ঢাকাশুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

নদী-খাল খননে পানি প্রবাহ বাড়লেও থেমে নেই ভাঙন  

নীলফামারী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

রোববার, ২৬ জুলাই ২০২০ , ০৯:১৮ এএম


loading/img
নীলফামারী

যুগের পর যুগ বালু ও পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে নীলফামারী জেলার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়ি তিস্তা, দেওনাই-চাড়ালকাটা-যমুনেশ্বরী, ধুম, ধাইজান, বামনডাঙ্গা, বুড়িখোড়া, নাউতারা, কলমদার, চারা, সুইসহ ১৯টি নদী। পাশাপাশি ভরাট হয়েছে ৯টি খাল।

বিজ্ঞাপন

স্থান ভেদে সমতল ভূমি থেকে এসব নদীর গভীরতা ছিল তিন থেকে চার ফুট। এতে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণে এসব নদী দু’কুল ছাপিয়ে প্লাবিত হতো বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে পানিতে তলিয়ে থেকে পচে নষ্ট হতো নদী তীরবর্তী এলাকার বিভিন্ন ফসল ও বীজতলা। হাজারো মানুষের বাড়িতে পানি উঠায় তাদের দুর্ভোগ বাড়তো।

এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে জনস্বাস্থ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্থানীয় ও পরিবেশগত উন্নয়নে নীলফামারী জেলার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১০টি নদী ও একটি খাল খনন করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ নামে মহাপরিকল্পনা’র অধীন ১ম পদক্ষেপ হিসেবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত ৬৪টি জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিগত ২০১৮-১৯অর্থ বছরে দেওনাই-চাড়ালকাটা-যমুনেশ্বেরী, ধুম, ধাইজান, বামনডাঙ্গা, বুড়িখোড়া, নাউতারা, কলমদার, চারা, সুইসহ ১০টি নদী ও পচানালা খালের মোট ২৭০ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করা হয়। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানান, তিন বছর মেয়াদী এসব নদী ও খাল খনন কাজ শেষ হলে বাড়বে সেচ সুবিধা-শস্য উৎপাদন, বর্ষা মৌসুমে ত্বরান্বিত হবে পানি নিষ্কাশন, প্রজনন বাড়বে দেশীয় প্রজাতির মাছের, সংরক্ষণ হবে জীব বৈচিত্র্য এবং নদীতে পানি ধারণ ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় বন্যার করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাবে এ অঞ্চল।

১৯টি নদী ও ৯টি খালের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১০টি নদী ও পচানালা খাল খনন কাজ শুরু করা হলেও ৯টি নদী ও ৮টি খাল খননের কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এতে চলতি বর্ষা মৌসুমে এসব নদী দুকুল ছাপিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী তীরবর্তী বসতভিটা ও ফসলী জমি। এসব নদী ও খাল খননের দাবী উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

ইতোমধ্যে চাড়ালকাটা নদীর ডোমার, জলঢাকা, বাশদহ, লক্ষীমারাই, বাজিতপাড়া, খুটামারা, যাদুরহাটসহ ১৫টি পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ভাঙনে নদী তীরবর্তী এলাকার ১৫টি পরিবারের বসতভিটা, ঘরবাড়ি আর ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় তারা আশ্রয় নিয়েছে অন্যের জমিতে। নীলফামারী সদর উপজেলার যাদুরহাটে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন চারতলা ভবন পড়েছে ভাঙনের মুখে।  

নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রথম পর্যায়ে বাদ পড়া নদী-খাল সমূহ খননের জন্য ২য় পর্যায়ে প্রস্তাবনা দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া চলমান খননের ফলে নদীর গড় গভীরতা ১৫ ফুটের বেশি হওয়ায় বেড়েছে পানি প্রবাহ। এ অঞ্চলের ভূমি সমতলের ঢাল বেশী হওয়ায় পানির গতি বেড়ে গিয়ে ভাঙছে নদী। চলতি বর্ষা মৌসুমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ভাঙনরোধে বালুর বস্তা ও বাঁশের পাইলিং করে অস্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, ইতোমধ্যে গড়ে শতকরা ৬০ ভাগ কাজ শেষ হলেও আর্থিক অগ্রগতি শতকরা ২৫ ভাগ। আগামী ২০২০-২১ অর্থ বছরের জুন মাসের মধ্যে অবশিষ্ট কাজ শেষ হবে।

আরও পড়ুন:

এসএস

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |