হিলিতে হয়ে গেল দুই দিনব্যাপী গ্রামীণ পিঠা উৎসব
গ্রামীণ পিঠার ঐহিত্য ধরে রাখতে টানা তৃতীয় বারের মতো দিনাজপুরের হিলিতে দুই দিনব্যাপী গ্রামীণ পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। নানা ধরনের গ্রামীণ পিঠার স্বাদ নিতে দুই দিনের এই পিঠা উৎসবে সব বয়সী মানুষের ভিড় জমে। আয়োজকরা বলছেন, বাঙালির পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও খুদে শিক্ষার্থীদের গ্রামীণ পিঠার সঙ্গে পরিচয় করাতেই প্রতি বছর এই আয়োজন করা হয়। এমন উৎসবে বিভিন্ন ধরনের গ্রামীণ পিঠার নাম শুনে ও দেখে খুশি শিক্ষার্থীরা।
শীত কিংবা গ্রীষ্ম মানেই বাঙ্গালির ঘরে ঘরে মুখরোচক পিঠাপুলির আয়োজন হয়ে থাকে। তবে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালিদের অনেক ঐতিহ্য। বর্তমানে নানা ধরনের ফাস্ট ফুড খাবারের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে অনেক পিঠাপুলি। বাঙ্গালীর ঐতিহ্য নানান পিঠাপুলির সাথে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরতেই তৃতীয় বারের মতো দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া মডেল স্কুলে আয়োজন করা হয়েছিলো দুইদিন ব্যাপী পিঠা উৎসব।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় হাকিমপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া মডেল স্কুলের আয়োজনে ফিতা কেটে দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাওছার রহমান। উদ্বোধনের পর থেকেই পিঠা উৎসবে ছিল নানান বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভিড়, স্টল গুলোতে তারা নিচ্ছেন পিঠাপুলির স্বাদ।
পিঠা উৎসবে আসা কয়েকজন পিঠা প্রেমী বলেন, বিদ্যালয়ে মাঠে প্রতিটি স্টলে ধান সেমাই, ভাপা, পুলি দুধ, পুলি, পাটিসাপটা, ঝিনুক পুলি, জামাই সোহাগী, গোলাপ, কানমুচুরি, পুডিং, পায়রা, তেল পিঠা, দুধ চিতাই, মুঠা পিঠা, ক্ষীর, রসগোল্লা, কেক, গোলাপ ফুল, তেলেভাজা রসপিঠা, রোল পিঠা, লাভ পিঠা, শিম ফুল পিঠা, ডালবড়া, নারিকেল পিঠা, নকশি পিঠা, নয়নতারা পিঠাসহ প্রায় শতাধিক পিঠার পসরা। এবার এই পিঠার মেলাতে ৯টি স্টলে ১০২ প্রকারের পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষরা। এমন আয়োজনে খুশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরা। আমরা চাই প্রতি বছর এমন আয়োজন যেন করা হয়।
স্বপ্ন ছোঁয়া পিঠা ঘরের দোকানীরা বলেন, তারা লাভের আসায় নয়, বর্তমান প্রজন্মকে পিঠার সাথে পরিচয় করে দিতেই তারা বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করেছেন। বর্তমানে নানা ধরনের ফাস্ট ফুড খাবারের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে অনেক পিঠাপুলি। তাই তারা বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরি করে বর্তমান প্রজন্মকে পরিচিত করার জন্য এমন দোকান দিয়েছেন।
হিলির পিঠা মেলার আয়োজক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, হারিয়ে যাওয়া পিঠাপুলির সঙ্গে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করাতেই এমন আয়োজন বলছেন আয়োজকেরা। গত তিন বছর থেকে তিনি নিজের ইচ্ছাতেই এমন আয়োজন করে থাকেন। আগামীতে আরও বড় পরিসরে পিঠা মেলার আয়োজন করবেন বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন