ঢাকারোববার, ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৬ চৈত্র ১৪৩১

ঝগড়ার প্রতিশোধ নিতে খুন করে সুটকেসে রাখেন প্রতিবেশী

স্টাফ রিপোর্টার (সিলেট), আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২ , ১০:১৫ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

দু’দিন আগে রুমা দাসের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে প্রতিবেশি পূর্বতী রানী দাসের ঝগড়া হয়। এই ঘটনায় রুমাকে শায়েস্তা করতে গত শনিবার দুপুরে রুমার তিন বছরের শিশুসন্তান রাহুলকে নিজের ঘরে ডেকে নেন পূর্বতী। সেখানে শ্বাসরোধ করে শিশুকে খুন করে ঘরের ভেতরে সুটকেসে ছোট্ট শরীর লুকিয়ে রাখেন। পর দিন শিশুর মরদেহ পঁচে গন্ধ বেরুতে থাকলে গভীর রাতে তা বাসার পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ে ফেলে দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সিলেটে দুপুরে মহানগর হাকিম আদালতে শিশু রাহুলকে হত্যার মর্মান্তিক বর্ণনা দেন পূর্বতী। তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার শ্যামারচর খাসিয়াহাটি গ্রামের দীগেন্দ্র দাসের স্ত্রী। একাই তিনি শিশু রাহুলকে খুন করে রাতের আঁধারে মরদেহ পাশের বাঁশঝাড়ে ফেলেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দেন। সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের জানিয়েছেন, এরপর আদালত আসামিকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

শনিবার দুপুর থেকে বাসার সামনে খেলায় ব্যস্ত রাহুলকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না স্বজনরা। এই ঘটনায় বাবা রুবেল দাস মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পেশায় রাজমিস্ত্রি রুবেল নগরীর আখালিয়া হাওলাদারপাড়া কালিবাড়ী এলাকায় বাবুল দাসের কলোনিতে ভাড়াটিয়া থাকেন। সোমবার সকালে বাসা থেকে মাত্র ২০ গজ দূরে বাঁশঝাড়ে শিশুর মরদেহ দেখতে পান প্রতিবেশিরা। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে।

বিজ্ঞাপন

এই ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে প্রতিবেশি পূর্বতীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পূর্বতী পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর বর্ণনা করেন বলে জানান জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান বলেন, শিশু রাহুল হত্যার ঘটনায় বাবা বাদী হয়ে পূর্বতী রানী দাসকে আসামি করে মামলা করেন। এরপর আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

ওসি নাজমুল হুদা জানান, মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার প্রতিশোধ নিতে আসামি পূর্বতী শনিবার দুপুরে একাই শিশুকে ঘরে নিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে। প্রথমে মরদেহ ঘরের ভেতরে একটি সুটকেসে লুকিয়ে রাখে। কিন্তু লাশ পঁচে গন্ধ বের হতে শুরু হলে তা সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। গত রোববার রাতে সে সবার অগোচরে লাশটি কলোনির পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ে ফেলে দেয়। পরদিন সকালে প্রতিবেশীদের একজন বাঁশঝাড়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় লাশ দেখতে পান।

জীবিকার সন্ধানে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের রুবেল দাস পরিবার নিয়ে সিলেটে এসে আখালিয়া হাওলাদারপাড়া কালিবাড়ী এলাকায় বসবাস করছিলেন। এখানে প্রতিবেশী নারীর নির্মম-নিষ্ঠুরতায় একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে মা রুমা দাস ও বাবা রুবেল দাস আহাজারি করছেন। রুবেল দাস বলেন, আমি সন্তান হত্যার বিচার চাই। হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |