ঢাকাশনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১

মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এতিমখানার দানখয়রাত আত্মসাতের অভিযোগ

চট্রগ্রাম প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

রোববার, ১৭ জুলাই ২০২২ , ০১:৩৫ পিএম


loading/img
ছবি : আরটিভি নিউজ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পন্থিছিলা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে টাকা, সুপার পদের নিয়োগ আটকে রাখা ও এতিমখানা ছাত্রদের জন্য প্রতিমাসে খাদ্যসামগ্রী এবং দানখয়রাতের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দাতা সদস্য, অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পক্ষে মাদরাসাটির এডহক কমিটির সাবেক আহবায়ক ও ১নং দাতা সদস্য ইউসুফ শাহ এ অভিযোগ আনেন। লিখিত অভিযোগের কপি তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রদান করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে স্থানীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলম মাদরাসা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ১নং দাতাসদস্য হিসেবে ইউসুফ শাহকে নিয়োগ দেন। এর দুই মাস পর সেপ্টেম্বরের প্রথম বৈঠকে কর্মরত সুপার মো. শহিদুল্লাহর নিকট মাদরাসার আয়-ব্যয়ের হিসাব চাইলে তিনি তা দেখাতে ব্যর্থ হন। তখন সঠিক হিসাব উপস্থাপন করতে সুপারকে এক সপ্তাহ সময় দেন ইউসুফ শাহ। কিন্তু হিসাব দিতে কালক্ষেপণ করতে থাকেন সুপার মো. শহিদুল্লাহ। পরবর্তীতে তিনি কৌশলে অনেকটা জোর খাটিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে তৎকালীন কাউন্সিলর মো. জসিম উদ্দিনকে মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে বসান।

বিজ্ঞাপন

এর আগে সুপার মো. শহিদুল্লাহ ২০০১ সালে পন্থিছিলা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার পদে যোগদান করেন। ২০০৫ সালে মাদরাসার চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে উপজেলার বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের কাজীর (বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার) দায়িত্বে যোগদান করেন। কাজীর দায়িত্ব পালন করার সময় মাদরাসায় দায়িত্ব পালন না করলেও তৎকালীন মাদরাসা পরিচালনা কমিটিকে ম্যানেজ করে সুপার পদের নিয়োগ আটকে রাখেন। তিন বছর কাজির দায়িত্ব পালন করার পর আবার মাদরাসা সুপার পদে যোগ দেন মো. শহিদুল্লাহ। যোগ দিয়ে নিজ দায়িত্ব পালন না করেও বিগত তিন বছরের সরকারি বেতন-ভাতার ১১ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন। অন্যদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য কর্তৃক মাদরাসার উন্নয়ন কাজে অনুদানকৃত ১০ লাখ টাকার বেশির ভাগ তিনি আত্মসাৎ করেন। 

একই সময় মাদরাসার একটি ভবন ও নিজের বাসভবন তৈরি করেন সুপার মো. শহিদুল্লাহ। নিজের বাড়ি তৈরির যাবতীয় খরচ তিনি মাদরাসা ভবনের খরচের সঙ্গে যুক্ত করে দেন। বিভিন্ন দাতাদের কাছ থেকে যেসব সহযোগিতা আসছে তার অর্ধেক মাদরাসার কাজে আর বাকি অর্ধেক নিজের বাড়ির কাজে ব্যয় করতেন।

অভিযোগে আরও জানানো হয়েছে, মাদরাসার নামে দানবাক্সে ও মানুষের অনুদানের অর্থ বেশির ভাগ তিনি ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করতেন। 

বিজ্ঞাপন

সূত্রে জানা গেছে, শিল্পপতি মৃত নাসির উদ্দিন এতিমখানার ছাত্রদের জন্য প্রতিমাসে খাদ্যসামগ্রী পাঠাতেন। কিন্তু সুপার মো. শহিদুল্লাহ ও অন্য একজন শিক্ষক এসবের বেশির ভাগ আত্মসাৎ করতেন। মাজারের উছিলায় এতিমদের জন্য অনেকে ছাগল, মুরগি দান করেন। দানকৃত সামগ্রী এতিমদের না দিয়ে সেগুলা সব নিজের জন্য নিয়ে যেতেন।

তবে নিজের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে সুপার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, সব কিছু নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। মাদরাসার কোনো তহবিল আমি এদিক-সেদিক করিনি। তবে কাজীর দায়িত্ব পালন করার সময় সরকারি বেতনের টাকা উত্তোলন করেছি। 

‘চাকরি থেকে অব্যাহতি নিলেও সুপার পদে তিন বছর কেন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি?’ এমন প্রশ্নের সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।

মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে তদন্তের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে আমরা যা পেয়েছি, সেই অনুযায়ী প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |