মৃত প্রেমিক ফিরেছে, তবে এরই মধ্যে দেড় বছর কারাভোগ করলো প্রেমিকা
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় প্রেমিককে হত্যা করা মামলায় প্রেমিকা গার্মেন্টসকর্মী তাসলিমা দেড় বছর ধরে কারা ভোগ করছেন। অন্যদিকে নিখোঁজের দুই বছর পর মৃত ব্যক্তি আদালতে হাজির হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ছেলে নিখোঁজের দুই বছর পর ছেলেকে অপহরণ গুম করা হয়েছে বলে মামলা করেছিলেন বাবা আবুল কালাম। এ মামলায় ছেলে মামুনের প্রেমিকা তাসলিমাসহ ছয়জনকে আসামী করা হয়। পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেয়। রিমান্ড শেষে আদালতে এক আসামিকে প্রেরণ করার সময়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান উল্লেখ করেন, তদন্তকালে জানা গেছে আসামিরা মামুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। শীতলক্ষ্যা নদীতে মরদেহ ফেলে দেয়া হয়।
তবে বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আদালতে জীবিত হাজির হয় মামুন। এসময় বাদী ও বিবাদী পক্ষের লোকজনের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়।
মামুন আদালতকে জানান, বাবা মায়ের সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে চলে যান তিনি। তাকে কেউ অপহরণ করেনি। মামলা করেছেন আমার বাবা।
মামলার এজাহারে চাঁদপুর জেলার মতলব থানাধীন শাখারীপাড়া মামুনের বাবা অভিযোগ করেন, তাসলিমার সঙ্গে তার ছেলের মামুনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের জের ধরে মামুন ২০১৪ সালের ১০ মে তাসলিমাদের ভাড়া বাসায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার লামপাড়া এলাকায় আসে। এরপর থেকে নিখোঁজ হয় মামুন।
২০১৬ সালের ৯ মে এ ঘটনায় ফতুল্লায় মডেল থানায় অপহরণ ও গুমের অভিযোগ এনে মামলা করেন আবুল কালাম। মামলায় আসামি করা হয় গার্মেন্টসকর্মী ও মামুনের প্রেমিকা তাসলিমা, তার বাবা রহমত উল্লাহ, ভাই রফিক, খালাতো ভাই সাগর, সোহেল ও ছাত্তার মোল্লাকে। এ মামলায় তাসলিমা দেড় বছর কারাভোগ করেছেন। এছাড়া তার বাবা, ভাইসহ অন্য স্বজনরাও বিভিন্ন মেয়াদে জেল হাজতে ছিলেন।
পুলিশ ও সিআইডি তদন্ত করে চার্জশিটে এ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে। পুলিশের তদন্তে এক সাক্ষীর বরাত দিয়ে মামুনকে হত্যা করে মরদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তবে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া পর সিআইডির তদন্তে শুধু অপহরণের বিষয়ে উল্লেখ করে চার্জশিট দাখিল করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমদাদ হোসেন সোহেল জানিয়েছেন, মামলার বিষয়ে সঠিক তদন্ত না করেই ৬ জনকে আসামি করে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, তাসলিমাদের মতবল শাখারীপাড়া এলাকার বাড়িটি কিনতে চেয়েছিল মামুনের বাবা। কিন্তু তাসলিমার বাবা বিক্রি করতে রাজি না হওয়াতেই শক্রটা শুরু হয়।
তিনি দাবি করেন, তাসলিমাকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নির্যাতন করে জবানবন্দি নেয়ার চেষ্টা করেছেন। সেই সঙ্গে কোনও রকম তদন্ত রিপোর্ট না দিয়েই আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ কারার প্রক্রিয়াধীন ছিল। এরই মধ্যে ভিকটিম, বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হন।
আইনজীবী আরও জানান, অপহরণ না হয়েও অপহরণের মামলা দেয়ার কারণে বাদী পক্ষের শাস্তির দাবী জানিয়েছি। এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা কোনও তদন্ত না করেই মামলা করেছে সেই বিষয়ে আদালতকে অবগত করেছি।
আরও পড়ুন
জিএম/এসএস
মন্তব্য করুন