মন্ত্রী যেতেই ট্রেনে ১৮ বছরের পুরোনো বগি
পদ থেকে সরে যেতেই সাবেক রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজনের এলাকায় ট্রেনের বগি পরিবর্তন করে ১৮ বছরের পুরোনো জরাজীর্ণ বগি সংযোজিত করা হয়েছে। এতে যাত্রীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন।
জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ বিরতিহীন ট্রেন সার্ভিস পঞ্চগড় এক্সপ্রেস। ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় রেলপথের দৈর্ঘ্য ৬৩৯ কিলোমিটার। ট্রেনযাত্রায় স্বস্তি হওয়ায় দুটি জেলার মানুষের পছন্দের তালিকার প্রথমে রয়েছে রেলপথে ভ্রমণ। ফলে দুই জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে ঢাকায় যাতায়াতে ট্রেনের চাহিদা বাড়ছে। ট্রেনটিতে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন মোট ১২টি বগি নিয়ে পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-ঢাকা পথে সরাসরি চলাচল করে আসছিল। কিন্তু নুরুল ইসলাম সুজন রেল মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রিত্ব হারানোর পর পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে সংযুক্ত করা হয়েছে ১৮ বছরের পুরোনো নড়বড়ে ও মেয়াদোত্তীর্ণ বগি।
যাত্রীরা বলছেন, আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ট্রেনটির বগি পরিবর্তন করে সংযোজন করা হয়েছে দীর্ঘদিনের পুরনো আর ভাঙাচোরা মুড়ির টিনের মতো বগি। যেগুলোতে বসতে গেলে সিটের সঙ্গে হাঁটু আটকে যায়। এভাবে পুরোনো সিটগুলো দিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের হয়রানি করছে। বিষয়টির দ্রুত সমাধান করা উচিত। তা না হলে সাধারণ মানুষ রেলপথ ভ্রমণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।
বগি পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার ঝড় উঠেছে।
ঠাকুরগাঁও রোড স্টেশন মাস্টার মো. আক্তারুল বলেন, পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের যাত্রীরা এসে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আমাদের কিছু করার নেই। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী এসব পরিবর্তন হয়েছে।
তিনি বলেন, আগে ঠাকুরগাঁও থেকে আগে যে রেলের বগিগুলো চলাচল করতো সেগুলোর বগি ছিল নতুন। বর্তমানে পুরাতন বগি দেওয়া হয়েছে। বগিগুলোর সিট যদিও ছোট কিন্তু সিট সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী শাহাদাত রহমান বলেন, আগের সিটগুলো অনেক ভালো ছিল। এখনকার সিটগুলো খুব খারাপ, চাপা ও পুরাতন। ঢাকা-পঞ্চগড় দূরত্ব বিবেচনায় এমন সিট দেওয়া খুবই ন্যক্কারজনক।
কামরুল হাসান নামে এক টিটি বলেন, বর্তমানের সিটগুলো অনেক পুরাতন এবং এখানে নামাজঘর নাই। এই বগিগুলোর সিট অনেক চাপা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম মো. আবদুল আউয়াল ভুঁইয়া বলেন, আগে পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁওয়ে চলাচল করা বগিগুলো চায়না বডি ছিল, খুব বেশি নষ্ট হতো। তাই বগিগুলোকে রাজশাহীতে নিয়ে আসা হয়েছে। অন্যদিকে বর্তমানের ইন্ডিয়ান বগিগুলো রাজশাহীতে ছিল। যা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিলেও নষ্ট হয় না। সে জন্য এগুলো পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁওয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে বগিগুলো ১৮ বছরের পুরানো।
মন্তব্য করুন