ঢাকার নবাবগঞ্জে দশ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন মঙ্গল মণ্ডল (৬৮) নামের এক ব্যবসায়ী। গত ৫ মার্চ সন্ধ্যা থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। এই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী গীতা রাণী মণ্ডল বাদী হয়ে ৯ মার্চ নবাবগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। তবে পুলিশ এখনও তার সন্ধান পায়নি।
ব্যবসায়ী মঙ্গল মণ্ডল উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের হরকেশর মণ্ডলের ছেলে। ছোট গোল্লায় তার ‘রনি ট্রেডার্স’নামে রড ও সিমেন্টের দোকান রয়েছে তার।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ মার্চ শুক্রবার ব্যবসায়িক কাজের কথা বলে বাসা থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে বের হন মঙ্গল মণ্ডল। তিনি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয় চৌকিদার রঞ্জিতের সঙ্গে গোবিন্দপুর ব্রিজের ঢালে বসা ছিলেন। এসময় দুজন অপরিচিত যুবক সিমেন্ট কেনার কথা বলে তার সঙ্গে দেখা করেন। সন্ধ্যায় ওই দুই যুবক ও তিনি গোবিন্দপুর ব্রিজের ঢালে এক দোকানে বসে চা খেয়ে সেখান থেকে চলে যান। ওইদিনই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সবশেষ মঙ্গল মণ্ডলের সঙ্গে তার স্ত্রীর কথা হয়। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে মঙ্গল মণ্ডলের মুঠোফোন থেকে তার স্ত্রীর নম্বরে সাড়ে ৮টার দিকে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করেন দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় রাতের দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে নবাবগঞ্জ থানায় জিডি করা হয়। পরের দিন সন্ধ্যায় আবারও মঙ্গল মণ্ডলের নম্বর থেকে ফোন দিয়ে ২০ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার দাবি করেন অপহরণকারী। এরপরও আরেকবার টাকার জন্য ফোন দেয় অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় ৯ মার্চ থানায় মামলা নেন পুলিশ।
নিখোঁজ ব্যবসায়ীর স্ত্রী গীতা রাণী মণ্ডল জানান, সবশেষ তিনদিন আগে অপহরণকরীরা ফোন দিয়ে টাকা দাবি করেন। তিনি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন তাও জানেন না তারা। ব্যবসায়ীর কোন খোঁজ না পেয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।
তিনি আরও জানান, তার স্বামীর সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। কি কারণে এ রকম ঘটনা ঘটেছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তিনি স্বামীকে ফেরত চান।
ব্যবসায়ীর ছেলে হরেন মণ্ডল বলেন, পুলিশ ও র্যা ব যৌথভাবে তার বাবাকে উদ্ধারে কাজ করছে। অপহরণকারীরা জানিয়েছেন, কেউ তাদের সন্ধান পাবে না। বাবাকে বাঁচাতে হলে অপহরণকারীদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে হবে। অপহরণকারী ফোনে হুমকি দিয়ে বলেন, প্রশাসনের আশ্রয় নিস, প্রশাসনের আশ্রয় নিয়াই থাক? মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং কর?’ এভাবে ওরা হুমকি দিয়েছে।
ব্যবসায়ী মঙ্গল মণ্ডলের অপহরণের ঘটনায় এলাকাবাসী অবাক।
তারা জানান, মঙ্গল মণ্ডল এলাকায় মণ্ডল মাঝি হিসেবে পরিচিত। অত্যন্ত সহজ সরল ও সৎ একজন মানুষ। আর্থিক অবস্থায়ও খুব বেশি ভালো না। তিনি অপহরণ হতে পারেন বা তার শত্রু আছে এমন ভাবতেও পারছে না এলাকাবাসী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নবাবগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পুলিশ ব্যবসায়ী মঙ্গল মণ্ডলকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
পি