গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শিক্ষকদের বেতন, ভবন ও গাড়ি ভাড়াসহ প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়ে রফিকরাজু ক্যাডেট একাডেমির এক পরিচালকের পালানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে চরম হতাশায় ভুগছেন অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীরা।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রফিকরাজু স্কুলে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ৬-৭ বছর আগে কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকার আবদুল কাদেরের ছেলে তপন মাহমুদ কালিয়াকৈর বাইপাস সাহেববাজার এলাকায় সিরাজুল ইসলামের বহুতল ভবন ভাড়া নেন। সেখানে তিনি টাঙ্গাইল থেকে পরিচালিত রফিকরাজু ক্যাডেট একাডেমির একটি শাখা খোলেন। আবাসিক ও অনাবাসিকভাবে মানহীন শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনা করে আসছিলেন ওই স্কুলের পরিচালক তপন মাহমুদ। কিন্তু তিনি পরিকল্পনামাফিক দীর্ঘদিন ধরে কৌশলে ভবনের ভাড়া প্রায় ২০ লাখ, শিক্ষকের বেতন প্রায় ৩ লাখ, মীম এন্টারপ্রাইজের প্রেস ও গাড়ি ভাড়া প্রায় ১২ লাখ, মাখন লাল স্টোরে প্রায় ৫৬ হাজার টাকা, আমজাদ নামে মুরগি দোকানির ৫০ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন দোকান ও টেইলার্সে প্রায় অর্ধকোটি টাকা বকেয়া রাখেন। পরে ওই টাকা না দিয়ে গত মাসে দুবাই গেছের স্কুলের পরিচালক তপন। তার লাপাত্তা হওয়ার খবর পেয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা ওই স্কুলে গেলেও তার ভাই নতুন পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন মনির ও অন্য পরিচালক রাকিবুল ইসলাম পাওনাদারদের পাত্তা দিচ্ছেন না। এতে চরম হতাশায় ভুগছেন অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী শিক্ষক ও ব্যবসায়ীরা।
গোলাম মোস্তফা লিটন নামে এক ব্যবসায়ী জানান, স্কুলে গাড়ি ভাড়া ও প্রেসের বিল বাবদ ১২ লাখ টাকা পাই। ওই স্কুলের পরিচালককে না পেয়ে গ্রামের বাড়ি গেলেও তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা ‘দিব, দিচ্ছি’ বলে বিভিন্নভাবে ঘোরাচ্ছেন।
এসব বিষয়ে ওই স্কুলের সাবেক পরিচালক তপন মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও তার ভাই ওই স্কুলের নতুন পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন ধীরে ধীরে সবার বকেয়া টাকা পরিশোধ করার কথা জানান।
এ ব্যাপারে রফিকরাজু ক্যাডেট একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক মোবাইল ফোনে জানান, চুক্তিভিত্তিক শাখা দিয়েছে। এর বাইরে দায়-দায়িত্ব ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের। এ ছাড়া বিস্তারিত জানতে হলে আমার টাঙ্গাইল অফিসে আসেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন মোল্লা জানান, রফিকরাজুর যে কিন্ডারগার্টেন স্কুল আছে, সেগুলো আমাদের অধীনে নয়। এসব স্কুলের বকেয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। এ ছাড়া এত অনিয়মের পরও নতুন করে চন্দ্রা এলাকায় কীভাবে আরেকটি শাখা দেওয়া হচ্ছে, তা আমার জানা নেই। তবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।