ঘুষের ২৩ লাখ টাকাসহ কক্সবাজারের সার্ভেয়ার আটক
কক্সবাজার এলএ শাখা থেকে এখনো নির্মূল করা সম্ভব হয়নি দুর্নীতির ভূত। ভূমি অধিগ্রহণের টাকা তুলতে গেলেই সাধারণ মানুষকে পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হয়। এর মূল কারিগর হিসেবে কাজ করে থাকেন সার্ভেয়াররা। বর্তমান সময়েও এলএ শাখা থেকে দুর্নীতির ভূত তাড়ানো সম্ভব হয়নি। ১ জুলাই যার প্রমাণ মিলেছে। এদিন ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘুষের ২৩ লাখ টাকা নিয়ে ধরা খেলো সার্ভেয়ার আতিক। সকাল সাড়ে ১০ টায় নগদ টাকাসহ তাকে আটক করেন বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা।
দুদক সম্মিলিত কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, কক্সবাজার এলএ শাখায় কর্মরত সার্ভেয়ার আতিককে ২৩ লাখ টাকাসহ আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে টাকাগুলোর উৎস সম্পর্কে সদুত্তর দিতে পারেনি।
এদিকে, সার্ভেয়ার আতিকের আটক হওয়ার পর গণমাধ্যমগুলোর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ বলেছেন, সার্ভেয়ার আতিকুর এই টাকার বৈধ কোনও উৎস দেখাতে পারেননি। এই টাকা নিয়ে তিনি উড়োজাহাজে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। কার কাছে যাচ্ছিলেন, এত টাকা তিনি কোথায় পেলেন, এসব বিষয় তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
জানা গেছে, ১ জুলাই সকাল পৌনে ১০টায় ইউএস বাংলার একটি বিমানে করে ঢাকার উদ্দেশে কক্সবাজার ত্যাগ করেন সার্ভেয়ার আতিক। বিমানটি ঢাকায় অবতরণের কিছুক্ষণ পর অর্থাৎ সাড়ে ১০টার দিকে তাকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা আটক করেন।
এদিকে, আতিকের আটকের সংবাদ প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কক্সবাজারে শোরগোল পড়ে যায়। ভূমি অধিগ্রহণের ফাইল আটকে রেখে কমিশনের নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি মুখে মুখে হয়ে যায়। এ কাজে এলএ শাখার আরও কয়েকজন কর্মচারী এবং সার্ভেয়ারের নামও প্রকাশ হতে থাকে।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতি সপ্তাহেই মোটা অংকের নগদ টাকা নিয়ে সার্ভেয়ার আতিক ঢাকায় যেতেন। মাঝে মাঝে তাকে সপ্তাহে কয়েকবার ঢাকা যেতেও দেখা গেছে। তবে, কার কাছে টাকাগুলো নিয়ে যেতো তা এখনো স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, ৩ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৫ টি মেগাপ্রকল্পসহ কয়েকটি প্রকল্পের জন্য প্রায় ২০ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করছে সরকার। ইতোমধ্যে বেশ কিছু জমির অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। অধিগ্রহণের প্রাথমিক পর্যায়ে জরিপের কাজ করেন সার্ভেয়াররা। ফলে শুরু থেকেই ব্যাপক দুর্নীতি আরম্ভ হয়।এর আগে ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রায় কোটি টাকাসহ সার্ভেয়ার ওয়াসিম ও ফেরদৌসকে আটক করে র্যাব। তারা দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এলএ শাখায় মহেশখালীর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প ও রেলের ভূমি অধিগ্রহণে কোটি কোটি টাকার চেক জালিয়াতি ও ঘুষ লেনদেনে জড়িত ছিলো।
মন্তব্য করুন