রাজধানীতে বাসচাপায় মোটরসাইকেলচালক নিহত
রাজধানীতে এনা পরিবহনের বাসচাপায় আলিফ হাসান (২৫) নামের এক মোটরসাইকেলচালকের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাত পৌনে ৯টার দিকে বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের সামনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মুখে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতের বাড়ি গাইবান্ধার সদর উপজেলায়। এ ঘটনায় বাসটি জব্দ করা গেলেও চালক ও হেলপার দুজনেই পালিয়ে গেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন শিকদার জানান, আলিফ হাসান ওই এক্সপ্রেসওয়ের মুখে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় এনা পরিবহন চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে তিনি পাঠাওচালক। মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন
গুলশানে সহকর্মীর গুলিতে প্রাণ গেল পুলিশ সদস্যের
রাজধানীর গুলশানে সহকর্মীর গুলিতে মনিরুল নামে এক পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। এ সময় সাজ্জাদ হোসেন নামে এক পথচারীও গুলিবিদ্ধ হন। তিনি জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক বলে জানা গেছে।
শনিবার (৮ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে গুলশানে ঢাকাস্থ ফিলিস্তিনী দূতাবাসের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম।
তিনি জানান, কাউছার নামে এক সহকর্মীর গুলিতে নিহত হয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল।
নিজেকে প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করা হাসান আহমেদ নামে এক গণমাধ্যমকর্মী জানান, তারা ডিউটি শেষ করে অফিসের গাড়িতে ফিরছিলেন। হঠাৎ ফিলিস্তিনী দূতাবাসের সামনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পুলিশের এক সদস্যকে পড়ে থাকতে দেখেন। এতে তাদের চালক গাড়ির গতি কমাতেই পুলিশের একজন সদস্য এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন তাদের দিকে। তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময়ও বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান। তবে কি নিয়ে এমন ঘটনা, তা তাৎক্ষণিক বুঝতে পারেননি তারা।
রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, সম্ভবত মানসিক সমস্যার কারণে তাদের এক কনস্টেবল আরেক কনস্টেবলকে গুলি করেছে। এই ঘটনায় পথচারী আহত হয়েছে বলে শুনেছেন তিনি। কিন্তু কাউছার নামে ওই পুলিশ সদস্যের হাতে অস্ত্র থাকায় সামনে যেতে পারছেন না তারা।
সহকর্মীর প্রাণ কেড়ে নিয়ে আটক কনস্টেবল, যা জানালেন আইজিপি
রাজধানীর গুলশানে সহকর্মী মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আটক করা হয়েছে পুলিশ কনস্টেবল কাউসার আহমেদকে। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন কাউসার তা জানতে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
শনিবার (৮ জুন) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান আইজিপি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। এ সময় ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রাত পৌনে ১২টার দিকে বারিধারা কূটনীতিক এলাকায় অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে ঘটে হত্যাকাণ্ডটি।
আইজিপি বলেন, ‘রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে আমাদের দুজন কনস্টেবল ডিউটিরত ছিলেন। এদের মধ্যে কনস্টেবল কাউসারের গুলিতে কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে মারা যান। এ সময় জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক সাজ্জাদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। ঘটনার সময় তিনি পথচারী হিসেবে সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
গাড়িচালক সাজ্জাদ হোসেনের গায়ে তিন রাউন্ড গুলি লেগেছে জানিয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘আক্রমণকারী কনস্টেবলকে থানায় নেওয়া হয়েছে এবং তাকে নিরস্ত্র করা হয়েছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। মনিরুল ইসলামের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কিছু গুলির খোসা ও ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা তদন্ত করছি। প্রকৃত রহস্য জানাটা খুব কঠিন হবে না।’
দূতাবাস এলাকা খুবই সুরক্ষিত এলাকা। এ ধরনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলার দুর্বলতা প্রকাশ পায় কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমাদের লোক ছিল। ঘটনা যে ঘটিয়েছে সেও আমাদের লোক। আসলে ঘটনাটা কী কারণে ঘটেছে সেটা আমরা জানার চেষ্টা করছি।’
