেলা-ঢাকা, বাংলাদেশকে আপনার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করিয়া জানাইতেছি যে, অত্র মামলার বাদী ইশতিয়াক মাহমুদ একজন ব্যবসায়ী।
গ্রেফতারকৃত আসামি একজন সংগীত শিল্পী, সে গত ১৮/০৭/২০২৪খ্রিঃ তারিখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনের বিপক্ষে থেকে গান বাজনার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী ক্যাডারদের উৎসাহ ও ছাত্র জনতার আন্দোলনকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করে।
ঘটনার দিন ১৮/০৭/২০২৪খ্রিঃ তারিখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য বাদী অন্যান্য ছাত্রজনতার সাথে একত্রিত হয়ে উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৪নং সেক্টরস্থ আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাই স্কুলের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছামাত্র উক্ত মঞ্চ হইতে ঘোষণার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী ক্যাডার এজাহারনামীয় আসামিরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ ও আর্থিক সহযোগিতায় অন্যান্য আসামিরা ব্যাপক দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টি করিয়া দেশি ও বিদেশি অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া হত্যার উদ্দেশ্যে বাদীর ওপর অতর্কিতভাবে হামলা, মারধরসহ গুলি বর্ষণ করতে থাকে।
আসামিদের ছোড়া গুলির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাদীসহ ছাত্রদের অভিভাবক ও ছাত্রজনতা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। বাদী আত্মরক্ষা জন্য ছোটা-ছুটি করতে থাকাকালীন ইং ১৮/০৭/২০২৪ তারিখ বেলা অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় এজাহারনামীয় আসামিদের ছোড়া অনেক গুলি বাদীর পেটে, পিঠে, হাতে, মাথায় লাগলে বাদী গুরুতর আহত হয়।
উপস্থিত লোকজন একত্রিত হয়ে ভ্যান যোগে বাদীকে নিয়া বিভিন্ন হাসপাতালে গেলে আসামিরা বাদীর চিকিৎসায় বাধা প্রদান করেন। বাদী প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে এভারকেয়ার হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে বাদীর পেটের গুলি বের করে চিকিৎসা গ্রহণ করে। বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সূত্রোক্ত মামলাটি রুজু হয়। ইং-০৪/১১/২০২৪ তারিখ রাত ০০.০৫ ঘটিকার সময় গান বাংলা টেলিভিশন কার্যালয় প্রগতী সরনি, ভাটারা থানা ডিএমপি ঢাকা হতে ডিবি পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। একই তারিখ রাত ০০.৫০ ঘটিকার সময় উত্তরা পূর্ব থানায় আসামিকে নিয়া হাজির হয়।
প্রাথমিক তদন্তে উক্ত আসামি অত্র মামলার ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে জানা যায়। আসামিকে জামিনে মুক্তি দিলে আইনশৃংখলার অবনতি সহ মামলার সুষ্ঠু তদন্তে ব্যাঘাতসহ আসামি দেশ ত্যাগ করার আশংকা রহিয়াছে। তদন্তে আরো জানা যায় যে, উক্ত আসামী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের কঠোর হস্তে দমন করার জন্য ক্ষমতাচ্যুত সরকারকারের নেতা কর্মীদের উস্কানী প্রদান করেছেন।
আসামির ঠিকানা অত্র থানার বাহিরে হওয়ায় নাম ঠিকানা যাচাই করার জন্য ই/এস প্রেরন করা হইতেছে। আসামিকে ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হইয়াছে। তাহার প্রদত্ত তথ্যাদি যাচাই করিয়া দেখা হইতেছে।
উল্লেখ্য যে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মৃত্যুঞ্জয় পন্ডিত মিঠুন (বিপি-৯২২০২২৬৫৯৯) জিআর-১২/২০২৩ (মুক্তিগাছা) সংক্রান্তে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য কর্মস্থলে না থানায় আমি অফিসার ইনচার্জ উত্তরা পূর্ব থানা ধৃত আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করিলাম। আসামির বিরুদ্ধে পৃথক পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করা হইতেছে।
অতএব, মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত আসামিকে জেল হাজতে আটক রাখিতে মর্জি হয়।
আরটিভি /এএ
হত্যা-গণহত্যাসহ গুমের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে ৮০ অভিযোগ
জুলাই-আগস্টে গণ-আন্দোলনকে ঘিরে হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে এখন পর্যন্ত ৮০টিরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবর জুলাই-আগস্টে গণআন্দোলন নির্মূলে পরিচালিত হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিগত ১৫ বছরে গুমের বিভিন্ন অভিযোগ এবং ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে পরিচালিত গণহত্যার এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৮০টিরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে প্রসিকিউশনে। প্রতিদিনই অভিযোগ আসছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বরাবরও অভিযোগ জমা পড়ছে।
গাজী এম এইচ তামিম আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে বিগত সরকারের শীর্ষ ব্যক্তি ও কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব-দলীয় ক্যাডারদের বিরুদ্ধে হত্যা গণহত্যার সুনির্দিষ্ট ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উল্লেখ করে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা ও বিচারের আর্জি পেশ করা হয়েছে এসব অভিযোগে।
গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে, চিফ প্রসিকিউটরসহ প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থা নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের পতন হয়।
গত জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার ও তার অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে। এ অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিব এই মোট ১৪ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আগামী ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ অক্টোবর এ আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
এ ছাড়াও ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ২০ নভেম্বর তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য রয়েছে। এ মামলায় ইতোমধ্যে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে, তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।
সূত্র: বাসস
আরটিভি/এএইচ