শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, বৈঠকের প্রস্তাবে দুই অধ্যক্ষের অসম্মতি
রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে তিন কলেজের অধ্যক্ষকে বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে তাতে অসম্মতি জানিয়েছেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহম্মদ হাবিবুর রহমান ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায়।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাত ১০টায় তিন কলেজের অধ্যক্ষকে বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম।
বৈঠকের বিষয়ে কবি নজরুলের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, গত দুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষে কারা ইন্ধন দিয়েছে এটা খুঁজে বের করতে হবে। এত দূর থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী এসে কীভাবে হামলা চালায়? তাদের অস্ত্র ও অর্থ কারা সরবরাহ করেছে? এসব বিষয় স্পষ্ট করে বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি বৈঠকে বসতে চাচ্ছি না।
তিনি বলেন, সমন্বয়ক পরিচয়ে আমাকে দুজন ফোন দিয়ে বৈঠকের কথা বলেছেন, আমি তাদের ‘না’ করে দিয়েছি। আমি তাদেরকে ঠিক মত চিনি না, জানি না; তারা কি সমাধান করবেন? সরকারের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে এর সুষ্ঠু সমাধান হোক।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম আমাকে ফোন করে রাত ১০টায় রাজধানীর রূপায়ন টাওয়ারে একটি বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেখানে কলেজের সিনিয়র শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদেরও থাকার জন্য বলেছেন। তিনি আমাকে বলছেন এ বৈঠকের মাধ্যমে চলমান সমস্যার সমাধান হতে পারে।
তিনি বলেন, কবি নজরুলের অধ্যক্ষ যেহেতু যাচ্ছেন না, তাই আমিও সেখানে যাচ্ছি না। আমার শিক্ষার্থীরাও ওইখানে যেতে রাজি না। আজকে আমাদের ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা বৈঠকে বসতে পারি না।
ডেমরার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন বৈঠকে যাচ্ছেন কি না জানতে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। এ ছাড়া বৈঠকের বিষয়ে জানতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তরিকুল ইসলামকে ফোন করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেলে মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় রোববার ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হয়। পূর্বঘোষিত সেই ‘সুপার সানডে’ কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল এবং পাশের সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার ‘মেগা মানডে’ কর্মসূচির ডাক দেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এদিন তারা ডেমরা সড়ক সংলগ্ন মোল্লা কলেজে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ঘটনায় মোল্লা কলেজে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
আরটিভি/এফএ
মন্তব্য করুন