মেট্রোরেলে সাড়ে ৭ হাজার বর্গফুটের ক্যান্টিন ভাড়া মাত্র ১ হাজার টাকা!

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪ , ১২:৪৪ এএম


মেট্রোরেলে সাড়ে ৭ হাজার বর্গফুটের ক্যান্টিন ভাড়া মাত্র ১ হাজার টাকা!
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) উত্তরা ডিপোতে অবস্থিত ৭ হাজার ৫৮০ বর্গফুটের স্টাফ ক্যান্টিন মাসিক এক হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়েছে। নামমাত্র মূল্যে এত অল্প টাকায় ক্যান্টিন ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানান সমালোচনা।

বিজ্ঞাপন

গত ১৪ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায় এ তথ্য। 

যেখানে দেখা যায়, ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (স্টোর ও প্রকিউরমেন্ট) মো. নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে ক্যান্টিন পরিচালনার জন্য ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভাড়া হিসেবে মাসিক এক হাজার টাকা হারে এক বছরের জন্য ভ্যাট ও আয়কর ব্যতীত সর্বমোট ১২ হাজার টাকা মূল্যে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের আওতায় পরিচালনাধীন এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা ডিপোতে অবস্থিত ৭ হাজার ৫৮০ বর্গফুট স্টাফ ক্যান্টিন পরিচালনার উদ্দেশ্যে ১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে দাখিলকৃত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খন্দকার এন্টারপ্রাইজের দরপত্রটি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়েছে।

এই নোটিশ জারি করার সাত দিনের মধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে তিন বছরের জন্য চুক্তি সম্পাদন করতে সম্মত রয়েছেন মর্মে লিখিতভাবে জানানোর আহ্বান করা হয় ডিএমটিসিএলের বিজ্ঞপ্তিতে। 

এ ছাড়াও কার্য সম্পাদন জামানত হিসেবে তিন লাখ টাকা আগামী ২৮ মার্চ জমা দিতে বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (স্টোর ও প্রকিউরমেন্ট) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এটা ওপেন টেন্ডার হয়েছে। টেন্ডারের মাধ্যমে এটা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এ সব পক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। চার মাস আগের ঘটনা এখন কেন জিজ্ঞাস করছেন?

ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক আরও বলেন, এটা তো ভর্তুকির ক্যানটিন, এটা মানুষের জন্য না। এখানে বাইরের লোকের কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে শুধু স্টাফরা খাবে এবং সেটাও ভর্তুকির ভিত্তিতে খাবে। এর জন্য দরপত্র দাখিলই করে না, আগ্রহ নাই। যেহেতু ভর্তুকি দিয়ে খাওয়াতে হবে, সেটা ভাড়ার সঙ্গে সমন্বয় হবে। এখানে এক হাজার টাকার যে কথা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে এটার কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে একটা প্যাকেজ থাকবে। সেটা সাতটা বা চারটা হতে পারে। ঢাকায় আরও এমন স্টাফ ক্যান্টিন আছে, সেটা যেভাবে পরিচালিত হয়—এটাও সেভাবে হবে। সেখানে যেভাবে পরিচালিত হয়, সেখানে কতগুলো প্যাকেজ দেয়। যেমন ৫০ টাকা দিয়ে এই তিনটা তরকারি খেতে পারবে। ৬০ টাকা দিয়ে এই কটা তরকারি খেতে পারবেন। এটা ভর্তুকির ভিত্তিতে হয়ে থাকে।

এ দিকে বিজ্ঞপ্তিটি ফেসবুকে মেট্রোরেল প্যাসেঞ্জার কমিউনিটি নামে একটি গ্রুপে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে অনেকেই পক্ষে ও বিপক্ষে সমালোচনা করে নানা যুক্তি উপস্থাপন করছেন।

মো. সুজান নামের আইডি থেকে ব্যঙ্গ করে লেখা হয়, ‘মাসে এক হাজার টাকা ভাড়া, একটু বেশিই অমানবিক হয়ে গেল না?’ 

আরেকজন সমালোচনা করে বলেছেন, ‘এই যে সবে চুরি শুরু হচ্ছে। এরপর প্রতিটি স্টেশনের ফুড কর্নার এভাবে ইজারা দেওয়া হবে। তারপর ধীরে ধীরে অন্যান্য বিভাগ। ২০ বছর পর মেট্রোরেল থাকবে লসে। বিমান, রেল, ব্যাংকসহ সরকারি বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোও এইভাবে লোকসানি খাত হইছে।’

অপর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এই টেন্ডার আগেও একবার হয়েছিল তখন কোনো পক্ষ নিতে আসেনি কেননা এটা শুধুমাত্র স্টাফ ক্যান্টিন। এই স্টাফ ক্যান্টিনে খাবার খাবে শুধুমাত্র যারা ডিপোতে থাকবেন। আবার যারা ডিপোতে থাকবেন তারা সকলেই যে খাবে তা কিন্তু না। কেননা ম্যাক্সিমাম কর্মকর্তা, কর্মচারী নিজ বাসা থেকে দুপুরের লাঞ্চ নিয়ে আসেন। যারা মেট্রোরেল স্টেশনে কর্মরত তারা কিন্তু ডিপোতে এসে খেতে পারবেন না দায়িত্বের জন্য। তাই স্টাফ ক্যান্টিন যারা চালাবে এমনও হতে পারে তারা লসে থাকবে। এটা নামমাত্র মূল্যে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে চাহিদার ভিত্তিতে ভাড়াও বাড়বে।’

উল্লেখ্য, মেট্রোর ডিপোতে তিন শিফটে কাজ হয়। গড়ে ১৫০ জনের মত কর্মকর্তা-কর্মচারী ডিপোতে কাজে থাকেন। এ ছাড়া ডিপোতে কর্মীদের কর্মদক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মশালারও আয়োজন হয়ে থাকে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission