পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাপ্পড় মেরে শুভ হোসেন (১১) নামে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর কপাল ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষিকা তৌহিদা পারভীনের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২৭ জুন) পাবনার ইউএনও মৌখিকভাবে অভিযোগে পেয়ে ঘটনা খতিয়ে দেখতে সহকারী শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আহত শুভ উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের কাটেঙ্গা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে।
জানা গেছে, রোববার দুপুরে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়ার পর দরজায় দাঁড়িয়েছিলেন শিক্ষিকা তৌহিদা পারভীন। প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বের হতে ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভেতরে ঢুকতে গিয়ে হুড়োহুড়ি শুরু করে।
এ সময় পেছন থেকে ধাক্কা খেয়ে শুভ হোসেন তৌহিদা পারভীনের সঙ্গেও ধাক্কা খায়। তখন ক্ষুব্ধ হয়ে ওই শিক্ষিকা শুভকে থাপ্পড় মারেন ও গলা ধাক্কা দিয়ে স্টিলের দরজার ওপর ফেলেন। এতে শুভ হোসেনের কপাল ফেটে যায়। এ সময় তাকে অন্যান্য শিক্ষকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এক পর্যায়ে শুভ ক্লাস করতে না পেরে ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়ে তার বাবা-মাকে ঘটনা জানায়। পরে শুভর বাবাসহ আত্মীয়-স্বজন স্কুলে গিয়ে ঘটনার বিচার দাবি করেন।
আজ সকালে স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে স্কুলে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী স্কুলের সামনে জড়ো হয়ে ওই শিক্ষিকার বিচার
দাবি করলে বৈঠক ভেস্তে যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি মৌখিকভাবে জানতে পেরে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে স্কুলে গিয়ে ঘটনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।
শুভর বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে ওপর এমন অত্যাচারের বিচার চাই। সোমবার স্কুলে এ ঘটনার বিচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা করেনি। তাই আমি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। একজন শিক্ষিকা এভাবে মারতে পারেন না। তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হওয়া দরকার।
অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষিকা তৌহিদা পারভীন বলেন, শুভকে মারা বা তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। পুরোটাই মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়ার পর চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢুকতে হুড়োহুড়ি শুরু করে। আমি দরজায় দাঁড়িয়ে তাদের শৃঙ্খলভাবে বের হতে বলছিলাম। কিন্তু তারপরও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাড়াহুড়ো করে রুমে ঢুকতে গেলে তারা ধাক্কাধাক্কি করে আমার ওপর এসে পড়ে। এ সময় আমি দরজার ওপর পড়ে যাই। আর শুভ চৌকাঠের ওপর পড়ে কপাল ফেটে যায়। তারপরও অভিভাবকরা স্কুলে আসার পর ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছি। কিন্তু তারা শোনেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত ইসলাম বলেন, ঘটনা জানার পরই আমি সহকারী শিক্ষা অফিসারকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছি। তিনি প্রতিবেদন দেওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি জেলা শিক্ষা অফিসারকে জানাব। সেখানে যদি ওই শিক্ষিকা দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।