• ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

‘নোয়াখালীর ঘটনার জন্য থানার ওসিই দায়ী’

আরটিভি নিউজ

  ০৬ অক্টোবর ২০২০, ১০:২০
OCE responsible for Noakhali incident
নোয়াখালীর ঘটনার গ্রেপ্তার ৪ আসামি

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তবে ঘটনার একমাস পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও দেখে উদ্যোগী হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ এমনকি এই ঘটনার জন্য থানার ওসিকেই দায়ী করেছেন সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তা। খবর ডয়েচে ভেলে।

গত ২ সেপ্টেম্বরের ঘটনা হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতনের ভিডিওটি ভাইরাল হয় গত শনি ও রোববারের দিকে৷ এরপরই বর্বরোচিত ঘটনাটি জানতে পারে পুলিশ৷ তাও বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ জানতে পারেনি, কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি। নোয়াখালী জেলার এসপির নজরে এলে তিনি দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন এবং তারপর তৎপর হয় পুলিশ৷

এ ঘটনায় নারী নির্যাতনের ও আরেকটি পর্নোগ্রাফি আইনে দুটি মামলায় ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে৷ ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- রহমত উল্যা, আবদুর রহিম, ঘটনার মূলহোতা দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার, মামলার প্রধান আসামি বাদল, একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে সোহাগ মেম্বার ও একই ইউনিয়নের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের লোকমান মিয়ার ছেলে সাজু (২১)।

স্থানীয় ঘটনা একমাসেও কেন তারা জানতে পারলেন না- এই প্রশ্নের জবাবে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমাদের কেউ জানায়নি৷ কেউ অভিযোগও করেনি৷ ফলে আমরা জানতে পারিনি৷ ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল হলে আমরা জানতে পারি৷’

ওসির এই জবাবটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন পুলিশের সাবেক এআইজি এবং ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক প্রধান সৈয়দ বজলুল করিম৷ তিন বলেন, ‘কেউ জানাবে সেজন্য পুলিশের বসে থাকার সুযোগ নেই৷ অনেক সময় প্রভাবশালীদের কারণে অসহায় মানুষ মুখ খোলে না৷ কিন্তু পুলিশের তো তথ্য সংগ্রহের নিজস্ব চেইন থাকে৷ গ্রামের চৌকিদারও তাদের তথ্য দিতে বাধ্য৷ আর এখন থানা পর্যায় পর্যন্ত গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করে৷’

তিনি বলেন, ‘এর জন্য ওই থানার ওসি দায়ী৷ হয় তিনি জেনেও ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য গোপন করেছেন অথবা তিনি থানায় কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে কাটান৷ তার দায়িত্ববোধ বলে কিছু নেই৷’

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে এক মাস আগে এই মধ্যযুগীয় বর্বরতার ঘটনা ঘটে নির্যাতিতার নিজ ঘরে৷ দুর্বৃত্তরা নারীর ঘরে ঢুকে তাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে৷ তিনি তাদের পা ধরে ‘বাবা’ডেকেও রেহাই পাননি৷ নির্যাতকরা নির্যাতনের ঘটনা মোবাইল ফোনের ক্যামেরায়ও ধারণ করে উল্লাস প্রকাশ করে৷

আরও পড়ুনঃ

গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন: ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার আরও ২

মেয়ের সন্ধান জানতে চাওয়ায় বাবাকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল

হিলিতে দুই ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিককে জেল-জরিমানা

ঘটনার একমাস পর ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে পুলিশের নড়েচড়ে বসা এবং শুরুতেই ভুক্তভোগীর পরিবারকে জড়ানোর চেষ্টাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না মানবাধিকার কর্মীরা৷ তারা মনে করেন, আসলে এটা অপরাধীদের সাথে পুলিশের যোগাযোগ থাকার কারণেও ঘটনাটি এতদিন চাপা থাকতে পারে৷
মানবাধিকারকর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শিপা হাফিজ বলেন, ‘২০১৫ সালে শিশু রাজন হত্যার ঘটনায়ও আগে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷ ফেসবুকে আসার পর তারা তৎপর হয়৷ তারা আগে জানলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷ পুলিশ একটি অকার্যকর এবং রাজনৈতিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে৷ যাদের ক্ষমতা আছে, প্রভাব আছে তাদের পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছে৷ সাধারণ মানুষের জন্য পুলিশ নয়৷ রাস্তায় ১০টা ধর্ষণ হলেও তারা ফিরে তাকাবে না৷ আমাদের মন্ত্রীরা, জনপ্রতিনিধিদের কেউ কি এখন পর্যন্ত বলেছেন প্রতিদিন ধর্ষণ হচ্ছে, আমরা লজ্জিত?’

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক প্রধান সৈয়দ বজলুল করিম বলেন, ‘পুলিশ তার দায়িত্ব থেকে অনেকটাই সরে যাচ্ছে৷ তারা মানুষের জন্য কাজ না করে ক্ষমতার দিকে তাকিয়ে থাকে। যার ফল এই ভয়াবহ পরিস্থিতি৷’
পি

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কোম্পানীগঞ্জে ট্রাকের চাপায় শিশুর মৃত্যু
নিখোঁজের ১০ দিন পর খালে মিলল একজনের মরদেহ
বিদেশ যাওয়া হলো না কলেজছাত্রের, মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মৃত্যু
এক শিশুর দায়ের আঘাতে আরেক শিশুর মৃত্যু