গাজীপুরের কালিয়াকৈরে পারিবারিক বিরোধের জেরে জোরপূর্বক বিষপান করিয়ে শাশুড়িকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বড় ছেলের বউ তার দুই বোন ও প্রতিবেশী সহযোগী এক বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বিকেলে উপজেলার আশাপুর মধ্যপাড়া এলাকায়।
হাসপাতালে চিকিৎসারত ওই শাশুড়ি হলেন, উপজেলার আশাপুর মধ্যপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী সূর্য্যবানু (৫০)।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার আশাপুর মধ্যপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের বড় ছেলে প্রবাসী জাফর হোসেন ও ছোট ছেলে প্রবাসী জাহিদ হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। এ বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের একাধিক অভিযোগ ও মামলা থাকার সুযোগে জাফরের স্ত্রী তাহমিনা বেগমের সাথে প্রতিবেশী ঢালজোড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সহ-সভাপতি আরিফ মণ্ডলের পরকীয়ার সম্পর্ক বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বিষয়টি জানতে পেরে শ্বশুর-শাশুড়ি ও ছোট ছেলের বউ বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করে। এতে ওই বিএনপি নেতা ও বড় ছেলের বউ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় তাদের ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে আসছে। এমন কি ওই নেতার অত্যাচারের ভয়ে আশপাশের লোকজনও আতঙ্কে থাকেন।
গত শুক্রবার বিকেলে ওই নেতা ছেলের বাড়ি এলে শাশুড়ি সূর্য্যবানু তাকে আর আসতে নিষেধ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নেতা, বড় ছেলের বউ, দুই শালিকা লাঠি দিয়ে শাশুড়ি সূর্য্যবানুকে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মুখ চেপে ধরে বিষ ঢেলে দেন ওই নেতা ও বড় ছেলের বউ। এ সময় ছোট ছেলের বউ রাবেয়া বেগম ফেরাতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাশুড়ি সূর্য্যবানু জানান, বড় ছেলের বউয়ের সাথে ওই বিএনপির নেতার অবৈধ সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় আমাকে জোরপূর্বক বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। এ সময় তার স্বামী আব্দুস সাত্তার জানান, এ ঘটনার পর থানায় গেলে দারগা আজিম অভিযোগ না নিয়ে উল্টো ওই নেতার পক্ষে নানা ধরনের কথা শুনিয়ে দেন।
অভিযুক্ত বড় ছেলের বউ জানান, তিনি নিজেই বিষ খেয়ে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। এছাড়া আরিফ মণ্ডলের সাথে পরকীয়ার বিষয়টিও মিথ্যা। তবে আমার স্বামী বিদেশে থাকায় তিনি আমাদের সহযোগীতা করে আসছেন।
এ বিষয়ে আরিফ মণ্ডল জানান, ওইদিন জাফরের বাড়িতে গেলে তার মা সূর্য্যবানু ক্ষিপ্ত হন। এ সময় রড নিয়ে গেলেও তাকে মারধর করা হয়নি এবং বিষও দেয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাজনীন নাহার জানান, ওই রোগী বিষ জনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এলে ওয়াস করা হয়েছে। তবে তিনি এখনও চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আজিম হোসেন জানান, ওই ঘটনার পর থানায় ওসি সারের কাছে আসলে তাদের অভিযোগ লিখে নিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু তারা আর অভিযোগ দিয়েছেন কিনা? তা জানা নেই।
এমএন/এসকে