প্রেমিকের বউ হতে ৩ সন্তানকে বিষ খাওয়ালেন মা!
হবিগঞ্জে পরকীয়া প্রেমের টানে ৩ শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করে পাষণ্ড মা। ভাগ্যক্রমে দুই সন্তান বেঁচে গেলেও মৃত্যুর কাছে হার মানে ছোট মেয়ে সাথী আক্তার (৬)। ঘটনার এক বছর পর পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে এসব তথ্য।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম।
এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করে মা ফাহিমা খাতুন (২৮)। তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার চারিনাও গ্রামের টমটম চালক সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম ফাহিমার বরাত দিয়ে আরও জানান, আদালতকে ফাহিমা জানায় স্বামী অভাব অনটনের কারণে জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ওলিপুরে প্রাণ কোম্পানিতে চাকরি নেন তিনি। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে পাশের বাড়ির বিত্তশালী আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তার। তাদের এ অবৈধ সম্পর্ককে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে তারা বুঝতে পারে ‘পথের কাঁটা’ ৩ শিশু সন্তান। তাই আক্তার ও ফাহিমা মিলে ৩ সন্তানকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
আরও পড়ুন...
শ্যাম্পু কিনতে যাওয়ার কথা বলে ৯তলা থেকে লাফ তরুণীর
বন্ধুদের নিয়ে ধর্ষণের পরেই বাচ্চা নষ্টের ওষুধ সেবন করাতো প্রেমিক
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর পরকীয়া প্রেমিক আক্তার বিষ কিনে ফাহিমাকে দেয়। পরের দিন ১৮ অক্টোবর দুপুরে ফাহিমা জুসের সাথে বিষ মিশিয়ে তিন শিশু সন্তানকে খাইয়ে দেয়। বিষক্রিয়া তারা ছটফট করতে থাকলে ওই দিন সন্ধ্যায় তাদেরকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে এলে ছোট সন্তান সাথী আক্তার (৬) মারা যায়।
অপর দুই শিশু সন্তান তোফাজ্জল ইসলাম (১০) ও রবিউল ইসলামকে (৭) দ্রুত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সৌভাগ্যক্রমে তারা বেঁচে যায়। এরপর সকলেই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকেন। ঘটনার কিছুদিন যাবার পর আক্তার হোসেন ও ফাহিমার প্রেমের সম্পর্কটি এলাকায় প্রকাশ হতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়। এতে ফাহিমার স্বামীর সন্দেহ বাড়তে থাকে এবং সে নিশ্চিত হয় ফাহিমা ও আক্তার মিলিতভাবেই তার শিশু সন্তানকে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে বিষপানের মূলরহস্য উদঘাটন করেন। গত ২৯ নভেম্বর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফাহিমাকে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনা স্বীকার করে। ১ ডিসেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
জিএম/জিএ
মন্তব্য করুন