কাউসারকে কীভাবে আটক করা হয় জানতে চাইলে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘ঘটনার পর কাউসার তার অস্ত্রটা রেখে ঘটনাস্থলের আশপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। তখন তাকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়।’
কূটনীতিক এলাকায় একজন কনস্টেবলকে দিনে ১৬ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়। এই ডিউটি করার কারণে অনেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছেন কি-না, বা কাউসার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন কি-না, প্রশ্ন করা হলে আইজিপি বলেন, ‘সবগুলো বিষয়ে আমরা তদন্ত করবো।’
‘শালা নাটক করতাসে’, সহকর্মীকে হত্যার পর কনস্টেবল কাউসার
‘শালা নাটক করতাসে। এমনি রাস্তায় পড়ে আছে।’ সহকর্মী মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার পর নির্বিকারভাবে এমনটাই বলেছিলেন পুলিশ কনস্টেবল কাউসার আহমেদ।
শনিবার (৮ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশানে দূতাবাস পাড়ায় পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে গুলি করেন তার সহকর্মী কাউসার। এরপর সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে আটক হন এ পুলিশ সদস্য। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার তদন্তে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনার সময় মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ ছিলেন কনস্টেবল কাউসার। তবে, তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে জানা গেছে, মনিরুল ইসলামকে গুলি করে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের প্রধান ফটকের সামনে এসে দাঁড়ান কাউসার। তখন প্রধান ফটকে ২-৩ জন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। তারা গুলির শব্দ শুনতে পেলেও তখন ধারণা করতে পারেননি যে, কাউসার তার সহকর্মীকে গুলি করে এসেছেন। গেটে দাঁড়ানো অবস্থায় কাউসারকে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের নিরাপত্তারক্ষীরা জিজ্ঞেস করেন, মনিরুল কেন রাস্তায় পড়ে আছেন। তখন কাউসার উত্তরে বলেন, ‘শালা নাটক করতাছে। এমনি রাস্তায় পড়ে আছে।’ এ কথা বলে কনস্টেবল কাউসার দূতাবাসের বিপরীত পাশের রোডে চলে যান। এরইমধ্যে নিরাপত্তারক্ষীরা বুঝতে পারেন যে মনিরুলকে কাউসার গুলি করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, ঘটনা বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই কাউসারকে গ্রেপ্তার করেন তারা। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমরা দূতাবাসের ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ৭-৮ রাউন্ড গুলি শব্দ শুনে আমরা বাইরে আসি। বাইরে আসার পর কনস্টেবল কাউসারকে দেখি দূতাবাসের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আর একটু দূরেই পড়ে রয়েছে কনস্টেবল মনিরুল। তখন আমরা কাউসারকে জিজ্ঞেস করি, কী হয়েছে? তখন সে বলে, ‘শালা নাটক করতাছে, এমনি মাটিতে পড়ে রয়েছে’।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় এরই মধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বারিধারা এলাকায়। ঘটনাস্থল ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে মোতায়েন রাখা হয়েছে ডিবি, সোয়াটসহ পুলিশের একাধিক দল।
‘হত্যার আগের কদিন চুপচাপ ছিলেন কনস্টেবল কাউসার’
ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশার আরিফুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, কাউসার আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিলেন। পাঁচ-ছয় দিন থেকে খুব চুপচাপ ছিলেন। অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছিলেন না।
শনিবার (৮ জুন) রাত ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশানে পুলিশ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত কাউসার আলী প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি।
পুলিশ সদস্য কাউসার আলীকে গুলশান থানা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৮ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশানে দূতাবাস পাড়ায় পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে গুলি করেন তার সহকর্মী কাউসার। এরপর সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে আটক হন এ পুলিশ সদস্য। