১২ জনের কাছে ৫০০ ট্রেনের টিকিট
ট্রেনের টিকিট নিয়ে হাহাকার চলছে। এ নিয়ে উত্তরবঙ্গের যাত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ। যাত্রাপথ দীর্ঘ হওয়ায় তাদের আরামের একমাত্র বাহন হচ্ছে ট্রেন। অথচ গুটি কয়েকজন সেই টিকিট সব কিনে ফেলছে। এতে যেমন ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা ঠিক তেমনি প্রতারিত হচ্ছেন অনেকেই। আর যাত্রা পথে আরাম করতে চেষ্টা করছেন গুটি কয়েক প্রতারকরা। তবে সে চেষ্টায় গুড়ে বালি। ৫০০ টিকিটসহ তারা ধরা খেয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হাতে। যদিও এই প্রতারকদের অনেকেই এখনো আরাম করে চলছেন। তবে তা দ্রুতই শেষ করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর।
শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ের স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ তথ্য জানান তিনি।
আমরা গত রাতে অভিযান শুরু করি। এটি চলমান অভিযান ছিল। এটা দুই থেকে তিন ধাপে পরিচালনা করা হয় বলে জানান ফিরোজ কবীর। তিনি বলেন, এই ধাপে ঢাকার কমলাপুর ও আশপাশের এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালানো হয়েছে। এখানে দুই ধরনের চক্র। এক ধরনের চক্র অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হলে তা ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর দিয়ে কেটে রাখতো। পরে ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে চড়া দামে বিক্রি করে। সফট কপি পাঠিয়ে বিকাশ, বা নগদে টাকা বুঝে নেয়।
তিনি বলেন, সোহেল ও আরিফুল নামে দুটি চক্র ঠাকুরগাঁও ও ঢাকা থেকে কালোবাজারি পরিচালনা করতো। আরেক চক্রের দুইজনকে মৌচাক মোড়ের আশপাশের এলাকা থেকে আটক করি। এদের একজনের নাম মানিক ও আরেকজন বকুল।
তাদের সাঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, মানিক মূলত সোহেল নামে একজন ও ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থানকারী আবু, রায়হান ও আনিস নামে আরও একজনের সঙ্গে কালোবাজারি ব্যবসায় আসে। তাদের থেকে আগামী ১০ দিনের টিকিট পাওয়া যায়। এগুলোর হার্ড কপি ও সফট কপি রয়েছে। এরমধ্যে দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেসের টিকিট ৩ হাজার টাকা করে বিক্রি করছে।
ফিরোজ কবীর বলেন, মানিক ও বকুলের মাধ্যমে আনিস ও রায়হানকে আটক করা হয়। রায়হান একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে। সেখানে ভুয়া সিম ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অনেকগুলো টিকিট একসঙ্গে কেটে নেওয়ার দায়িত্ব সে পালন করে। এদের বড় একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। সেখানে চাহিদা ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করা হয়। আর ঢাকাতে যারা অবস্থান করছে তারাও একই কাজ করে আসছিল।
রায়হান ও আনিস টিকিট পাঠাতো সোহেল ও মানিকের কাছে। আর মানিক ও বকুল ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করতো। আমরা যে টিকিট পেয়েছি এখানে সেগুলো আগামী ১০ দিনের অরিজিনাল টিকিট।
তিনি বলেন, কমলাপুর রেলস্টেশনে বেসরকারি ট্রেনের বুকিং সহকারী করেন আরিফুল ইসলাম। তিনিও একটি চক্র চালান। বেসরকারি ট্রেনের বুকিং সহকারী হলেও তার থেকে সরকারি ট্রেনের টিকিট পাওয়া গেছে। তারা অনেক দিন ধরেই এগুলো করে আসছিলেন।
মন্তব্য করুন