ঢাকারোববার, ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৬ চৈত্র ১৪৩১

প্রতিবন্ধী দুই সন্তান নিয়ে আলেয়ার মানবেতর জীবনযাপন 

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রোববার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ , ০৮:১২ পিএম


loading/img
ছবি : আরটিভি

প্রতিবন্ধী দুই সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন রাজবাড়ীর ষাটোর্ধ্ব বিধবা নারী আলেয়া বেগম। দুই সন্তানের মধ্যে একজনের বয়স ২৫, অন্যজনের ১৬। দুজনকে বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়। তারা বসতে বা দাঁড়াতে পারে না। তাদের খাইয়ে দিতে হয়। বিছানায় পায়খানা-প্রস্রাব করে। সকালে তাদের দুজনকে ঘরে শুইয়ে রেখে এই নারী চলে যান কাজে। বিকেলে ফিরে এসে তাদের খাওয়াদাওয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের কাজ করেন তিনি।  বৃদ্ধ মা আলেয়া বেগমই তাদের একমাত্র ভরসা। 

বিজ্ঞাপন

রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলার পাচুরিয়া ইউনিয়নের ভাণ্ডারিয়া গ্রামের মৃত মোনছের মল্লিকের মেয়ে আলেয়া বেগম। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে আলেয়া বেগম তৃতীয়। বাড়িতে তাঁত ছিল। লুঙ্গি, গামছা তৈরি হতো। পিতার সংসারে সুখেই ছিলেন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন যেতে না-যেতেই বিচ্ছেদ হয় তাদের। দ্বিতীয় বিয়েও সুখের হয়নি তার। একটি ছেলে সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ার পর স্বামী তৈয়ব আলী সংসার বিমুখ হয়। দ্বিতীয় সন্তানটিও প্রতিবন্ধী হওয়ার পর স্বামী সংসার ছেড়ে চলে যায়। প্রথম সন্তান আলমাসের বয়স ২৫ বছর। আর কন্যাসন্তানের বয়স ১৬। স্বামী ছাড়া গত ১৯ বছর ধরে তিনি এই দুটি প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে রীতিমতো সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। স্থানীয় ব্র্যাক অফিসে ঝাড়ু দেওয়া আর চা বানানোর কাজ করে সংসার করেন তিনি। মাসে দুই তিন হাজার টাকা আয় করেন। দুই সন্তানের প্রতিবন্ধী ভাতা পান। দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে টিনের চালের একটি ঘরে বসবাস করেন তিনি। পিতা-মাতা-স্বামী হারিয়ে দিশেহারা আলেয়া বেগম। বৃষ্টি বা কুয়াশা হলে চালের ফুটো দিয়ে পানি পড়ে। প্রতিবেশীরা সহযোগিতা করে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। 

আলেয়া বেগম জানান, দুই সন্তানেরই হাত-পা বাঁকা ও চিকন। সরকারের পক্ষ থেকে দুই সন্তানের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা পান। সে ভাতার টাকা আর নিজের উপার্জন মিলিয়ে সংসারের খরচ চলে না তাদের। ওই টাকায় তাদের মাসের ২০ থেকে ২২ দিন চলে। বাকি দিনগুলো গ্রামের অন্যান্য লোকদের কাছ থেকে চেয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন-রাত পার করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

আলেয়া বেগমের বোন বলেন, আলেয়া  নিজেই অসুস্থ। তার একার পক্ষে সন্তানদের দেখাশোনা করা সম্ভব নয়। আগামীর অনিশ্চিত জীবন নিয়ে শঙ্কিত তিনি। 

সরকারি সহায়তার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইমদাদুল হক বিশ্বাস।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |