কাশেম মিয়ার সেই মুরগির দাম ১২ হাজার, ডিমের হালি ২৪০০ টাকা
আমেরিকার বিখ্যাত ব্রাহমা জাতের মুরগি পালন করে সফলতা পেয়েছেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার কাশেম মিয়া নামে এক উদ্যোক্তা। এ জাতের মুরগি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি সাধারণ মুরগির চেয়ে ওজনে বেশি।
এক জোড়া ব্রাহমা মুরগি কিনতে ক্রেতাদের গুণতে হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আর এই উন্নত জাতের মুরগি পালন করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কাশেম মিয়া।
এই মুরগি দেখতে সাধারণ মুরগির মতই। তবে এটি আকারে দেশি মুরগির চেয়ে বড় এবং ওজনে বেশি হয়। ১৮৫০ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় মাংসের প্রধান উৎসই ছিল এই মুরগি। প্রাপ্ত বয়সে এক একটি মুরগির ওজন হয় ৭ থেকে ৮ কেজি।
কাশেম মিয়া জানান, ২০১৭ সালে সখের বসে প্রবাসী এক বন্ধুর সহায়তায় ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা দিয়ে রোমানীয়া থেকে ৫ জোড়া ব্রাহমা জাতের মুরগি কিনে আনেন তিনি। এরপর মুরগি থেকে ডিম পেয়ে পরিকল্পনা করেন খামারের। ইনকিউবেটর মেশিনে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে একে একে বাড়াতে থাকেন মুরগির সংখ্যা। গত ৫ বছরে এই খামার থেকে ২০ লাখ টাকার মুরগি বিক্রি করেছেন তিনি
বর্তমানে কাশেম মিয়ার খামারে সাদা ও সোনালী রঙের ৫০ জোড়া ব্রাহমা জাতের মুরগি রয়েছে। এক জোড়া মুরগি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
কাশেম মিয়া বলেন, প্রথম টার্কি মুরগি পালন করতাম। হঠাৎ করে ইউটিউবে এ জাতের মুরগি দেখে সখ জাগে এটি পালনের। প্রথম প্রথম ভাবতাম বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এই মুরগি পালন করা সম্ভব হবে না। পরে দেখি সাধারণ মুরগির মতোই এগুলো পালন করা যায়।
তিনি আরও বলেন, ৬ মাসেই এ জাতের মুরগির পরিপূর্ণ ওজনের হয়ে উঠে। এসব মুরগির ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে বিক্রি করি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সৌখিন মানুষ এ জাতের মুরগি কিনে নিয়ে যায়। এই মুরগির মাংস ও ডিমের চাহিদা অনেক। এক জোড়া মুরগি আকার বেধে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকায়ও বিক্রি করা হয়। এছাড়া এক হালি ডিম বিক্রি হয় ২৪০০ টাকায়।
এদিকে দৃষ্টিনন্দন এসব মুরগি দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন কাশেম মিয়ার খামারে। খামার থেকে পরামর্শ নিয়ে এ জাতের মুরগি পালনে আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেক তরুণ উদ্যোক্তা।
এই মুরগি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, ১৮৫২ সালে আমেরিকার অন্যতম রাজনীতিবিদ জর্জ বুরহাম ইংল্যান্ডের রানি ভক্টোরিয়াকে ৯টি ব্রাহমা জাতের মুরগি উপহার দেন। সুন্দর্য্যের কারণে বাংলাদেশেও অনেক স্থানে সৌখিন মানুষরা এই মুরগি পালন করে আসছে।
পলাশ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো শফিকুল আলম জানান, আমেরিকার বিখ্যাত ব্রাহমা জাতের মুরগি বাংলাদেশের আবহাওয়ায় পালন করা সম্ভব। সাধারণ মুরগির মতোই এটি পালন করা যায়। খামারি কাশেম মিয়াকে উন্নত জাতের এই মুরগি বাণিজ্যিকভাবে পালনে সহযোগিতা করা হবে।
মন্তব্য করুন