মালিবাগ রেলগেট থেকে কমলাপুর রেললাইন যেন মৃত্যুপুরী
আসছে ট্রেন, কারও কোনো খেয়াল নেই, সবাই আপন মনে পার করছেন রেলক্রসিং। ট্রেনের গতি অনেকটাই কম। অনেকে আবার এই সুযোগে লাফিয়ে লাফিয়ে ট্রেন থেকে নামছেন। শুধু নামছেন না, নেমে এমনভাবে হাটছেন যেন বাড়ির পাশের কোনো রাস্তা। গা ঘেঁষে ট্রেন চলে যাচ্ছে, অথচ সে দিকে কোনো খেয়ালই নেই কারও। একটু পা ফসকালেই ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
ভিডিওতে যে জায়গাটা দেখছেন, এটি খিলগাঁও এলাকার রেলক্রসিং। মালিবাগ রেলগেট থেকে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছানোর আগে এ এলাকায় প্রায়ই ধীরগতি হয়ে যায় ট্রেন। সে সুযোগে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দিয়ে নেমে থাকেন অনেকেই। আর সেখানেই ঘটে বিপত্তি। এভাবে লাফিয়ে নামতে গিয়ে প্রায়ই রেল লাইনের পাশে থাকা উঁচু বালির স্তুপে পা পিছলে কাটা পড়ছেন ট্রেনে। দুর্ঘটনায় কেউ হারাচ্ছেন প্রাণ, কেউ আবার অঙ্গ হারিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন পঙ্গুত্ব। তারপরেও থামছে না চলন্ত ট্রেন এভাবে লাফিয়ে নামা। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে মাঝপথে চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে যাচ্ছেন যাত্রীরা। মূলত সময় বাঁচাতে এবং টিকেট না কাটায় টিটিদের সহায়তায় এখানেই নামছেন যাত্রীরা।
এ স্থানেই নামতে গিয়ে গত ২১ এপ্রিল দুর্ঘটনার শিকার হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। গত এক মে একই এলাকায় চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়েন এক যুবক। এরপরেও ট্রেন থেকে লাফ দেওয়ার প্রবণতা কমেনি।
এদিকে রেললাইনের সীমানাপ্রচীর না থাকা এবং ট্রেন থেকে এভাবে নামার সুযোগ দেওয়াকেই এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করছেন স্থানীয়রা। আর ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইন পারাপারের ব্যাপারে তাদের বক্তব্য, এ এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ না থাকালে এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইন পারাপারে বাধ্য হতেন না তারা।
স্থানীয়দের দাবি, রেলযাত্রা নিরাপদ করতে এভাবে মাঝপথে ট্রেন থামানো বন্ধ করতে হবে। নির্মাণ করতে হবে সীমানাপ্রচীর। রেললাইন পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ হলে কমে আসবে দুর্ঘটনা।
মন্তব্য করুন