বিকল্প পথে যাওয়া যাবে সেন্টমার্টিন
মিয়ানমার সীমান্তে চলমান উত্তেজনার কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে, কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন ও চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করবে। পর্যটকরা শনিবার থেকে বিকল্প পথ ব্যবহার করে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন। সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, আগামী শনিবার থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী সকল জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে এটি সাময়িক সময়ের জন্য। যেহেতু মিয়ানমার সীমান্তে সংঘাতময় পরিস্থিতি চলমান রয়েছে। তবে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন ও চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল অব্যাহত থাকবে। কেউ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে চাইলে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে জাহাজে ভ্রমণ করতে পারবেন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে উদ্ভূত অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসনসহ সীমান্ত সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারী সকলে সাধারণ মানুষসহ পর্যটকদের নিরাপত্তাজনিত কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী সকল জাহাজ চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বুধবার বিজিবির মহাপরিচালক সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে চলাচলকারী পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গত কয়েকদিন থেকে আরাকান আর্মি ও দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সংঘর্ষ ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। দু’পক্ষের ছোড়া গুলি ও মর্টার শেল এসে পড়ছে বাংলাদেশের ভেতরে। এ ঘটনায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বান্দরবানে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা নিহত হন। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নারীর নাম হুসনে আরা (৫০)। তিনি জলপাইতলি এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী। এ ছাড়া নিহত রোহিঙ্গা তাদের বাড়ির কাজের লোক। জানা গেছে, মিয়ানমার জান্তার ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে বাদশা মিয়ার বসতবাড়িতে এসে পড়ে বিস্ফোরণ ঘটে। এতেই ওই নারীসহ তাদের বাড়ির কাজের লোক নিহত হন।
বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান নিশ্চিত করেন।
মন্তব্য করুন