বাহারি নামের অনেক গরু প্রতি বছর ঈদুল আজহার আগে আলোচনায় আসে। ওজন ও দামের দিক বিবেচনায় এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে রাজবাড়ীর ‘সিংহরাজ’। প্রায় ৩০ মণ ওজনের সিংহরাজের পছন্দ ডাব ও গুড়ের শরবত।
প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার মানুষ সিংহরাজকে দেখতে খামারে ভিড় করছেন। এবারের কুরবানির হাটে সিংহরাজকে তুলতে চান খামারি সুচিন্ত কুমার। দাম হাঁকা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা।
জানা যায়, রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদশি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সিংগা বাজার সংলগ্ন সুচিন্ত কুমার সেনের খামারে বেড়ে উঠেছে সিংহরাজ। চার বছর আগে কুষ্টিয়া থেকে ৭৫ হাজার টাকায় ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি কিনেন সুচিন্ত কুমার সেন। আদর করে নাম রাখেন সিংহরাজ। ষাঁড়টি ১০ ফুট লম্বা ও ৬ ফুট উচ্চতার। ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টিকে চার বছর ধরে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করছেন সুচিন্ত। বিশাল ষাঁড়টির গায়ের রং কালো। প্রতিদিন তার খাদ্যতালিকায় থাকে খেসারির ভুসি, ডাবলির ভুসি, ভুট্টার ভুসি, খুদের ভাত, ডাব ও গুড় দিয়ে তৈরি শরবত, কাঁচা-পাকা কলা, গমের ভুসি ও কাঁচা ঘাস।
খামারি সুচিন্ত সেন বলেন, শখ করে চার বছর আগে কুষ্টিয়া থেকে ফ্রিজিয়ান জাতের কালো রঙের ষাঁড়টি ৭৫ হাজার টাকায় কিনেছিলাম। এরপর বাড়িতে নিজ সন্তানের মতো লালন-পালন করছি। নাম দিয়েছি ‘সিংহরাজ’। মোটাতাজাকরণের কোনো ওষুধ দেইনি।
তিনি বলেন, প্রতিদিন আমার এই সিংহরাজ সকালে ৫ থেকে ৬ কেজি ভুসি খায়। এ ছাড়াও কাঁচা ঘাস, বিচি কলা, গম, ধান, ভুট্টা, মাসকালাই, খেসারি কালাই ও মসুর ডালের ভুসি খাওয়ানো হয়েছে। দুই থেকে তিনবার গোসল করাই। একে লালনপালন করতে আমার ঋণ করতে হয়েছে। কেনার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ২৫ লাখ টাকা দাম চাচ্ছি। গত বছর কোরবানির হাটে দাম আশানুরূপ না পাওয়ায় বিক্রি করিনি। আশা করছি এ বছর ভালো দাম পাব।
সিংহরাজকে দেখতে আসা দর্শনার্থী আবু তালেব বলেন, সিংগা বাজারে এসেছিলাম। জানতে পারি সুচিন্ত নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে বড় একটি ষাঁড় কুরবানির জন্য প্রস্তুত করছেন। তাই দেখতে এলাম। ষাঁড়টি বেশ বড়। এর দাম ইতোমধ্যে ১৫ লাখ টাকা হয়েছে। রাজবাড়ী, ফরিদপুর, পাবনাসহ আশেপাশের পাঁচ জেলায় এতবড় কুরবানির গরু নেই।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. খায়ের উদ্দীন আহমেদ বলেন, দাদশি ইউনিয়নের সিংগা বাজার এলাকার সুচিন্ত সেন তার পারিবারিক খামারে একটি বড় ষাঁড় লালন-পালন করেছেন। এটি এবার প্রাণি সম্পদ মেলায় প্রদর্শনীতে আনা হয়েছিল। বেশ বড় ষাঁড়। এবার কুরবানির ঈদে বিক্রি করা হবে। কুরবানি উপলক্ষে খামারিদের সঙ্গে আমরা সবসময় যোগাযোগ রাখছি, সব ধরনের সহযোগিতা করছি। কুরবানির ঈদের জন্য রাজবাড়ীতে এ বছর ২ হাজার ৩২৫টি খামারে ৫৪ হাজার ৫২৫টি পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা।