রাজধানীতে বিজিবির টহল জোরদার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচিকে ঘিরে ফের উত্তাল রাজধানী ঢাকা। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে শুক্রবার (২ আগস্ট) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে কোটা আন্দোলনকারীদের দাবির সমর্থনে অবস্থান ও সমাবেশ হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল থেকে শিক্ষার্থী, পেশাজীবী, শিল্পী, চিকিৎসকরা গণমিছিলসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
এর মধ্যে উত্তরায় সংঘর্ষ, হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর সচিবালয়, আগারগাঁও, ডিপ্লোম্যাটিক জোন, শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর, কাকরাইল মোড়, নাইটিঙ্গেল মোড়, উত্তরা, মতিঝিল শাপলা চত্বর, সায়েন্সল্যাব, নীলক্ষেত, মোহাম্মদপুর-বসিলা এলাকায় টহল জোরদার করেছে বিজিবি। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সতর্ক অবস্থায় মোতায়েন ও টহলে থাকবে বিজিবি।
এদিকে আজ রাজধানীর শহীদ মিনার থেকে দ্রোহযাত্রায় ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে চার দফা দাবি আদায়ে আগামী শনিবার পর্যন্ত সরকারকে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। দাবি মানা না হলে ওইদিন বিকেলে গণমিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যা প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হবে।
দাবিগুলো হলো, রোববারের মধ্যে কারফিউ প্রত্যাহার, গ্রেপ্তার হওয়াদের মুক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু ও শিক্ষার্থী-জনতা হত্যার দায়ে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ।
দ্রোহযাত্রায় অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগীব নাঈম, জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সি আর আবরার, উন্নয়ন অর্থনীতি বিষয়ক গবেষক মাহা মির্জা, শিক্ষক রেহনুমা আহমেদ, আসিফ নজরুল, সামিনা লুৎফা, লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রমুখ।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল কাদের প্রেরিত এক বার্তায় শুক্রবার সারা দেশে ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ নামে নতুন কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানানো হয়। বার্তায় বলা হয়, “আপনারা জানেন আমরা আমাদের কোনো ব্যক্তি-স্বার্থের জন্য আন্দোলন করছি না। আমাদের আন্দোলন আপনার ও আপনার সন্তানের মুক্তির জন্য। কী অপরাধ ছিল আমাদের? সাংবিধানিক অধিকার চাওয়াটা কি আমাদের অপরাধ? কী অপরাধে শত শত ভাইদের হত্যা করা হলো? আমরা এর জবাব জানি না।
কিন্তু এর জবাব ও বিচার না নিয়ে আমরা আমাদের আন্দোলনকে থামাব না। জাতির এই দুর্দিনে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে শহীদ, আহত, পঙ্গু ও গ্রেপ্তার হওয়া সকলের স্মরণে শুক্রবার দেশব্যাপী ‘প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি ঘোষণা করছি।
নির্বিচারে হত্যা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শুক্রবার (২ আগস্ট) মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া, শহীদদের কবর জিয়ারত, মন্দির ও গির্জাসহ সকল উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করতে বলা হয়। একই সঙ্গে শ্রমিক, পেশাজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, বুদ্ধিজীবী, আলেম-ওলামাসহ বাংলাদেশের সব স্তরের নাগরিকদের প্রতি ঘোষিত কর্মসূচি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সফল করার আহ্বান জানানো হয়।
মন্তব্য করুন