বগুড়ার ধুনটে জুয়া খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে আরিফুল ইসলাম হিটলু (৩৮) নামের এক সন্ত্রাসীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই হত্যার প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর একটি কবরস্থানে মাটিচাপা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের একটি কবরস্থানের মাটি খুঁড়ে এই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরআগে গতকাল শনিবার (১৬ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের বেড়েরবাড়ি গ্রামে হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত হিটলু বেড়েরবাড়ি গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। তার নামে ধুনট থানায় ৮টি মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, ধুনট থানার সীমান্তবর্তী এলাকা বেড়ের বাড়ি গ্রাম সংলগ্ন শাজাহানপুর থানার আমরুল ইউনিয়নের নাগরকান্দি খালের ব্রিজের কাছে দীর্ঘদিন যাবত জুয়ার আসর চালিয়ে আসছিল হিটলু। জুয়া খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে হিটলু শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বেড়েরবাড়ি গ্রামের মালেক নামের এক যুবককে কুপিয়ে আহত করে। এ খবর গ্রামের পৌঁছালে বেড়েরবাড়ি গ্রামের তিন শতাধিক লোকজন জুয়ার আসরে হামলা চালিয়ে হিটলুকে ধরে নিয়ে যায়।
এরপর বেড়েরবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ গুম করে ফেলা হয়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ধুনট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় মরদেহ সন্ধান শুরু করে। রাতভর অভিযানে মরদেহ পাওয়া যায়নি।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা আরটিভি নিউজকে বলেন, হিটলুর অত্যাচারে গ্রামবাসী অতিষ্ট। একজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতার ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে পরিচিত হিটলুর নামে ধুনট থানায় মাদক, পুলিশের ওপর হামলা, জুয়া খেলাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৮টি মামলা রয়েছে। মাস তিনেক আগে হিটলু জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় আসে। এরপর আবারও শাজাহানপুর থানা এলাকায় জুয়া চালানোসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ে।
ওসি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে রক্ত পড়ে থাকা দেখে মনে হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু রাতে অনেক খুঁজেও মরদেহ মেলেনি। রোববার বেলা ১২টার দিকে গোবিন্দপুর গ্রামের লোকজন একটি কবরস্থানের মাটি খোড়া দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে ধুনট ও শাজাহানপুর থানা পুলিশ সেখানে পৌঁছে কবরস্থানে মাটিচাপা দেয়া মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত হিটলুর বাবা আব্দুল জলিল মরদেহ সনাক্ত করেন।
ওসি আরো জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায কাউকে আটক করা যায়নি।