রাজধানীতে আর রঙচটা বাস চলাচল করতে পারবে না
রাজধানীতে ঈদুল ফিতরের পর কোনো রঙ উঠে যাওয়া বা রঙচটা বাস চলাচল করতে পারবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ ভবনে ‘ফিটনেসবিহীন, বায়ু দূষণকারী ও রুটপারমিটবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধকরণসংক্রান্ত সভা’য় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ছাড়া সভায় ঢাকার সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিকে নিয়ে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। তবে বাস মালিকরা কথা দিয়েছেন, এপ্রিলের মধ্যে ২০ শতাংশ বাস রঙ করা হবে। বাকিটা ধাপে ধাপে সম্পন্ন করবেন।
সভায় বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার পরিবহন মালিকদের উদ্দেশে বলেন, ঢাকার রাস্তায় আগামী ৩১ মে’র পর কোনো ধরনের রঙ ওঠা বাস চলতে দেওয়া হবে না। আমরা এর জন্য অভিযানে বের হবো। আশা করবো, মালিকরা নিজ উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন বাস উপহার দেবেন। আমরা পুরো বিষয়টি মনিটর করবো।
সভায় বিআরটিএ থেকে জানানো হয়- রাজধানীতে ৩৯টি কোম্পানির ৫২৮টি ফিটনেসবিহীন গাড়ি ছিল, এর মধ্যে ২৫৭টি ঠিক করা হয়েছে। তবে এ তালিকা পূর্ণাঙ্গ আকারে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার তাগিদ রয়েছে বিআরটিএর। আগামী ৩০ মে’র মধ্যে ঢাকার সড়কে চলাচলকারী সব বাস-মিনিবাসের তালিকা ও মালিকদের নাম বিআরটিএ-তে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, রাস্তায় যেন রঙ ওঠা গাড়ি চলতে না পারে সে বিষয়ে ঈদুল ফিতরের পরে সমিতির জোনাল অফিসগুলো থেকে গাড়িগুলোর মনিটরিং বাড়ানো হবে। ভাঙাচোরা গাড়িগুলোর মালিকদের ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে। তারপরেও কেউ সড়ক এসব বাস নামালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হবে।
তবে বাস মালিকদের দাবি, ঢাকার ৬০ শতাংশ বাস মালিকের আর্থিক সচ্ছলতা নেই যে দ্রুত সময়ের মধ্যে গাড়ি ঠিক করে রাস্তায় নামাবে। কেননা এইসব মালিকদের অধিকাংশ একটা দুইটা পুরানো বাস কিনেই মালিক হয়েছেন। এদের কেউ কেউ গাড়ির মেকানিক থেকে, কেউ আবার বাসচালক থেকে বাস মালিক হয়েছেন।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির হিসাব দেখিয়ে তারা বলেন, ঢাকার সড়কে এখন সাড়ে ৩ হাজার বাস-মিনিবাস যাত্রী পরিবহন করছে যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এখন পুরোপুরি ফিটনেস ঠিক করা পর্যন্ত যদি ১ থেকে দেড় হাজার গাড়ি যদি বসিয়ে রাখা হয় তবে নগরে গণপরিবহন সংকট তীব্র হবে। মালিকদেরও ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হবে।
এর আগে, গত রোববার (৩১ মার্চ) বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহনের কালো ধোঁয়া এবং উন্মুক্ত স্থানে নির্মাণ সামগ্রী না রাখা এবং বায়োম্যাস বর্জ্য পোড়ানো বন্ধের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছিলেন, বায়ু দূষণ রোধে ২০ বছরের বেশি পুরানো বাস রাজধানীতে চলতে দেওয়া হবে না।
মন্ত্রী নির্দেশ দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ৮ এপ্রিলের মধ্যে ঢাকা শহরে চলাচলকারী এরকম পুরনো বাসের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। আর পরিবহন মালিক সমিতি ২০ এপ্রিলের মধ্যে ২০ বছরের অধিক বয়সী বাস তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া পুরাতন যানবাহন পুরোপুরি নিয়ম মেনে স্ক্র্যাপ করতে হবে।
মন্তব্য করুন