ছাত্রলীগ নেতা ভেবে সাংবাদিককে গ্রেপ্তার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত একটি মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত এক ছাত্রলীগ নেতাকে ধরতে গিয়ে মেহেদি হাসান সাগর নামে এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার মেহেদি হাসান সাগর জাতীয় দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের আলোকচিত্রী হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়া তিনি এপি’সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার হয়েও কাজ করেন।
জানা গেছে, গত ১৫ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাস্পাস এলাকায় ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফটো সাংবাদিক মেহেদি হাসান সাগরকে। গ্রেপ্তারকালে তিনি সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের ছাদখোলা বাসযাত্রার ছবি তোলার জন্য অফিসিয়াল অ্যাসাইনমেন্টে ছিলেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলায় ১৩৪ নম্বর আসামি হচ্ছেন মুজিব হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদি হাসান সাগর। আর গ্রেপ্তার ফটোসাংবাদিক সাগর সাংবাদিকতা শুরুর আগে একই হল শাখার ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন।
দুইজনের নামই মেহেদি হাসান সাগর। তাদের ডিপার্টমেন্ট এবং সেশনও একই। কিন্তু এজহারে যার নাম আছে তার পদবি সাংগঠনিক সম্পাদক। আর যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনি তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন এবং অনেক আগে থেকেই রাজনীতি ছেড়ে ফটো সাংবাদিকতা করছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার বিশ্বজিত বড়ুয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মেহেদি হাসান সাগর নামের দুইজনই আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থী। তাদের দুজনকেই চিনি। একজন সাংবাদিক আরেকজন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।’
নিউ ইয়র্কভিত্তিক বার্তা সংস্থা এপির ঢাকা অফিসের একজন সাংবাদিক জানান, মেহেদি তাদের সঙ্গে খণ্ডকালীন (স্ট্রিংগার) হিসেবে কাজ করেন। জুলাই-আগস্টে এপির টেলিভিশনের জন্য তার কাছ থেকে ভিডিও ফুটেজ নিয়েছিলেন তারা।
ছাত্র আন্দোলনের ছবি তুলে আলোচিত ফটোসাংবাদিক জীবন আহমেদ এ ব্যাপারে তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যে ছেলেটি জুলাইয়ে ক্যামেরা হাতে ছোটাছুটি করত, আজ সেই ছেলেটা হত্যা মামলার আসামি!’
গ্রেপ্তার মেহেদির হলের একজন বন্ধু নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আন্দোলনের পুরোটা সময় ঝুঁকি নিয়ে ছবি তুলেছেন এই মেহেদি হাসান সাগর। আর হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাগরকে ক্যাম্পাসে রাম দা হাতে দেখা গেছে, যার ছবি এবং ফুটেজও রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক সাগরকে ধরিয়ে দিতে পোস্টারও করা হয়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘মেহেদির নামে শাহবাগ থানায় মামলা আছে। এখন তার প্রতিষ্ঠান যে দাবি করেছে, সেটা যাচাই-বাছাই চলছে।’
আরটিভি/এসএইচএম
মন্তব্য করুন