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার তদন্তে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনার সময় মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ ছিলেন কনস্টেবল কাউসার। তবে তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে জানা গেছে, মনিরুল ইসলামকে গুলি করে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের প্রধান ফটকের সামনে এসে দাঁড়ান কাউসার। তখন প্রধান ফটকে ২-৩ জন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। তারা গুলির শব্দ শুনতে পেলেও তখন ধারণা করতে পারেননি যে, কাউসার তার সহকর্মীকে গুলি করে এসেছেন। গেটে দাঁড়ানো অবস্থায় কাউসারকে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের নিরাপত্তারক্ষীরা জিজ্ঞেস করেন, মনিরুল কেন রাস্তায় পড়ে আছেন। তখন কাউসার উত্তরে বলেন, ‘শালা নাটক করতাছে। এমনি রাস্তায় পড়ে আছে।’ এ কথা বলে কনস্টেবল কাউসার দূতাবাসের বিপরীত পাশের রোডে চলে যান। এরইমধ্যে নিরাপত্তারক্ষীরা বুঝতে পারেন যে মনিরুলকে কাউসার গুলি করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, ঘটনা বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই কাউসারকে গ্রেপ্তার করেন তারা। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমরা দূতাবাসের ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ৭-৮ রাউন্ড গুলি শব্দ শুনে আমরা বাইরে আসি। বাইরে আসার পর কনস্টেবল কাউসারকে দেখি দূতাবাসের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আর একটু দূরেই পড়ে রয়েছে কনস্টেবল মনিরুল। তখন আমরা কাউসারকে জিজ্ঞেস করি, কী হয়েছে? তখন সে বলে, ‘শালা নাটক করতাছে, এমনি মাটিতে পড়ে রয়েছে’।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় এরই মধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বারিধারা এলাকায়। ঘটনাস্থল ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে মোতায়েন রাখা হয়েছে ডিবি, সোয়াটসহ পুলিশের একাধিক দল।
পুলিশ সদস্যকে হত্যা: যে বর্ণনা দিলেন ফিলিস্তিন দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মী
রাজধানীর গুলশানে মনিরুল নামে এক পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাকে হত্যা করেছে পুলিশেরই আরেক সদস্য। যা নিয়ে রীতিমতো হইচই শুরু হয়েছে।
শনিবার (৮ জুন) রাত ১২টার দিকে হঠাৎ করেই বারিধারায় অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে এমন ঘটনা ঘটে।
তবে এমন ঘটনা কীভাবে ঘটলো সে বিষয়ে ফিলিস্তিন দূতাবাসের এক নিরাপত্তাকর্মী জানান, ঘটনার সময় তারা দূতাবাসের ভিতরে ছিলেন। হঠাৎ করে ৭ থেকে ৮ রাউন্ড গুলি শব্দ শুনে বের হয়ে আসেন। বাইরে আসার পর কাউসারকে দেখেন ফিলিস্তিনি দূতাবাসের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। আর একটু দূরেই পড়ে রয়েছে মনিরুলের মরদেহ।
তিনি আরও জানান, তখন তারা কনস্টেবল কাউসারকে জিজ্ঞেস করেন কি হয়েছে? কাউসার বলেন, শালা (মনিরুল) নাটক করতেছে, এমনি মাটিতে পড়ে রয়েছে! এই কথা বলে কাউসার দূতাবাসের বিপরীত পাশের রোডে চলে যান। এরই মধ্যে সবাই বুঝে উঠে যে কাউসার মনিরুলকে গুলি করেছেন। এরপর ঘটনাস্থলে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা কাউসারকে আটক করে।
নিহত কনস্টেবল মনিরুল পুলিশের ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। গতরাতে ফিলিস্তিন দূতাবাস লাগোয়া উত্তর পাশের গার্ড রুমে তার ডিউটি ছিল। একই সময়ে ডিউটিরত ছিলেন কাউসার আহমেদ।
গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে কনস্টেবল কাউসার সহকর্মী কনস্টেবল মনিরুলকে গুলি করেছে। এতে তিনি ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। একই ঘটনায় আরও দুজন আহত হন।
রাত সোয়া ১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ফিলিস্তিন দূতাবাসের অদূরে ফুটপাত পেরিয়ে সড়কের পাশে কনস্টেবল মনিরুলের গুলিবিদ্ধ দেহ ওপড় হয়ে পড়ে আছে। তখনও তার ব্যবহৃত রাইফেলটি তার পিঠের ওপর পড়েছিল। পুরো এলাকা পুলিশের সোয়াট টিম ঘিরে রেখেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটে যান।
স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস, তরুণীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য
রাজধানীর উত্তরায় এক তরুণীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। শনিবার (৮ জুন) জানালার সঙ্গে চাদর দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই তরুণীকে পাওয়া যায়। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত ওই তরুণীর নাম চৈতী মজুমদার (২৫)। তিনি যশোরের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চিত্তরঞ্জন মজুমদারের মেয়ে। পেশায় তিনি একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। সাভারের জিরাবো এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন প্ল্যানিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে।
