ঢাকাশনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মানিকগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ

সোমবার, ২৭ জুলাই ২০২০ , ০৮:০৬ পিএম


loading/img
মানিকগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মানিকগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে বন্যা কবলিত মানুষেরা।

বিজ্ঞাপন

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক ফারুক হোসেন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরিচা পয়েন্টে যমুনার পানি ৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে তা বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বানভাসিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মাসহ জেলার অভ্যন্তরীণ কালীগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীর পানিও বাড়ছে। অধিকাংশ বাড়ি-ঘর, রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, ফসলী জমি তলিয়ে নানা দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে ১ লাখ সাত হাজার ৮৫৩ জন ভিজিএফ কার্ডধারীদের দেওয়া হচ্ছে ১০ কেজি করে চাল। তবে, এখনও অনেকেই ত্রাণ সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। 

বিজ্ঞাপন

এদিকে, এবারের বন্যায় ৩০ হাজার ৫১৭ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে কমপক্ষে ১ লাখ ১৯ হাজার ২৫৬ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। 

মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে (১-১০ জুলাই) চার হাজার ২১৩ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৯ হাজার ৮৭৬ জন কৃষক। আর, দ্বিতীয় ধাপের বন্যায় (১১ -২৬ জুলাই) আরও ২৬ হাজার ৩০৪ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এক লাখ কৃষক। 

সিংগাইর উপজেলায় ছয় হাজার ১০০ হেক্টর, দৌলতপুরে পাঁচ হাজার ৭১৭ হেক্টর, শিবালয়ে চার হাজার ৫১১ হেক্টর, ঘিওরে চার হাজার ৩২ হেক্টর, হরিরামপুরে তিন হাজার ৮২৬ হেক্টর, মানিকগঞ্জ সদরে তিন হাজার ৫৪২ হেক্টর এবং সাটুরিয়া উপজেলায় দুই হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। 

বিজ্ঞাপন

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের সোলায়মান খান জানান, তিনি ৩৩ শতাংশ জমিতে পেঁপে, ৫২ শতাংশ জমিতে কাঁচা কলা এবং ৪০ শতাংশ জমিতে মাষকলাই আবাদ করেছিলেন। কিন্তু, দু দফায় বন্যার পানিতে সবই তলিয়ে গেছে। এতে আমার দেড় লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।  

হরিরামপুর উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামের কৃষক সোরহাব মিয়া বলেন, তিনি সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তুর বন্যার পানিতে তলিয়ে গাছসহ ধান পচে গেছে। ’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান আলী বিশ্বাস বলে, দু দফায় বন্যায় জেলায় ২৫ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমির বোনা আমন, দুই হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৮৫৭ হেক্টর জমির আউশ, এক হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমির সবজি, ১০৮ হেক্টর জমির রোপা আমনের বীজতলাসহ কিছু তিল এবং ভুট্টা পানিতে তলিয়ে কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি বলেন নিয়মিত বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হচ্ছে। জমি থেকে পানি নেমে যাওয়ার পর চাষের সময় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সার এবং বীজ সহায়তা দেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি। 

এজে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |