মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারিদের পৃষ্ঠপোষক ও আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান ভূঁইয়া স্বপনের নাম উঠে আসার পর তোলপাড় শুরু হয়। এবারও সেই স্বপন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্বপনের বিরুদ্ধে আখাউড়ার আজমপুর রেলওয়ে স্টেশনের পাশে রেলওয়ের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণেরও অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালে মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারিদের পৃষ্ঠপোষক ও আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি তালিকা করে। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও জনপ্রতিনিধির নাম উঠে আসে। ওই তালিকার সূত্র ধরে কয়েকটি গণমাধ্যমে তখন সংবাদও প্রকাশিত হয়। তালিকায় আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান ভূঁইয়া স্বপনের নামও ছিল। বিষয়টি নিয়ে তখন এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়।
স্থানীয়রা জানান, আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের আমোদাবাদ গ্রামের বাসিন্দা স্বপন ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার আগে থেকেই এলাকায় মাদককারবারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার প্রশ্রয়েই এলাকায় মাদকের কারবার হতো। কিন্তু তার ক্ষমতার প্রভাবে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাননি। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রায় তিন বছর ধরে আজমপুর রেলস্টেশনের উত্তর পাশে রেলওয়ের আনুমানিক পাঁচ শতাংশ পরিমাণ জায়গা দখল করে রেখেছেন স্বপন। সেখানে মার্কেট নির্মাণ করে ভাড়াও তুলছেন তিনি।
আজমপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার সাখাওয়াত হোসেন জানান, চেয়ারম্যান স্বপনের করা মার্কেটের জায়গাটি রেলওয়ের। জায়গাটি অবৈধভাবে দখল করেছেন তিনি। মার্কেটের দোকানের ভাড়াও চেয়ারম্যানই নেন। জায়গাটি দখলমুক্ত করার জন্য ঊর্ধ্বতনদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্টেশন মাস্টার।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন (২০১৮ সাল) তালিকা প্রকাশ করেছিল, তখন তিনি এ থানায় ছিলেন না। এ জন্য তালিকার বিষয়ে তিনি জানেন না। তবে তালিকায় যাদের নাম ছিল, যদি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো দাপ্তরিক নির্দেশ থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।
তবে মাদক কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল হান্নান ভূঁইয়া স্বপন বলেন, আমি মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান করেছি। দুইশ লোককে আত্মসমর্পণ করিয়েছি। প্রশাসনের সবাই জানে আমি কী করি। আমি যদি মাদক ব্যবসায়ী হয়ে থাকি, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করেন আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে অনেকে অনেক কথা বলে। রেলওয়ের জায়গা দখল করে মার্কেট করেননি বলেও দাবি করেন তিনি।
এমএন/টিআই