জানা গেছে, উত্তরা ৫নং সেক্টরের ৩নং সড়কের ৪০ নম্বর বাড়িতে চৈতী মজুমদার (২৫) ও অভিষেক দাস (৩২) স্বামী–স্ত্রী পরিচয়ে দুই মাস ধরে বসবাস করছিলেন। বাসার মালিক সরকারি প্রকৌশলী মো. শাহিদুল ইসলাম। স্বামী–স্ত্রী পরিচয়ে থাকলেও তারা প্রেমিক–প্রেমিকা ছিলেন বলে জানা যায়।
থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চৈতী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এ কারণে অভিষেককে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।
ভবনটির আশপাশের বাসিন্দারা জানান, অভিষেক ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছিলেন। তার চিৎকার শুনে দরজার তালা ভেঙে চৈতীকে জানালার সঙ্গে চাদর দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে চৈতীর বাবা চিত্তরঞ্জন মজুমদার বলেন, আমি খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার মেয়ে নাই! মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানতাম চৈতী তার বান্ধবীর সঙ্গে থাকে। কিন্তু আসলে যে অন্য ঘটনা, সেটি বুঝতে পারিনি। আমি হত্যার বিচার চাই। এটি শতভাগ পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
এ ঘটনায় তার কথিত প্রেমিক অভিষেক দাস ও তার বন্ধু সাগরকে (৩১) হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই মাহমুদা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেন, নিহতের গলা ছাড়া অন্য কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।
গুলি করে হত্যা / পাগলের বেশ ধারণ, মুখ খুলছেন না কনস্টেবল কাউসার
রাজধানীর গুলশান থানাধীন বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোন এলাকার ফিলিস্তিন দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মীদের ডিউটিবুথের সামনে ডিউটিরত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউসার আলী নামে অপর এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও মুখ খুলছেন না তিনি। পুলিশ বলছে, পাগলের বেশ ধরেছেন কনস্টেবল কাউসার। কোনো প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না।
অন্যদিকে নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে ঘাতক কনস্টেবল কাউসার আলীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কনস্টেবল কাউসারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশার আরিফুল ইসলাম সরকার বলেন, কাউসার আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিলেন। পাঁচ-ছয় দিন থেকে খুব চুপচাপ ছিলেন। অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছিলেন না। তার ব্যাচমেটদের সঙ্গে কথা বলে এসব জেনেছি।
শনিবার (৮ জুন) একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালকও। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই ঘটনায় আরেকজন পথচারী আহত হয়েছেন। তবে তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। রাত পৌনে ২টার দিকে ঘাতক কনস্টেবলকে হেফাজতে নেয় গুলশান থানা পুলিশ।
দিবাগত ২টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের লোক ছিল, ঘটনা যিনি ঘটিয়েছেন তিনিও আমাদের লোক। আসলে ঘটনাটা কী কারণে ঘটেছে সেটা আমরা জানার চেষ্টা করছি।
রোববার (৯ জুন) বেলা ১১টার দিকে গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম বলেন, রাতেই ঘাতক কনস্টেবল কাউসারকে নিরস্ত্র করে হেফাজতে নেওয়া হয়। তাকে থানা হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, কিন্তু চুপচাপ কনস্টেবল কাউসার।
ডিসি রিফাত বলেন, তিনি দীর্ঘদিন পুলিশে কর্মরত। পাগলের বেশ ধরেছেন তিনি। ঘটনা স্পর্শকাতর। ঘটনা গুরুতর। এই অপরাধের শাস্তি সম্পর্কে জানেন কনস্টেবল কাউসার। সংগত কারণে তিনি পাগলের বেশ ধরতে পারেন। মুখে কুলুপ এঁটেছেন, অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর তিনি দিচ্ছেন না।
একাধিক গুলি ছুড়ে কনস্টেবল মনিরুলকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে কী মনে হয়? ঘাতক কাউসার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বা ভারসাম্যহীন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিসি রিফাত বলেন, পাগল প্রমাণ করতে পারলে তিনি মামলায় সুবিধা পেতে পারেন। সেটা জেনে-বুঝেই হয়তো পাগলের বেশ ধরেছেন। আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তারপর বলা সম্ভব ঘটনার আসল মোটিভ।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় এরই মধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বারিধারা এলাকায়। ঘটনাস্থল ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে মোতায়েন রাখা হয়েছে ডিবি, সোয়াটসহ পুলিশের একাধিক দল।