বরগুনার তালতলীতে প্রায় ৮৫ লাখ টাকার সেতুতে উঠতে হয় নারিকেল গাছের সিঁড়ি বেয়ে। সেতুর নির্মাণকাজ গত কয়েক মাস আগে শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ করা হয়নি। সিঁড়ি বেয়ে উঠে এই সেতু পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসী। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার শঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নামিশিপাড়া ও লাউপাড়া এলাকায় নিদ্রা নামক খালের ওপর ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪.২৭ মিটার প্রস্থ্য আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে মেসার্স সারা-প্রিন্স এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওই সেতু নির্মাণকাজের চুক্তি হয়। গত ২০২১ সালে পুরনো সেতুটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে। ২০২২ সালে সেতুটির সম্পূর্ণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনও দুই পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেনি। বর্তমানে ওই সেতু থেকে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না। ফলে নামিশিপাড়া ও লাউপাড়া এলাকার দুই পাড়ের শত শত মানুষ রয়েছে চরম দুর্ভোগে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে নৌকায় পার হতে গিয়ে ভিজতে হয়েছে। এতে অনেকের স্কুল-কলেজসহ সাধারণের কাজে যাওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে একটি নারিকেল গাছ দিয়ে নতুন সেতু পার হচ্ছে এলাকাবাসী। সমতল থেকে প্রায় ৮ ফুট উঁচু সেতুতে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করতে গিয়ে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।
ওই এলাকার মি. মংচিন থান, রাজু তালুকদার, মংচান ও খলিলুর রহমান মাস্টারসহ একাধিক স্থানীয়রা বলেন, সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় তাদের আশা ছিল জনভোগান্তি দূর হবে কিন্তু এখন তা উল্টো হচ্ছে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। নারিকেলের সিঁড়ি বেয়ে সেতুতে উঠতে গিয়ে অনেক সময় কোমলমতি শিশুরা প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বয়স্ক মানুষ কারও সাহায্য ছাড়া সেতুতে উঠতে পারচ্ছে না। তারা আরও বলেন, পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হলে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
এ বিষয়ে মেসার্স সারা-প্রিন্স এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. রিপন মিয়াকে মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম বলেন, আমি চলতি বছরের জুনে যোগদান করেছি। তখন এই সেতুটির কাজ শেষ হয়েছে। তবে সংযোগ সড়ক করা হয়নি। বর্ষা গেলে দ্রুত এ কাজ শেষ করা হবে। কাজ শেষ না হলে ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে না।