ঢাকারোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

গয়েশ্বর-মিন্টুকে গ্রেপ্তারের দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের   

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ , ১১:০৪ পিএম


loading/img

মুক্তিযুদ্ধকে ‘বাইচান্স’ বলে কটূক্তি ও অবমাননার অপরাধে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র ও আব্দুল আউয়াল মিন্টুকে দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর শাহবাগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আব্দুল আউয়াল মিন্টুর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে সংগঠনটি।

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় ওই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। 

বিজ্ঞাপন

এতে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আব্দুল মুকিম সন্টু, জয়নুল আবেদীন রোজ, সহসভাপতি ফিরোজ মাহমুদ সুজনসহ প্রমুখ।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল বলেন, দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ও সংবিধান সম্পর্কে কটূক্তি করার অপরাধে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র ও আব্দুল আউয়াল মিন্টুকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সবসময় মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও সংবিধানের প্রশ্নে আপসহীন। তারা স্বাধীনতাবিরোধীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্যই মুক্তিযুদ্ধের ভুল ইতিহাস উপস্থাপন করেছে, যা ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। রাজাকারের দোসর গয়েশ্বর ও মিন্টুর বক্তব্যে সংবিধানের পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম তফসিল ও অনুচ্ছেদ ৪(ক) লঙ্ঘন হয়েছে।

স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের এজেন্ট পাকিস্তানি দালালের কলঙ্ক বাংলাদেশ বইতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কোনো কঠোর ব্যবস্থা না নিলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদেরকে যেখানে পাবে সেখানেই গণধোলাই দিয়ে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেবে।

বিজ্ঞাপন

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো ষড়যন্ত্র হলে, তা শক্ত হাতে প্রতিহত করবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মহান মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান সম্পর্কে বাইচান্স ওয়েতে জন্ম নেওয়া দল বিএনপির গয়েশ্বর চন্দ্র ও মানবপাচারকারী আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের মাধ্যমে চরমভাবে দেশের সংবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে। রাষ্ট্রের উচিত ছিল অনেক আগেই এদেরকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিক্ষেপ করা। দুঃখের বিষয় এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্র নীরব ভূমিকা পালন করছে, যা কখনোই এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না। দেশের সব মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।কিন্তু স্বাধীন মত প্রকাশের নামে দেশের সংবিধান লঙ্ঘন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করলে তা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মানুষেরা কখনোই মেনে নেবে না। বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে কেউ বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন না।

সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের সব আন্দোলনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুক্ত ছিলেন, নেতৃত্বও দিয়েছেন। তার প্রদত্ত ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণা। ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিলে মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের পেছনে তার অবদানসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের দোসররা স্বাধীনতার ঘোষণা বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রয়াস চালালে সুপ্রিম কোর্ট এই মর্মে সিদ্ধান্ত প্রদান করে যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষক। বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চম তফসিলে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, ষষ্ঠ তফসিল বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা, সপ্তম তফসিলে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত করা হয়েছে এবং উক্ত দলিলসমূহ সংবিধানের অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। তা ছাড়া সংবিধানের ৪(ক) অনুচ্ছেদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিএনপির  গয়েশ্বর ও মিন্টুর বক্তব্য লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সংবিধান পরিপন্থী ও ইতিহাসের সুস্পষ্ট বিকৃতি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এরা জাতির নিকট ক্ষমা না চাইলে এদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, রাজাকারের দোসর গয়েশ্বর ও মিন্টুর এ ধরনের ন্যক্কারজনক বক্তব্যের জন্য দুইভাবেই শাস্তি হতে পারে। এক সংবিধান লঙ্ঘনের অপরাধে। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির জন্য তাকে আইসিটি আইনেও গ্রেপ্তার করা যেতে পারে। অথচ সরকার বা প্রশাসনের এখনও কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেই। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কখনোই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এই ষড়যন্ত্র বরদাশত করবে না। বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী কোনো অপশক্তির জায়গা হবে না। আমরা অবিলম্বে এদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন রোজ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধকে কটূক্তি ও সংবিধান অবমাননার অপরাধে গয়েশ্বর চন্দ্র ও আবদুল আউয়াল মিন্টুকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রদানের দাবি জানাচ্ছি। সরকারের কাছে আহবান, সংবিধান লঙ্ঘন করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ও কটূক্তি করার অপরাধে এই রাজাকারের দোসরকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |