সারাদিন ঘুরে গাছের নিচে বসে প্রেমিক-প্রেমিকার বিষপান
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডুবা ইউনিয়নের পদ্মাসেতু এলাকায় প্রেমিক-প্রেমিকা আত্মহত্যার উদ্দেশে একসঙ্গে বিষপান করে তারা।
দুজনকে একসঙ্গে পড়ে থাকতে দেখে আশপাশের লোকজন ধীর করলে স্থানীয় পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করে।
জানা যায়, দুই পরিবারের লোকজন সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় প্রেমিক-প্রেমিকা বিষপান করেছেন। শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের পদ্মাসেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষপানে প্রেমিকার মৃত্যু হয়েছে। প্রেমিক অসুস্থ হয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে জাজিরা থানা ও পদ্মা সেতু প্রজেক্ট চায়না ক্যাম্পের পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রুবেলের বন্ধু গোপালঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার গৌতম বাড়ৈ ও মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শশিকর গ্রামের মৃত তুরিপদ বাড়ৈর ছেলে বাবুল লাল বাড়ৈকে আটক করেছে পুলিশ।
মৃত প্রেমিকা আজিজা আক্তার (১৮) জাজিরা উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নের ছোবাহানন্দি মাদবরেরকান্দি গ্রামের আয়নাল মোল্লার মেয়ে ও বিকেনগর বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। প্রেমিক রুবেল বাগচি (২০) গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার নইয়ারবাড়ি গ্রামের নিখিল বাগচির ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রেমিক রুবেল বাগচি কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। ফেব্রুয়ারি মাসে রুবেল জাজিরা উপজেলার বিকেনগর ছোবাহানন্দি মাদবরেরকান্দি গ্রামের আয়নাল মোল্লার বাড়িতে কাঠমিস্ত্রির কাজ করতে আসেন। পরে আয়নাল মোল্লার মেয়ে আজিজার সঙ্গে রুবেল বাগচির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
আগস্ট মাসে উভয় পরিবারের লোকজন তাদের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জেনে যায়। ছেলে হিন্দু ও মেয়ে মুসলিম হওয়ায় পরিবার তাদের মেনে নেয়নি। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে রুবেল মোক্তারপুর থেকে বিকেনগর ইউনিয়নের ছোবাহানন্দি মাদবরেরকান্দি গ্রামে আজিজার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। পরে সারাদিন ঘুরে রাতে পদ্মা সেতু প্রজেক্ট এলাকার একটি গাছের নিচে বসে রুবেল-আজিজা বিষপান করেন।
প্রেমিক রুবেল বাগচি বলেন, আজিজার সঙ্গে আমার আট মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক। কিন্তু পরিবার আমাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। তাই আমরা একসঙ্গে বিষপান করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছি। আমিতো বাঁচতে চাইনি, ও মরে গেল আমি কেন বেঁচে আছি?
জাজিরা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মিন্টু মণ্ডল বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে রুবেল বাগচিকে অজ্ঞান ও আজিজা আক্তারকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে রুবেলকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজিজার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তবে জাজিরা থানায় এখনও কোনও অভিযোগ আসেনি। ঘটনার তদন্ত চলছে।
জেবি
মন্তব্য করুন